নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে ডিবি। তাকে ডিবির গাড়িতে পল্টনে বিএনপির অফিসে পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় তাকে ডিবি কার্যালয় থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি জানান ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন।
তিনি জানান, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ আগে তিনি ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে গেছেন।
এর আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছিলেন যে ডিবি কার্যালয় থেকে ডিবির গাড়িতে করে তার বাসায় তাকে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ডিবি কার্যালয় থেকে ডিবির গাড়িতে করে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
আহত গয়েশ্বর রায়কে কেন ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছিল এ বিষয়ে হারুন অর রশিদ বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়েন। এসময় তাদের ধাওয়া দিলে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রাস্তায় পড়ে যান। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ তাকে গাড়িতে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। তাকে আমরা সেভ করেছি।
মোহাম্মদ হারুন আরও বলেন, আমরা আগে থেকে আঁচ করছিলাম, তারা কোনো একসময় অরাজকতা সৃষ্টি করবে। তারা প্রতিবারই প্রোগ্রাম করার আগে অনুমতি গ্রহণ করেছে। অনুমতি তাদের দেওয়াও হয়েছে। ঢাকার চারপাশ বন্ধ করে তারা যে সমাবেশ করে বসে পড়ার কর্মসূচি নিয়েছিল। অথচ কর্মসূচির অনুমতি নেই বলেও মিডিয়া মাধ্যমে জানিয়েছিলেন ডিএমপি কমিশনার। তারা অনুমতি না পেয়েও যেভাবে পুলিশের গায়ে আঘাত করেছে, আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে, গাড়িতে আগুন দিয়েছে। অবশ্য আমাদের কাছে আগে থেকে এমন একটা গোয়েন্দা তথ্য ছিল। সেকারণে আমরাও পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করে রেখেছিলাম। এর মধ্যেও তারা ইটপাটকেল ছুঁড়ে পুলিশকে আহত করেছে।
তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমরা বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সেফ করার জন্য ডিবিতে নিয়ে আসছি। তিনি নেতাকর্মীদের হামলার মধ্যে পড়েছিলেন। নেতাকর্মীরা ঢিল মারছিল। আমরা তাকে সেফ করে নিয়ে আসার পর এখন আবার আমাদের গাড়িতে করেই তার বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি। তারা আজকে ন্যাক্কারজনক কাজ ঘটিয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হবে। যারা যারা এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।
দুপুরে ধোলাইখালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে তিনি অসুস্থবোধ করলে চিকিৎসার জন্য রাজারবাগ পুলিশলাইনস হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হয়।
সেখানে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রায় ২ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ডিবি কার্যালয় থেকে ডিবির গাড়িতে করে গয়েশ্বরকে ব্যক্তিগত কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এর আগে, গয়েশ্বরকে হেফাজতে নেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন লালবাগ বিভাগের ডিসি জাফর হোসেন। শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি জানান, এখানে সমাবেশ করার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। মহানগরের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমরা সকাল থেকে তৎপর আছি। তারা বিভিন্ন গলিতে এসে জড়ো হয়ে তৎপরতা শুরু করে।
এদিন রাজধানীর নয়াবাজার (বাবুবাজার ব্রিজের প্রবেশ মুখ) মোড়ে বিএনপি অবস্থান নেওয়ার কথা থাকলেও এর বদলে ধোলাইখাল মোড়ে অবস্থান নেয় দলটি। সেখানে বেলা ১১টায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি কেন্দ্র করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। জবাবে ইট-পাটকেল ছোড়েন অবস্থানকারীরা।
সেখান থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আটক করে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশের লালবাগ জোনের ডিসি জাফর হোসেন।
এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দুপুর ১২টার দিকে ধোলাইখাল মোড়ের একটি দোকানে অবস্থান করছিলেন গয়েশ্বর। সেখান থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।