Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধান চায় ছাত্রলীগ : সাদ্দাম হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধান ছাত্রলীগও চায়। এছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে যে কোনো সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে কোটা সংস্কার ইস্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সময়ের সাথে কোটা কমিয়ে আনা দরকার। তবে আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া আদালত অবমাননার সামিল।

সাদ্দাম বলেন, কোটা কমিয়ে আনার জন্য ছাত্রলীগ বিভিন্ন মহলে কথা বলেছে। কোটার রায় নিয়ে বিচার বিভাগ পর্যবেক্ষণ করছে, আইন বিভাগ কাজ করছে, এমন অবস্থায় আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী করা কৃত্রিম সংকটের চেষ্টা ছাড়া কিছুই না।

বিচার বিভাগকে সম্মান জানিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দেশের মানুষকে ভোগান্তিতে না ফেলার আহবান জানান সাদ্দাম। তিনি দাবি করেন, কোটা আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি।

তিনি বলেন, আন্দোলন করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে ছাত্রলীগ।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের সরকারের পরিপত্র আদালতের রায় এখনো বহাল। আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের পথকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা ঠিক হবে না। আন্দোলনকে টেনেহেঁচড়ে এভাবে দীর্ঘায়িত করা উচিত নয়।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, যেখানে সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষার্থীতেই একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয় তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত এবং উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয় যা পুরোপুরি ন্যায় এবং সংবিধান সম্মত।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ২০১৮ সাল থেকে কোটা ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার কারণে নারীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যায়, যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য অন্তরায় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, কোটা ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এদেশের নারী সমাজ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সমন্বিত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধনের জন্য জেলা কোটার প্রচলন হলেও কোটা তুলে দেবার পর তা থেকে বঞ্চিত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। উদাহরণস্বরূপ: ৪০তম বিসিএসে দেশের ২৪টি জেলা থেকে এবং ৪১তম বিসিএসে ১৮টি জেলা থেকে একজনও বিসিএস পুলিশে সুপারিশকৃত হয়নি।

সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, সমাজের পিছিয়ে পরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীর জন্যও এটি সত্য। কোটা থাকা অবস্থায় ৩১ থেকে ৩৮তম বিসিএসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ১৭৯ জন সুপারিশকৃত হন। কোটা বাতিলের পর ৩৯তম বিসিএসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ২৪ জন সুপারিশ পেয়েছেন এবং ৪০ ও ৪১ বিসিএসে সুপারিশ পেয়েছেন মাত্র দুজন।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধান চায় ছাত্রলীগ : সাদ্দাম হোসেন

প্রকাশের সময় : ০১:৪৩:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধান ছাত্রলীগও চায়। এছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে যে কোনো সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে কোটা সংস্কার ইস্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সময়ের সাথে কোটা কমিয়ে আনা দরকার। তবে আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া আদালত অবমাননার সামিল।

সাদ্দাম বলেন, কোটা কমিয়ে আনার জন্য ছাত্রলীগ বিভিন্ন মহলে কথা বলেছে। কোটার রায় নিয়ে বিচার বিভাগ পর্যবেক্ষণ করছে, আইন বিভাগ কাজ করছে, এমন অবস্থায় আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী করা কৃত্রিম সংকটের চেষ্টা ছাড়া কিছুই না।

বিচার বিভাগকে সম্মান জানিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দেশের মানুষকে ভোগান্তিতে না ফেলার আহবান জানান সাদ্দাম। তিনি দাবি করেন, কোটা আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি।

তিনি বলেন, আন্দোলন করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে ছাত্রলীগ।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের সরকারের পরিপত্র আদালতের রায় এখনো বহাল। আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের পথকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা ঠিক হবে না। আন্দোলনকে টেনেহেঁচড়ে এভাবে দীর্ঘায়িত করা উচিত নয়।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, যেখানে সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষার্থীতেই একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয় তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত এবং উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয় যা পুরোপুরি ন্যায় এবং সংবিধান সম্মত।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ২০১৮ সাল থেকে কোটা ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার কারণে নারীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যায়, যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য অন্তরায় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, কোটা ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এদেশের নারী সমাজ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সমন্বিত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধনের জন্য জেলা কোটার প্রচলন হলেও কোটা তুলে দেবার পর তা থেকে বঞ্চিত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। উদাহরণস্বরূপ: ৪০তম বিসিএসে দেশের ২৪টি জেলা থেকে এবং ৪১তম বিসিএসে ১৮টি জেলা থেকে একজনও বিসিএস পুলিশে সুপারিশকৃত হয়নি।

সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, সমাজের পিছিয়ে পরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীর জন্যও এটি সত্য। কোটা থাকা অবস্থায় ৩১ থেকে ৩৮তম বিসিএসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ১৭৯ জন সুপারিশকৃত হন। কোটা বাতিলের পর ৩৯তম বিসিএসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ২৪ জন সুপারিশ পেয়েছেন এবং ৪০ ও ৪১ বিসিএসে সুপারিশ পেয়েছেন মাত্র দুজন।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।