Dhaka শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোহলি-সল্টে ঝড়ে জয় দিয়ে আইপিএল শুরু বেঙ্গালুরুর

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০১:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • ২১৯ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

আইপিএল ইতিহাসের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) ও কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। সেই ম্যাচটা হয়েছিল বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বমী স্টেডিয়ামে। শনিবার (২২ মার্চ) ১৮তম আসরে এসে আবারও শুরুর ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হলো এই দুই দলের মাঝে। তবে কলকাতা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়, গতকালের ভেন্যু ছিল ইডেন গার্ডেন্স।

অষ্টাদশ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে বেঙ্গালুরুর জয় ৭ উইকেটে। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে শনিবার ১৭৫ রানের লক্ষ্য ২২ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় তারা।

নতুন অধিনায়ক রাজাত পাতিদারের অধিনায়কত্বে শুরুটা দারুণ হলো বেঙ্গালুরুর। আরেক নতুন অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে শিরোপা ধরে রাখার অভিযানের শুরুটা সুখকর হলো না গতবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতার।

ব্যাটে হাতে আলো ছড়ান অবশ্য দুই অধিনায়কই। ৪ ছক্কা ও ৬ চারে ৩১ বলে ৫৬ রান করেন রাহানে। ৫ চার ও এক ছক্কায় ১৬ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস উপহার দেন পাতিদার।

ক্যারিয়ারের ৪০০তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩৬ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন কোহলি। ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে গড়া ইনিংসটির পথে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে ভিন্ন চার দলের বিপক্ষে হাজার রান করার কীর্তি গড়েন তিনি।

গতবার কলকাতার শিরোপা জয়ে ব্যাট হাতে বড় অবদান রাখা সল্ট এবার বেঙ্গালুরুর হয়ে অভিষেকে ৩১ বলে করেন ৫৬ রান। এই ইংলিশ ওপেনারের ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ২ ছক্কা।

ম্যাচের সেরা অবশ্য তাদের কেউ নন। বল হাতে ৪ ওভারে ২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পুরস্কারটি পান বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার ক্রুনাল পান্ডিয়া। তার হাত ধরেই মূলত ঘুরে দাঁড়ায় বেঙ্গালুরু। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২২ রানে ২ উইকেট নেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার জশ হেইজেলউড।

২০০৮ সালে প্রথম আসরের পর প্রথমবারের মতো কোনো আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হলো এই দুই দল। গত দুই আসর মিলিয়ে কলকাতার বিপক্ষে টানা চার হারের পর জয়ের স্বাদ পেল বেঙ্গালুরু।

ম্যাচের আগে হয় বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যেখানে পারফর্ম করেন কলকাতার মালিকদের একজন ও বলিউড তারকা শাহরুখ খান, দিশা পাটানি, সংগীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষালরা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই কুইন্টন ডি কককে হারায় কলকাতা। হেইজেলউডের এই ওভারে একবার জীবন পেয়েও ৪ রানের বেশি করতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার।

প্রথম ৩ ওভারে একটি উইকেট হারিয়ে কলকাতার রান ছিল কেবল ৯। পরের ৩ ওভারে তারা তোলে ৫১ রান।

রাসিখ সালামের চার বলের মধ্যে দুটি ছক্কা ও একটি চারে ডানা মেলে দেন রাহানে। ইয়াশ দায়ালের টানা তিন বলে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। সুয়াশ শার্মাকে ছক্কায় উড়িয়ে স্রেফ ২৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

শুরুতে এক প্রান্তে দর্শক হয়ে থাকলেও পরে রান উৎসবে যোগ দেন সুনিল নারাইনও। ২৬ বলে ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৪৪ রান করে দশম ওভারের শেষ বলে ফেরেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার, ভাঙে ৫৫ বলে ১০৩ রানের বিস্ফোরক জুটি।

কলকাতার রান তখন ২ উইকেটে ১০৭, বড় সংগ্রহের হাতছানি তাদের সামনে। কিন্তু বাকি ১০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তারা করতে পারে মাত্র ৬৭ রান!

নিজের টানা তিন ওভারে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রাহানে এবং বিধ্বংসী দুই ব্যাটসম্যান ভেঙ্কাটেশ আইয়ার ও রিঙ্কু সিংকে ফেরান ক্রুনাল পান্ডিয়া। প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি আন্দ্রে রাসেলও। ২২ বলে ৩০ রানের ইনিংসে দলের স্কোর দেড়শ পার করেন আঙ্করিশ রাঘুভাংশি।

রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন সল্ট। তৃতীয় ওভারে বৈভব আরোরাকে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। একটি চার মারেন কোহলিও। এই ওভারে আসে ২০ রান।

গতবার কলকাতার শিরোপা ও কদিন আগে ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে বড় অবদান রাখা ভারুন চক্রবর্তির ওপর দিয়েও ঝড় বয়ে যায়। এই রহস্য স্পিনারের প্রথম ওভারে টানা চার বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কা মারেন সল্ট, ওভারে আসে ২১ রান।

পরের ওভারে অস্ট্রেলিয়ান পেসার স্পেন্সার জনসনকে চমৎকার শটে টানা দুটি ছক্কা মারেন কোহলি। প্রথম পাঁচ ওভারে আসে ৭৫ রান, পাওয়ার প্লেতে ৮০। ২৫ বলে ফিফটি করার পর ভারুনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সল্ট। কোহলি পঞ্চাশে পা রাখেন ৩০ বলে।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি দেভদুত পাডিক্কাল। দ্রুত রান তুলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন অধিনায়ক পাতিদার। জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে তিনি ফেরার পর লিয়াম লিভিংস্টোনকে নিয়ে বাকিটা সারেন কোহলি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কোহলি-সল্টে ঝড়ে জয় দিয়ে আইপিএল শুরু বেঙ্গালুরুর

প্রকাশের সময় : ০১:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

আইপিএল ইতিহাসের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) ও কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। সেই ম্যাচটা হয়েছিল বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বমী স্টেডিয়ামে। শনিবার (২২ মার্চ) ১৮তম আসরে এসে আবারও শুরুর ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হলো এই দুই দলের মাঝে। তবে কলকাতা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়, গতকালের ভেন্যু ছিল ইডেন গার্ডেন্স।

অষ্টাদশ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে বেঙ্গালুরুর জয় ৭ উইকেটে। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে শনিবার ১৭৫ রানের লক্ষ্য ২২ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় তারা।

নতুন অধিনায়ক রাজাত পাতিদারের অধিনায়কত্বে শুরুটা দারুণ হলো বেঙ্গালুরুর। আরেক নতুন অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে শিরোপা ধরে রাখার অভিযানের শুরুটা সুখকর হলো না গতবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতার।

ব্যাটে হাতে আলো ছড়ান অবশ্য দুই অধিনায়কই। ৪ ছক্কা ও ৬ চারে ৩১ বলে ৫৬ রান করেন রাহানে। ৫ চার ও এক ছক্কায় ১৬ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস উপহার দেন পাতিদার।

ক্যারিয়ারের ৪০০তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩৬ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন কোহলি। ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে গড়া ইনিংসটির পথে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে ভিন্ন চার দলের বিপক্ষে হাজার রান করার কীর্তি গড়েন তিনি।

গতবার কলকাতার শিরোপা জয়ে ব্যাট হাতে বড় অবদান রাখা সল্ট এবার বেঙ্গালুরুর হয়ে অভিষেকে ৩১ বলে করেন ৫৬ রান। এই ইংলিশ ওপেনারের ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ২ ছক্কা।

ম্যাচের সেরা অবশ্য তাদের কেউ নন। বল হাতে ৪ ওভারে ২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পুরস্কারটি পান বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার ক্রুনাল পান্ডিয়া। তার হাত ধরেই মূলত ঘুরে দাঁড়ায় বেঙ্গালুরু। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২২ রানে ২ উইকেট নেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার জশ হেইজেলউড।

২০০৮ সালে প্রথম আসরের পর প্রথমবারের মতো কোনো আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হলো এই দুই দল। গত দুই আসর মিলিয়ে কলকাতার বিপক্ষে টানা চার হারের পর জয়ের স্বাদ পেল বেঙ্গালুরু।

ম্যাচের আগে হয় বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যেখানে পারফর্ম করেন কলকাতার মালিকদের একজন ও বলিউড তারকা শাহরুখ খান, দিশা পাটানি, সংগীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষালরা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই কুইন্টন ডি কককে হারায় কলকাতা। হেইজেলউডের এই ওভারে একবার জীবন পেয়েও ৪ রানের বেশি করতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার।

প্রথম ৩ ওভারে একটি উইকেট হারিয়ে কলকাতার রান ছিল কেবল ৯। পরের ৩ ওভারে তারা তোলে ৫১ রান।

রাসিখ সালামের চার বলের মধ্যে দুটি ছক্কা ও একটি চারে ডানা মেলে দেন রাহানে। ইয়াশ দায়ালের টানা তিন বলে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। সুয়াশ শার্মাকে ছক্কায় উড়িয়ে স্রেফ ২৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

শুরুতে এক প্রান্তে দর্শক হয়ে থাকলেও পরে রান উৎসবে যোগ দেন সুনিল নারাইনও। ২৬ বলে ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৪৪ রান করে দশম ওভারের শেষ বলে ফেরেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার, ভাঙে ৫৫ বলে ১০৩ রানের বিস্ফোরক জুটি।

কলকাতার রান তখন ২ উইকেটে ১০৭, বড় সংগ্রহের হাতছানি তাদের সামনে। কিন্তু বাকি ১০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তারা করতে পারে মাত্র ৬৭ রান!

নিজের টানা তিন ওভারে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রাহানে এবং বিধ্বংসী দুই ব্যাটসম্যান ভেঙ্কাটেশ আইয়ার ও রিঙ্কু সিংকে ফেরান ক্রুনাল পান্ডিয়া। প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি আন্দ্রে রাসেলও। ২২ বলে ৩০ রানের ইনিংসে দলের স্কোর দেড়শ পার করেন আঙ্করিশ রাঘুভাংশি।

রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন সল্ট। তৃতীয় ওভারে বৈভব আরোরাকে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। একটি চার মারেন কোহলিও। এই ওভারে আসে ২০ রান।

গতবার কলকাতার শিরোপা ও কদিন আগে ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে বড় অবদান রাখা ভারুন চক্রবর্তির ওপর দিয়েও ঝড় বয়ে যায়। এই রহস্য স্পিনারের প্রথম ওভারে টানা চার বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কা মারেন সল্ট, ওভারে আসে ২১ রান।

পরের ওভারে অস্ট্রেলিয়ান পেসার স্পেন্সার জনসনকে চমৎকার শটে টানা দুটি ছক্কা মারেন কোহলি। প্রথম পাঁচ ওভারে আসে ৭৫ রান, পাওয়ার প্লেতে ৮০। ২৫ বলে ফিফটি করার পর ভারুনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সল্ট। কোহলি পঞ্চাশে পা রাখেন ৩০ বলে।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি দেভদুত পাডিক্কাল। দ্রুত রান তুলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন অধিনায়ক পাতিদার। জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে তিনি ফেরার পর লিয়াম লিভিংস্টোনকে নিয়ে বাকিটা সারেন কোহলি।