Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনায় দীর্ঘ ভোগান্তির পর রাস্তা ঢালাই

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দীর্ঘ ভোগান্তির পর অবশেষে খুলনা নগরীর ব্যস্ততম সামছুর রহমান রোড ও শেখপাড়া বাজার রোডে ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। এই দুই রাস্তায় ওয়াসা পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় স্যুয়ারেজ লাইনে ম্যানহোল তৈরি ও পাইপ বসানোর কাজ করেছে। জানা যায়, সামছুর রহমান রোডে ম্যানহোল ঘিরে পিচ ঢালাই ও শেখপাড়া বাজার রোডে ম্যানহোল ঘিরে আরসিসি ঢালাই দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। ওয়াসার তথ্য মতে, অধিকাংশ বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে পানি বাড়ির পাশের ছোট ড্রেন, সেখান থেকে বড় ড্রেন, এরপর খাল দিয়ে নদীতে চলে যায়। এসব বর্জ্য ড্রেনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দূষিত করছে নগরী ও পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদী ও খাল। বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পয়োনিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করে ওয়াসা।

আরো জানা যায়, এর আগে এপ্রিলে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি, ম্যানহোল তৈরি, পাইপ বসানো কাজে ধীরগতি ও পরবর্তীতে সংস্কার কাজের ঝুঁকি এড়াতে ডিজাইনে টেকনিক্যাল দিক যাচাইয়ে নগরীতে ওয়াসার চলমান কাজ বন্ধ রাখতে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে সংস্কারের সময় সড়কের কোনো অংশ যাতে বসে না যায় সে জন্য সিটি করপোরেশনের সমন্বয় বৈঠকে টেকনিক্যাল দিক নিয়ে আলোচনা হয়। সিটি করপোরেশনের চিফ প্ল্যানিং অফিসার আবির উল জব্বার বলেন, পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পে ওয়াসার একটি রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করে ম্যানহোল তৈরিতে ১ বছরের বেশি সময় লাগছে। অনেক স্থানে টোটাল রাস্তাই ড্যামেজ হয়ে গেছে। নতুন ফুটপাথ ও ড্রেন নষ্ট করেছে। এ ছাড়া যেভাবে ম্যানহোল তৈরি করা হয়েছে, ভবিষ্যতে রাস্তা সংস্কারের সময় তা ভেঙে যেতে পারে কিংবা রাস্তার ওই অংশ দেবে (বসে) যেতে পারে। এতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে ও কেসিসি বিপাকে পড়বে। এসব কারণে ডিজাইনে টেকনিক্যাল দিক যাচাই করতে ওয়াসার কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তাদের দাফতরিক চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তবে অনেকে মনে করছেন, ভবিষ্যতে রাস্তা সংস্কারের সময় ম্যানহোলগুলো ভেঙে যেতে পারে কিংবা রাস্তার ওই অংশ দেবে যেতে পারে। রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি, ম্যানহোল তৈরি ও পাইপ বসানোর পরবর্তী সংস্কার কাজের ঝুঁকি এড়াতে ডিজাইনের টেকনিক্যাল দিক যাচাইয়ে এলজিইডি ও সড়ক বিভাগের মতামত নিয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) কর্তৃপক্ষ। সড়ক দুটিতে চলাচলে দীর্ঘ ভোগান্তির পর ঢালাই দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

ম্যানহোল বসানো রাস্তায় ঢালাই সম্পর্কে খুলনা ওয়াসা প্রকল্প ব্যবস্থাপক খান সেলিম আহম্মদ বলেন, টেকসই কাজে সিটি করপোরেশন কোথাও পিচ ঢালাই ও কোথাও আরসিসি ঢালাই দিয়েছে। তবে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজে ম্যানহোলের চারপাশে রড দিয়ে ইটের খোয়া পাথর, বালু সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া হয়েছে, যা অনেকটা টেকসই। তবে ঢালাইয়ের বিষয়টি সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রণ করছে। ওয়াসা তাদের চাহিদামতো রাস্তা খননের জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।

এদিকে কাজ বন্ধ রাখার চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে ওয়াসা কর্মকর্তারা বলেন, মির্জাপুর ইউসুফ রোড, দারোগাপাড়া ও ট্যাঙ্ক রোডে ম্যানহোল তৈরির জন্য কয়েকটি গর্ত করা হয়েছিল। মোটামুটিভাবে ওই কাজ শেষ করা হয়েছে। তবে নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি বা ম্যানহোল তৈরির কাজ বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে নগরীর শেখপাড়া রোড, আহসান আহমেদ রোড, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, টিবি ক্রস রোড ও সামছুর রহমান রোডের ম্যানহোলের নির্মাণ শেষ হয়েছে। ডিজাইন অনুযায়ী দক্ষতার সঙ্গে নির্মাণকাজ করা হয়েছে, রাস্তা সংস্কারের সময় এটি ভেঙে পড়ার কোনো কারণ নেই। কেসিসি কর্মকর্তারা জানান, অনেক সময় কালভার্ট বা ব্রিজ নির্মাণের পর সংযুক্ত রাস্তা ব্যবহারের কিছু দিনের মধ্যে বসে যায়। সে ক্ষেত্রে ম্যানহোলের চারপাশে জায়গা বসে যাওয়ার আশঙ্কা আছে কি না যাচাই করা হচ্ছে। তারা বলেন, সামছুর রহমান রোড ও শেখপাড়া বাজার রোডে ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে খোঁড়াখুঁড়ি, ম্যানহোলের কাজের জন্য দীর্ঘদিন সেখানে ঢালাইয়ের কাজ করা যায়নি। জনগণের ভোগান্তি এড়াতে রাস্তা দুটিতে ঢালাই দেওয়া হয়েছে।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ম্যানহোল নির্মাণকাজে টেকনিক্যাল কোনো সমস্যা নেই। সিটি করপোরেশন এ নিয়ে এলজিইডি ও সড়ক বিভাগে টেকনিক্যাল মতামত চেয়েছে। তারাও সুস্পষ্টভাবে বলেছে, আগে যেসব জায়গায় এ ধরনের কাজ হয়েছে কোথাও সমস্যা হয়নি। সড়কে যেখানে ম্যানহোল থাকবে ঢালাইয়ের সময় সেখানে বিগ রোলার যাবে না। সেখানে কম্প্যাক্টর রোলার (ছোট আকারের রোলার) দিয়ে সংস্কার কাজ করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

খুলনায় দীর্ঘ ভোগান্তির পর রাস্তা ঢালাই

প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দীর্ঘ ভোগান্তির পর অবশেষে খুলনা নগরীর ব্যস্ততম সামছুর রহমান রোড ও শেখপাড়া বাজার রোডে ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। এই দুই রাস্তায় ওয়াসা পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় স্যুয়ারেজ লাইনে ম্যানহোল তৈরি ও পাইপ বসানোর কাজ করেছে। জানা যায়, সামছুর রহমান রোডে ম্যানহোল ঘিরে পিচ ঢালাই ও শেখপাড়া বাজার রোডে ম্যানহোল ঘিরে আরসিসি ঢালাই দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। ওয়াসার তথ্য মতে, অধিকাংশ বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে পানি বাড়ির পাশের ছোট ড্রেন, সেখান থেকে বড় ড্রেন, এরপর খাল দিয়ে নদীতে চলে যায়। এসব বর্জ্য ড্রেনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দূষিত করছে নগরী ও পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদী ও খাল। বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পয়োনিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করে ওয়াসা।

আরো জানা যায়, এর আগে এপ্রিলে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি, ম্যানহোল তৈরি, পাইপ বসানো কাজে ধীরগতি ও পরবর্তীতে সংস্কার কাজের ঝুঁকি এড়াতে ডিজাইনে টেকনিক্যাল দিক যাচাইয়ে নগরীতে ওয়াসার চলমান কাজ বন্ধ রাখতে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে সংস্কারের সময় সড়কের কোনো অংশ যাতে বসে না যায় সে জন্য সিটি করপোরেশনের সমন্বয় বৈঠকে টেকনিক্যাল দিক নিয়ে আলোচনা হয়। সিটি করপোরেশনের চিফ প্ল্যানিং অফিসার আবির উল জব্বার বলেন, পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পে ওয়াসার একটি রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করে ম্যানহোল তৈরিতে ১ বছরের বেশি সময় লাগছে। অনেক স্থানে টোটাল রাস্তাই ড্যামেজ হয়ে গেছে। নতুন ফুটপাথ ও ড্রেন নষ্ট করেছে। এ ছাড়া যেভাবে ম্যানহোল তৈরি করা হয়েছে, ভবিষ্যতে রাস্তা সংস্কারের সময় তা ভেঙে যেতে পারে কিংবা রাস্তার ওই অংশ দেবে (বসে) যেতে পারে। এতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে ও কেসিসি বিপাকে পড়বে। এসব কারণে ডিজাইনে টেকনিক্যাল দিক যাচাই করতে ওয়াসার কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তাদের দাফতরিক চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তবে অনেকে মনে করছেন, ভবিষ্যতে রাস্তা সংস্কারের সময় ম্যানহোলগুলো ভেঙে যেতে পারে কিংবা রাস্তার ওই অংশ দেবে যেতে পারে। রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি, ম্যানহোল তৈরি ও পাইপ বসানোর পরবর্তী সংস্কার কাজের ঝুঁকি এড়াতে ডিজাইনের টেকনিক্যাল দিক যাচাইয়ে এলজিইডি ও সড়ক বিভাগের মতামত নিয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) কর্তৃপক্ষ। সড়ক দুটিতে চলাচলে দীর্ঘ ভোগান্তির পর ঢালাই দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

ম্যানহোল বসানো রাস্তায় ঢালাই সম্পর্কে খুলনা ওয়াসা প্রকল্প ব্যবস্থাপক খান সেলিম আহম্মদ বলেন, টেকসই কাজে সিটি করপোরেশন কোথাও পিচ ঢালাই ও কোথাও আরসিসি ঢালাই দিয়েছে। তবে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজে ম্যানহোলের চারপাশে রড দিয়ে ইটের খোয়া পাথর, বালু সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া হয়েছে, যা অনেকটা টেকসই। তবে ঢালাইয়ের বিষয়টি সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রণ করছে। ওয়াসা তাদের চাহিদামতো রাস্তা খননের জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।

এদিকে কাজ বন্ধ রাখার চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে ওয়াসা কর্মকর্তারা বলেন, মির্জাপুর ইউসুফ রোড, দারোগাপাড়া ও ট্যাঙ্ক রোডে ম্যানহোল তৈরির জন্য কয়েকটি গর্ত করা হয়েছিল। মোটামুটিভাবে ওই কাজ শেষ করা হয়েছে। তবে নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি বা ম্যানহোল তৈরির কাজ বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে নগরীর শেখপাড়া রোড, আহসান আহমেদ রোড, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, টিবি ক্রস রোড ও সামছুর রহমান রোডের ম্যানহোলের নির্মাণ শেষ হয়েছে। ডিজাইন অনুযায়ী দক্ষতার সঙ্গে নির্মাণকাজ করা হয়েছে, রাস্তা সংস্কারের সময় এটি ভেঙে পড়ার কোনো কারণ নেই। কেসিসি কর্মকর্তারা জানান, অনেক সময় কালভার্ট বা ব্রিজ নির্মাণের পর সংযুক্ত রাস্তা ব্যবহারের কিছু দিনের মধ্যে বসে যায়। সে ক্ষেত্রে ম্যানহোলের চারপাশে জায়গা বসে যাওয়ার আশঙ্কা আছে কি না যাচাই করা হচ্ছে। তারা বলেন, সামছুর রহমান রোড ও শেখপাড়া বাজার রোডে ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে খোঁড়াখুঁড়ি, ম্যানহোলের কাজের জন্য দীর্ঘদিন সেখানে ঢালাইয়ের কাজ করা যায়নি। জনগণের ভোগান্তি এড়াতে রাস্তা দুটিতে ঢালাই দেওয়া হয়েছে।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ম্যানহোল নির্মাণকাজে টেকনিক্যাল কোনো সমস্যা নেই। সিটি করপোরেশন এ নিয়ে এলজিইডি ও সড়ক বিভাগে টেকনিক্যাল মতামত চেয়েছে। তারাও সুস্পষ্টভাবে বলেছে, আগে যেসব জায়গায় এ ধরনের কাজ হয়েছে কোথাও সমস্যা হয়নি। সড়কে যেখানে ম্যানহোল থাকবে ঢালাইয়ের সময় সেখানে বিগ রোলার যাবে না। সেখানে কম্প্যাক্টর রোলার (ছোট আকারের রোলার) দিয়ে সংস্কার কাজ করা হবে।