নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গোটা বিশ্ব থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কেউ নাই। হয়তো দু-একটা দেশ থাকতে পারে। সেখানে তারা খুব হাত-পা ধরছেন, কাকুতি-মিনতি করছেন।
রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রেজাউল করিম রানার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় যেন তাদের রাখা হয়। এরকমই শোনা যায়। আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী, উনি কলকাতার সাংবাদিকদের নাকি ২ টন ইলিশ মাছ পাঠিয়েছেন। আমরা জানি না এই ঘটনা কতটুকু সত্য। এরকম জনশ্রুতি আছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপিসহ সমমাননা দলগুলোর কারও স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র কখনো একসঙ্গে যেতে পারে না। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা আওয়ামী লীগ কখনো শেখেনি। তাদের জন্ম থেকেই তারা গুণ্ডা-পাণ্ডাদের ভালবেসেছে।
তিনি বলেন, গতকাল নাকি উচ্চপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে একজন কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। তার বক্তব্য শোনার পর মনে হয়েছে উনি কি পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা? নাকি মোহাম্মদপুর, শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। আমি এটার কোন পার্থক্য করতে পারি নাই।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রাষ্ট্রের বাহিনী। জনগণের টাকায় তাদেরকে বেতন দেওয়া হয়। জনগণের টাকায় এরা বাড়ি ভাড়াসহ সকল সুযোগ-সুবিধা পায়।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, দলীয় প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বিএনপির কোন নেতা নন। যখন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের ভাষায় কথা বলেন, যখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতার ভাষায় কথা বলেন, তাহলে আগামী নির্বাচন কি ভয়ংকর নির্বাচন হবে? ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যেতে পারবে না। ভোটাররা যেতে পারবে না। বিরোধীদল অংশগ্রহণ তো দূরে থাক, প্রতিযোগিতাও করতে পারবে না। ওই নির্বাচন হবে একতরফা আরও একটি অভিনভ নীলনকশার নির্বাচন। সেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার আলামত হচ্ছে গতকাল ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দলীয় বক্তব্য।
তিনি আরও বলেন, এই পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে বলা হবে গ্রামে যারা ভোট দিতে যাবেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। যারা নির্বাচনী প্রচার করবেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। এই ভাবেই শেখ হাসিনা আবারও একতরফা নীলনকশার নির্বাচন করতে চান। কিন্তু এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতি আমাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। গণতন্ত্রের সুবাতাস বইয়ে দিতে হবে। গণতন্ত্রের মুক্তির দিশারী, গণতন্ত্রের বাতিঘর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তা না হলে কারো জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না।
বিএনপি নেতারা কারাগারে কেন? সরকারের কাছে এমন প্রশ্ন রেখে দলটির এই শীর্ষ নেতা বলেন, কই জুয়াড়ি ক্যাসিনোর মালিকরা তো আজকে কারাগারে নেই? যারা সন্ত্রাস করেছে, বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারা কেন কারাগারে নেই? কেন বিচার হয় না আবরার হত্যার? আজকে কেন তানভীর আহমেদ রবিনকে এইভাবে ধাওয়া করে তার ওপর একদম ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে বিএনপির সভা সমাবেশে যে প্রশাসনের ছত্রছায়া যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা হামলা চালায় কেন তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় না?
জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম উপস্থিত ছিলেন।