Dhaka শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই : ডা. শফিকুর রহমান

খুলনা জেলা প্রতিনিধি : 

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। কেন না রাজনীতি করতে হবে দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে, বাইরের কারও সাহায্য নিয়ে নয়।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গায় আল ফারুক সোসাইটিতে খুলনা মহানগর ও জেলা জামায়াতের আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলসহ সব পর্যায়ের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিদায় নিতে হবে। বছরের পর বছর দেরি করলে আগাছা জন্ম নিতে পারে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।

শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে ‘স্বীকার’ করেন না এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমি নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলসহ সকল স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে সরকারকে বিদায় নিতে হবে। শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমির আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত পনেরো বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোনও নাগরিকই লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিল না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে গেছে। যার ফলেই দেশের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।

রুকন সম্মেলনে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু করা এই জাতির ওপর ধারাবাহিক অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, খুন, রাহাজানি লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং সার্বিক জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত আমাদের কলিজার টুকরা ছাত্র-ছাত্রীদের নেতৃত্বে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সংগ্রামের যে সূচনা হয়েছিল, আল্লাহ তা’আলা তার মধ্য দিয়ে গোটা জাতিকে সম্পৃক্ত করে জুলুমতন্ত্রের অবসান করেছেন। এই জুলুম থেকে আমরা কেউ মুক্ত ছিলাম না। এই রাষ্ট্রের কোনো নাগরিকই তাদের লুটপাট এবং জুলুমের বাইরে ছিল না।

পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ৫৭ জন কমিটেড, দেশ প্রেমিক, চৌকস সেনা অফিসারকে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে খুন করা হয়েছে। এই জঘন্য কাজটি কারা করল? আমাদের সেনাবাহিনীর ওপরে কারা এত বড় আঘাত দিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে কোননো বিশ্বযুদ্ধে একদিনে এতগুলো সেনা অফিসার কোথাও খুন হয়নি। এই কলঙ্কের ইতিহাস রচনা হলো আমাদের দেশের ওপর। এত বড় সর্বনাশটা কে করল? আজ পর্যন্ত জাতির কাছে তা উন্মোচন হলো না।

আওয়ামী লীগের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিডিআর হত্যার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদি শাসনের প্রথম ধাপ শুরু হয়। এরপর জামায়াতের ওপর স্টিম রোলার চালানো হয়। পর্যায়ক্রমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে অথবা কারাগারে রেখে হত্যার মধ্যদিয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। যারা সারাজীবন ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু ইতোমধ্যেই জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা গ্রেপ্তার হতে শুরু করেছে। বর্তমান সরকার ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় এনে একটি বিচারিক সূচনা করবে বলেও তিনি আশা করেন।

শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে স্বীকার করেন না এমন লোকদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমি নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকস সেনা সদস্য হত্যাসহ দেশের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং এর মাস্টার মাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে আবারো জালিমদের আগমন হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত পনের বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিকই লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিল না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে গেছে। যার ফলেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয় দেশের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা মুহাম্মদ এমরান হুসাইন। দারসুল কোরআন পেশ করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন নগর সেক্রেটারি অ্যাড. শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল ও জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই : ডা. শফিকুর রহমান

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৫:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

খুলনা জেলা প্রতিনিধি : 

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। কেন না রাজনীতি করতে হবে দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে, বাইরের কারও সাহায্য নিয়ে নয়।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গায় আল ফারুক সোসাইটিতে খুলনা মহানগর ও জেলা জামায়াতের আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলসহ সব পর্যায়ের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিদায় নিতে হবে। বছরের পর বছর দেরি করলে আগাছা জন্ম নিতে পারে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।

শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে ‘স্বীকার’ করেন না এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমি নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলসহ সকল স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে সরকারকে বিদায় নিতে হবে। শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমির আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত পনেরো বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোনও নাগরিকই লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিল না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে গেছে। যার ফলেই দেশের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।

রুকন সম্মেলনে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু করা এই জাতির ওপর ধারাবাহিক অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, খুন, রাহাজানি লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং সার্বিক জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত আমাদের কলিজার টুকরা ছাত্র-ছাত্রীদের নেতৃত্বে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সংগ্রামের যে সূচনা হয়েছিল, আল্লাহ তা’আলা তার মধ্য দিয়ে গোটা জাতিকে সম্পৃক্ত করে জুলুমতন্ত্রের অবসান করেছেন। এই জুলুম থেকে আমরা কেউ মুক্ত ছিলাম না। এই রাষ্ট্রের কোনো নাগরিকই তাদের লুটপাট এবং জুলুমের বাইরে ছিল না।

পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ৫৭ জন কমিটেড, দেশ প্রেমিক, চৌকস সেনা অফিসারকে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে খুন করা হয়েছে। এই জঘন্য কাজটি কারা করল? আমাদের সেনাবাহিনীর ওপরে কারা এত বড় আঘাত দিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে কোননো বিশ্বযুদ্ধে একদিনে এতগুলো সেনা অফিসার কোথাও খুন হয়নি। এই কলঙ্কের ইতিহাস রচনা হলো আমাদের দেশের ওপর। এত বড় সর্বনাশটা কে করল? আজ পর্যন্ত জাতির কাছে তা উন্মোচন হলো না।

আওয়ামী লীগের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিডিআর হত্যার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদি শাসনের প্রথম ধাপ শুরু হয়। এরপর জামায়াতের ওপর স্টিম রোলার চালানো হয়। পর্যায়ক্রমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে অথবা কারাগারে রেখে হত্যার মধ্যদিয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। যারা সারাজীবন ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু ইতোমধ্যেই জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা গ্রেপ্তার হতে শুরু করেছে। বর্তমান সরকার ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় এনে একটি বিচারিক সূচনা করবে বলেও তিনি আশা করেন।

শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে স্বীকার করেন না এমন লোকদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমি নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকস সেনা সদস্য হত্যাসহ দেশের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং এর মাস্টার মাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে আবারো জালিমদের আগমন হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত পনের বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিকই লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিল না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে গেছে। যার ফলেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয় দেশের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা মুহাম্মদ এমরান হুসাইন। দারসুল কোরআন পেশ করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন নগর সেক্রেটারি অ্যাড. শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল ও জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান।