Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনা-পাইকগাছা সড়কের বেহাল দশায় বাস-ট্রাক বন্ধ, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা

তালা উপজেলা প্রতিনিধি : 

বিরামহীন বৃষ্টিতে খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের তালা উপ-শহরের জেলেপাড়া এলাকায় বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে স্থানটিতে বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সড়কটিতে হেলেদুলে চলছে অন্যান্য যানবাহন। চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।

রোববার (১৩ জুলাই) থেকে খুলনা-আঠারোমাইল-তালা-পাইকগাছা-কয়রা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিক সমিতি। এরপর সোমবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণের কারণে সড়কের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের তালা উপ-শহরের জেলেপাড়া এলাকা থেকে প্রায় তালা ব্রিজ মোড় পর্যন্ত সংস্কার কাজ চলছি। সড়কটির কিছু স্থানে রাস্তা খুঁড়ে রেখে দেয় ঠিকাদার। এরই মধ্যে বিরামহীন বৃষ্টির কারণে সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ওই সড়কে কয়েকটি স্পটে পরিস্থিতি এতোটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে, পায়ে হেঁটে পার হওয়াটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দুইদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শত শত যাত্রী বাসস্ট্যান্ডে এসে বিপাকে পড়েছেন। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অনেকে মোটরসাইকেল ভাড়া করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বহীনতা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালীপনার কারণে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা থেকে আঠারোমাইল-তালা হয়ে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলায় যান চলাচলের একমাত্র প্রবেশপথ এটি। কিন্তু সড়কের কিছু স্থানে খুবই করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাস, ট্রাকসহ অন্য বড় বড় যানবাহনগুলো ওই এলাকা পার হতে গেলেই কাদায় পড়ে আটকে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট ছোট দুর্ঘটনা। এমনকি পথচারীরা পায়ে হেঁটে পার হতেও পারছে না। রোববার সড়কটি একেবারে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সেদিন সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে মালিক সমিতি। সোমবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণের পর সড়কের অবস্থার আরও খারাপ হয়ে পড়ে।

বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি অমরেশ কুমার মন্ডল জানান, আঠারো মাইল থেকে তালা সদর হয়ে পাইকগাছা পর্যন্ত ৬ স্থানের রাস্তার খুব খারাপ অবস্থা। তালা থানা-ব্রিজ মোড়ের মধ্যবর্তী স্থান এবং কপিলমুনি ফকিরবাসা মোড়, গোলাবাটী মোড়, মুচির পুকুরের মোড়ের অবস্থা খুবই খারাপ। মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ইট-বালু ফেলে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছি।

আব্দুল আজিজ নামের একজন পথচারী জানান, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বে অবহেলার কারণে চরম মাশুল গুণতে হচ্ছে সাধারণ পথচারীদের।

বাস, ট্রাক, পিকআপ, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল চালকরা অভিযোগ করেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও সড়ক জনপদের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলায় এই মাশুল গুণতে হচ্ছে আমাদের। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।

খুলনা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-পাইকগাছা রুটে প্রতি ১২ মিনিট পরপর একটি গাড়ি ছেড়ে যায়। সেই হিসেবে দৈনিক ১২০টি গাড়ি চলাচল করে এবং ঢাকামুখী ৭০টি পরিবহন চলাচল করে এই সড়কে। তবে নাজুক পরিস্থিতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই দুইদিন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দীপা রানী সরকার জানান, সড়কের বিষয়টি নিয়ে খুলনা বিভাগীয় প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার করা হবে।

খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানিমুল হক জানান, সড়কে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। অচিরেই সড়কে চলাচল স্বাভাবিক হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

খুলনা-পাইকগাছা সড়কের বেহাল দশায় বাস-ট্রাক বন্ধ, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা

প্রকাশের সময় : ০২:৪৩:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

তালা উপজেলা প্রতিনিধি : 

বিরামহীন বৃষ্টিতে খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের তালা উপ-শহরের জেলেপাড়া এলাকায় বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে স্থানটিতে বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সড়কটিতে হেলেদুলে চলছে অন্যান্য যানবাহন। চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।

রোববার (১৩ জুলাই) থেকে খুলনা-আঠারোমাইল-তালা-পাইকগাছা-কয়রা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিক সমিতি। এরপর সোমবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণের কারণে সড়কের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের তালা উপ-শহরের জেলেপাড়া এলাকা থেকে প্রায় তালা ব্রিজ মোড় পর্যন্ত সংস্কার কাজ চলছি। সড়কটির কিছু স্থানে রাস্তা খুঁড়ে রেখে দেয় ঠিকাদার। এরই মধ্যে বিরামহীন বৃষ্টির কারণে সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ওই সড়কে কয়েকটি স্পটে পরিস্থিতি এতোটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে, পায়ে হেঁটে পার হওয়াটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দুইদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শত শত যাত্রী বাসস্ট্যান্ডে এসে বিপাকে পড়েছেন। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অনেকে মোটরসাইকেল ভাড়া করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বহীনতা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালীপনার কারণে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা থেকে আঠারোমাইল-তালা হয়ে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলায় যান চলাচলের একমাত্র প্রবেশপথ এটি। কিন্তু সড়কের কিছু স্থানে খুবই করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাস, ট্রাকসহ অন্য বড় বড় যানবাহনগুলো ওই এলাকা পার হতে গেলেই কাদায় পড়ে আটকে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট ছোট দুর্ঘটনা। এমনকি পথচারীরা পায়ে হেঁটে পার হতেও পারছে না। রোববার সড়কটি একেবারে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সেদিন সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে মালিক সমিতি। সোমবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণের পর সড়কের অবস্থার আরও খারাপ হয়ে পড়ে।

বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি অমরেশ কুমার মন্ডল জানান, আঠারো মাইল থেকে তালা সদর হয়ে পাইকগাছা পর্যন্ত ৬ স্থানের রাস্তার খুব খারাপ অবস্থা। তালা থানা-ব্রিজ মোড়ের মধ্যবর্তী স্থান এবং কপিলমুনি ফকিরবাসা মোড়, গোলাবাটী মোড়, মুচির পুকুরের মোড়ের অবস্থা খুবই খারাপ। মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ইট-বালু ফেলে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছি।

আব্দুল আজিজ নামের একজন পথচারী জানান, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বে অবহেলার কারণে চরম মাশুল গুণতে হচ্ছে সাধারণ পথচারীদের।

বাস, ট্রাক, পিকআপ, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল চালকরা অভিযোগ করেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও সড়ক জনপদের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলায় এই মাশুল গুণতে হচ্ছে আমাদের। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।

খুলনা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-পাইকগাছা রুটে প্রতি ১২ মিনিট পরপর একটি গাড়ি ছেড়ে যায়। সেই হিসেবে দৈনিক ১২০টি গাড়ি চলাচল করে এবং ঢাকামুখী ৭০টি পরিবহন চলাচল করে এই সড়কে। তবে নাজুক পরিস্থিতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই দুইদিন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দীপা রানী সরকার জানান, সড়কের বিষয়টি নিয়ে খুলনা বিভাগীয় প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার করা হবে।

খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানিমুল হক জানান, সড়কে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। অচিরেই সড়কে চলাচল স্বাভাবিক হবে।