Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ৩৭ লাখ টাকাসহ আটক

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : 

গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলামকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকাসহ আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় তল্লাশিচৌকিতে ছাবিউল ইসলামের প্রাইভেট কার তল্লাশি করে এসব টাকা পাওয়া যায়। পরে টাকা ও গাড়িসহ তাঁকে পুলিশ আটক করে থানা হেফাজতে নেয়।

জব্দ টাকা জমি বিক্রির বলে পুলিশকে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম। তিনি গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী নগরীর নিজ বাসায় যাচ্ছিলেন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একরামুল হক সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।

একরামুল হক জানান, অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিংড়া উপজেলার চলনবিল গেটে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে তল্লাশি চৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় বগুড়া থেকে নাটোরগামী একটি প্রাইভেট কার থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে পেছনের অংশ থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ টাকা জব্দ করে পুলিশ। পরে জানা যায়, গাড়িটি গাইবান্ধা এলজিইডির প্রকৌশলীর। তিনি ওই প্রাইভেট কারে ছিলেন। অস্বাভাবিক টাকা নিয়ে ভ্রমণ ও টাকার উৎস জানতে তাঁকে সিংড়া থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। ওই নির্বাহী প্রকৌশলী জমি বিক্রির টাকা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে ভাড়া করা প্রাইভেট কারে রাজশাহীর নিজ বাসায় যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন। তবে তাঁর কথায় অস্পষ্টতা থাকায় বিষয়টি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) খবর দেওয়া হয়।

নাটোরের সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসমাউল হক বলেন, প্রাইভেট কারে তল্লাশি চালিয়ে কালো ব্যাগে ভরা অবস্থায় ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা পাওয়া যায়। গাড়ির আরোহীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলে পরিচয় দেন। এতে সন্দেহ হলে প্রাইভেট কার, টাকাসহ আরোহী ছাবিউল ও চালককে আটক রেখে বিষয়টি পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়িতে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা পান। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় টাকা ও প্রাইভেট কারটি জব্দ করে ওই প্রকৌশলীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গাইবান্ধা এলজিইডি কর্মচারী বলেন, স্যার বৃহস্পতিবার হলেই সাদা মাইক্রোবাসটি নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান। পাঁচ দিন অফিস করে ঠিকাদারের কাছ থেকে কমিশন নেন। সেগুলো গাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে যান।

ছাবিউল ইসলামের সহকারী রিয়াজ বলেন, স্যার কি এই বৃহস্পতিবারই বাড়িতে টাকা নিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার আসলেই স্যার কিছু না কিছু টাকা নিয়ে যান। আর এই টাকাগুলো তো স্যার একাই খান না। রাজশাহীতে নেতা ও ঢাকা অফিসে কিছু পাঠাতে হয় স্যারকে। আমি এইটুকু জানি।

ছাবিউল ইসলাম দীর্ঘ ২১ বছর ধরে গাইবান্ধায় কর্মরত। প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বির পালক ছেলে হিসেবেই আওয়ামী লীগের সবাই জানার কারণে তিনি অনিয়ম দুর্নীতি করলেও তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ সাহস পাননি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ৩৭ লাখ টাকাসহ আটক

প্রকাশের সময় : ০৩:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : 

গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলামকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকাসহ আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের চলনবিল গেট এলাকায় তল্লাশিচৌকিতে ছাবিউল ইসলামের প্রাইভেট কার তল্লাশি করে এসব টাকা পাওয়া যায়। পরে টাকা ও গাড়িসহ তাঁকে পুলিশ আটক করে থানা হেফাজতে নেয়।

জব্দ টাকা জমি বিক্রির বলে পুলিশকে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম। তিনি গাইবান্ধা থেকে রাজশাহী নগরীর নিজ বাসায় যাচ্ছিলেন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একরামুল হক সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।

একরামুল হক জানান, অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিংড়া উপজেলার চলনবিল গেটে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে তল্লাশি চৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় বগুড়া থেকে নাটোরগামী একটি প্রাইভেট কার থামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে পেছনের অংশ থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ টাকা জব্দ করে পুলিশ। পরে জানা যায়, গাড়িটি গাইবান্ধা এলজিইডির প্রকৌশলীর। তিনি ওই প্রাইভেট কারে ছিলেন। অস্বাভাবিক টাকা নিয়ে ভ্রমণ ও টাকার উৎস জানতে তাঁকে সিংড়া থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। ওই নির্বাহী প্রকৌশলী জমি বিক্রির টাকা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে ভাড়া করা প্রাইভেট কারে রাজশাহীর নিজ বাসায় যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন। তবে তাঁর কথায় অস্পষ্টতা থাকায় বিষয়টি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) খবর দেওয়া হয়।

নাটোরের সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসমাউল হক বলেন, প্রাইভেট কারে তল্লাশি চালিয়ে কালো ব্যাগে ভরা অবস্থায় ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা পাওয়া যায়। গাড়ির আরোহীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলে পরিচয় দেন। এতে সন্দেহ হলে প্রাইভেট কার, টাকাসহ আরোহী ছাবিউল ও চালককে আটক রেখে বিষয়টি পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়িতে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা পান। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় টাকা ও প্রাইভেট কারটি জব্দ করে ওই প্রকৌশলীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গাইবান্ধা এলজিইডি কর্মচারী বলেন, স্যার বৃহস্পতিবার হলেই সাদা মাইক্রোবাসটি নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান। পাঁচ দিন অফিস করে ঠিকাদারের কাছ থেকে কমিশন নেন। সেগুলো গাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে যান।

ছাবিউল ইসলামের সহকারী রিয়াজ বলেন, স্যার কি এই বৃহস্পতিবারই বাড়িতে টাকা নিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার আসলেই স্যার কিছু না কিছু টাকা নিয়ে যান। আর এই টাকাগুলো তো স্যার একাই খান না। রাজশাহীতে নেতা ও ঢাকা অফিসে কিছু পাঠাতে হয় স্যারকে। আমি এইটুকু জানি।

ছাবিউল ইসলাম দীর্ঘ ২১ বছর ধরে গাইবান্ধায় কর্মরত। প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বির পালক ছেলে হিসেবেই আওয়ামী লীগের সবাই জানার কারণে তিনি অনিয়ম দুর্নীতি করলেও তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ সাহস পাননি।