Dhaka বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকায় একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার এক কক্ষ থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- ইসরাফিল (১৭) ও তার স্ত্রী মোছা. রোকেয়া খাতুন (১৫)।
নিহত মো. ইসরাফিল (১৭) শেরপুরের ঝিনাইগাতি থানার হলদি গ্রামের মো. মফিজুল হকের ছেলে ও মোছা. রোকেয়া খাতুন (১৫) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে।

নিহতদের পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতো ইসরাফিল। সেখানে থাকা অবস্থায় রোকেয়ার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ৭-৮ মাস আগে পরিবারের অমতে ইসরাফিল ও রোকেয়া বিয়ে করে। পরে ইসরাফিল স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাসা থেকে চলে যায়। একপর্যায়ে তার পরিবারের লোকজন ইসরাফিলকে তার স্ত্রীসহ আবার বাসায় ফিরিয়ে আনে।

পরে পাশে বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে ইসরাফিল ও রোকেয়া দম্পতি। ইসরাফিল একটি ওয়ার্কশপে এবং রোকেয়া পোশাক কারখানায় কাজ করতো। শুক্রবার সকালে তাদের পরিবারের লোকজন তাদের ফ্ল্যাটে দরজা খোলা দেখে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরের ভেতর ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো ইসরাফিলের ঝুলন্ত মরদেহ এবং খাটের ওপর রোকেয়ার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের লোকজন। পুলিশে খবর দেওয়া হলে তার ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্লাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্লাটে করতেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান। পরে পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

চিরকুটে লেখা ছিল, মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সাথে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। মো. ইসরাফিল। মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁস দিল। তার জন্য সম্পন্ন আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।

শ্রীপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, খবর পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশের সময় : ০২:২৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকায় একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার এক কক্ষ থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- ইসরাফিল (১৭) ও তার স্ত্রী মোছা. রোকেয়া খাতুন (১৫)।
নিহত মো. ইসরাফিল (১৭) শেরপুরের ঝিনাইগাতি থানার হলদি গ্রামের মো. মফিজুল হকের ছেলে ও মোছা. রোকেয়া খাতুন (১৫) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে।

নিহতদের পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতো ইসরাফিল। সেখানে থাকা অবস্থায় রোকেয়ার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ৭-৮ মাস আগে পরিবারের অমতে ইসরাফিল ও রোকেয়া বিয়ে করে। পরে ইসরাফিল স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাসা থেকে চলে যায়। একপর্যায়ে তার পরিবারের লোকজন ইসরাফিলকে তার স্ত্রীসহ আবার বাসায় ফিরিয়ে আনে।

পরে পাশে বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে ইসরাফিল ও রোকেয়া দম্পতি। ইসরাফিল একটি ওয়ার্কশপে এবং রোকেয়া পোশাক কারখানায় কাজ করতো। শুক্রবার সকালে তাদের পরিবারের লোকজন তাদের ফ্ল্যাটে দরজা খোলা দেখে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরের ভেতর ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো ইসরাফিলের ঝুলন্ত মরদেহ এবং খাটের ওপর রোকেয়ার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের লোকজন। পুলিশে খবর দেওয়া হলে তার ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্লাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্লাটে করতেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান। পরে পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

চিরকুটে লেখা ছিল, মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সাথে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। মো. ইসরাফিল। মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁস দিল। তার জন্য সম্পন্ন আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।

শ্রীপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, খবর পেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।