Dhaka শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণভবন হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের’ স্মৃতি জাদুঘর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১০:২১:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২৪২ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেস্বর) অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের (কেবিনেট) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের বিষয়ে জানাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফ করেন এ উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আমাদের যে গণভবন— নামের মতো এটা গণের (জনগণের) ভবন হয়ে উঠতে পারেনি। এ দেশের মানুষ, ছাত্র-জনতা একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এটাকে জয় করেছে। এটাকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহীদদের স্মৃতি এবং বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যত অন্যায়, অবিচার হয়েছে সব স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। জনগণ যেভাবে বিজয় করেছে সেই অবস্থায়ই রাখা হবে। এর মধ্যেই (গণভবনে) একটা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করবো, যেখানে অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বিভিন্নভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে। আমরা মনে করি, বিচারের আগ পর্যন্ত তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।

জুলাই গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের তালিকা করা হবে জানিয়ে এই উপদেষ্টা জানান, শিগগির প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শহীদদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

উপদেষ্টা পরিষদের সভায় পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের জন্য ক্রিকেট টিমকে অভিনন্দন প্রস্তাব গৃহীত হয়। এছাড়া বন্যাদুর্গতদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে পুনর্বাসন করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্য ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ত্রাণ কার্যক্রম চলমান। আমরা পুনর্বাসন কার্যক্রমও শুরু করেছি। অনেকগুলো এনজিওর সঙ্গে সরকারের মেলবন্ধনের মাধ্যমে এবং সরকারের পক্ষ থেকেও পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।’

গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ কাটাতে রিভিউ কমিটি করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ কাটাতে রিভিউ কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কমিটি গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বপ্লমেয়াদি দাবি পর্যালোচনা করবে। এজন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটিতে গার্মেন্টস মালিকদের প্রতিনিধিও থাকবে।

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে আসিফ মাহমুফ বলেন, তারা রাজনীতি করতে পারবে কি না, সে সিদ্ধান্ত জনগণের। যেহেতু আওয়ামী লীগ গণহত্যা ঘটিয়েছে, সে দায় মাথায় নিয়ে দলটি কীভাবে ফিরবে, সেটা জনগণের সিদ্ধান্ত। তাদের ওপরেই এই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন ছিল গণভবন। এর আগে কোনো প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা নগরের এই বাসভবনে থাকেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শেরেবাংলা নগরে বর্তমান গণভবনের নির্মাণকাজ শেষ হলে তিনি সেখানে অফিস শুরু করেন। তবে তিনি বাস করতেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাংবাদিক হত্যার দায় আমরা এড়াতে পারি না : জিএমপি কমিশনার

গণভবন হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের’ স্মৃতি জাদুঘর

প্রকাশের সময় : ১০:২১:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেস্বর) অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের (কেবিনেট) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের বিষয়ে জানাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফ করেন এ উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আমাদের যে গণভবন— নামের মতো এটা গণের (জনগণের) ভবন হয়ে উঠতে পারেনি। এ দেশের মানুষ, ছাত্র-জনতা একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এটাকে জয় করেছে। এটাকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহীদদের স্মৃতি এবং বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যত অন্যায়, অবিচার হয়েছে সব স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। জনগণ যেভাবে বিজয় করেছে সেই অবস্থায়ই রাখা হবে। এর মধ্যেই (গণভবনে) একটা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করবো, যেখানে অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বিভিন্নভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে। আমরা মনে করি, বিচারের আগ পর্যন্ত তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।

জুলাই গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের তালিকা করা হবে জানিয়ে এই উপদেষ্টা জানান, শিগগির প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শহীদদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

উপদেষ্টা পরিষদের সভায় পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের জন্য ক্রিকেট টিমকে অভিনন্দন প্রস্তাব গৃহীত হয়। এছাড়া বন্যাদুর্গতদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে পুনর্বাসন করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্য ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ত্রাণ কার্যক্রম চলমান। আমরা পুনর্বাসন কার্যক্রমও শুরু করেছি। অনেকগুলো এনজিওর সঙ্গে সরকারের মেলবন্ধনের মাধ্যমে এবং সরকারের পক্ষ থেকেও পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।’

গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ কাটাতে রিভিউ কমিটি করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ কাটাতে রিভিউ কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কমিটি গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বপ্লমেয়াদি দাবি পর্যালোচনা করবে। এজন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটিতে গার্মেন্টস মালিকদের প্রতিনিধিও থাকবে।

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে আসিফ মাহমুফ বলেন, তারা রাজনীতি করতে পারবে কি না, সে সিদ্ধান্ত জনগণের। যেহেতু আওয়ামী লীগ গণহত্যা ঘটিয়েছে, সে দায় মাথায় নিয়ে দলটি কীভাবে ফিরবে, সেটা জনগণের সিদ্ধান্ত। তাদের ওপরেই এই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন ছিল গণভবন। এর আগে কোনো প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা নগরের এই বাসভবনে থাকেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শেরেবাংলা নগরে বর্তমান গণভবনের নির্মাণকাজ শেষ হলে তিনি সেখানে অফিস শুরু করেন। তবে তিনি বাস করতেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে।