Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেশবপুরের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করায় বিপাকে ৫০টি পরিবার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:০৭:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
  • ২০১ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় একটি রাস্তা বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন এক পুকুরমালিক। এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলার নতুন মূলগ্রামের ৫০টি পরিবার। তাদের প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয় বাজারে আসা–যাওয়া করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন মূলগ্রাম বাজার থেকে দক্ষিণের ইট বিছানো রাস্তায় ৬০০ গজ দূরে রাস্তার পাশের বাঁধের ওপরের রাস্তার পূর্বাংশ জাল ও বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। একই ভাবে বাঁধের পশ্চিম প্রান্তে কর্মকারপাড়ার ইন্দ্রজিৎ কর্মকারের বাড়ির লাগোয়া অংশেও ঘিরে দেওয়া হয়েছে।

কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন মূলগ্রাম এলাকায় মোশারফ হোসেনের দুটি পুকুর আছে। ওই পুকুরে মাঝখান দিয়ে একটি বাঁধ রয়েছে। স্থানীয় কামার সম্প্রদায়ের আটটি পরিবার ওই বাঁধ রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে নতুন মূলগ্রাম বাজারে আসা–যাওয়া করেন। এ ছাড়া এই রাস্তা দিয়ে কর্মকার (কামার) পাড়ার পেছনের খাঁপাড়া ও বিশ্বাসপাড়ার বেশ কিছু পরিবারের তিন শতাধিক মানুষ চলাচল করে থাকেন। শুধু তাই নয়, এই তিন পাড়ার পেছনের বিল থেকে ধান-পাটসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যও এই রাস্তা ব্যবহার করে এলাকাবাসী বাড়িতে নিয়ে যান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মোশারফ হোসেন ৬৪ শতাংশ জমিতে ওই দুটি পুকুর করেছেন। এর মধ্যে সাড়ে ৯ শতাংশ জমি খতিয়ানভূক্ত। সম্প্রতি ওই পুকুরের মালিক মোশারফ হোসেন ওই বাঁধের ওপরের রাস্তা দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বাঁধের পূর্ব-পশ্চিমের দুটি অংশে জাল দিয়ে ঘিরে বেড়া দিয়ে দেন।

কর্মকারপাড়ার বাসিন্দা রবিন কর্মকার বলেন, বাপ-দাদাদের চলার পথ আজ ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ওই পুকুরের ভেতরে সরকারের খাসজমি রয়েছে। সে জমিও মোশারফ হোসেন ভোগ–দখল করছেন, অথচ তাঁদের চলাচলের রাস্তা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) বিভিন্ন দপ্তরে রাস্তা ঘিরে রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেছি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ এলাকার বাসিন্দারা এখন গ্রামের শেষ প্রান্ত দিয়ে দেড় কিলোমিটার মেঠোপথ ঘুরে নতুন মূলগ্রামের পাকা রাস্তায় যাচ্ছেন।

নতুন মূলগ্রামের অমিরন নেসা (৬৮) বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকে কর্মকারদের এ পথ দিয়ে চলাচল করতে দেখছেন। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াটা চরম অন্যায়। ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, জমিরমালিক যে–ই হোন না কেন, একটি এলাকার তিন শতাধিক মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়াটি চরম অন্যায় হয়েছে।

এ বিষয়ে ওই দুই পুকুরের মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, এতদিন তাঁর জমির ওপর দিয়ে কর্মকারপাড়াসহ অন্যরা চলাচল করতেন। তিনি সম্প্রতি তাঁর দুটি পুকুর একসঙ্গে বড় করার জন্যে ওখানে গেলে কর্মকারপাড়ার লোকজন তাঁকে মারধর করেন। সে কারণে তিনি তাঁর জায়গা ঘিরে দিয়েছেন। তিন তাঁর জমির ওপর দিয়ে কাউকে যেতে দেবেন না।

এ ব্যাপারে কেশবপুরের উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) আরিফুজ্জামান বলেন, পুকুরের পশ্চিম অংশে পুকুরের মধ্যে খাসজমি আছে। সে জমি উদ্ধার করা হবে। এরপর সেখানে সংসদ সদস্যের মাধ্যমে একটি প্রকল্প বরাদ্দের ব্যবস্থা করে দক্ষিণে মাটির রাস্তা করে দেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কেশবপুরের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করায় বিপাকে ৫০টি পরিবার

প্রকাশের সময় : ০৪:০৭:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় একটি রাস্তা বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন এক পুকুরমালিক। এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলার নতুন মূলগ্রামের ৫০টি পরিবার। তাদের প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয় বাজারে আসা–যাওয়া করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন মূলগ্রাম বাজার থেকে দক্ষিণের ইট বিছানো রাস্তায় ৬০০ গজ দূরে রাস্তার পাশের বাঁধের ওপরের রাস্তার পূর্বাংশ জাল ও বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। একই ভাবে বাঁধের পশ্চিম প্রান্তে কর্মকারপাড়ার ইন্দ্রজিৎ কর্মকারের বাড়ির লাগোয়া অংশেও ঘিরে দেওয়া হয়েছে।

কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন মূলগ্রাম এলাকায় মোশারফ হোসেনের দুটি পুকুর আছে। ওই পুকুরে মাঝখান দিয়ে একটি বাঁধ রয়েছে। স্থানীয় কামার সম্প্রদায়ের আটটি পরিবার ওই বাঁধ রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে নতুন মূলগ্রাম বাজারে আসা–যাওয়া করেন। এ ছাড়া এই রাস্তা দিয়ে কর্মকার (কামার) পাড়ার পেছনের খাঁপাড়া ও বিশ্বাসপাড়ার বেশ কিছু পরিবারের তিন শতাধিক মানুষ চলাচল করে থাকেন। শুধু তাই নয়, এই তিন পাড়ার পেছনের বিল থেকে ধান-পাটসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যও এই রাস্তা ব্যবহার করে এলাকাবাসী বাড়িতে নিয়ে যান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মোশারফ হোসেন ৬৪ শতাংশ জমিতে ওই দুটি পুকুর করেছেন। এর মধ্যে সাড়ে ৯ শতাংশ জমি খতিয়ানভূক্ত। সম্প্রতি ওই পুকুরের মালিক মোশারফ হোসেন ওই বাঁধের ওপরের রাস্তা দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বাঁধের পূর্ব-পশ্চিমের দুটি অংশে জাল দিয়ে ঘিরে বেড়া দিয়ে দেন।

কর্মকারপাড়ার বাসিন্দা রবিন কর্মকার বলেন, বাপ-দাদাদের চলার পথ আজ ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ওই পুকুরের ভেতরে সরকারের খাসজমি রয়েছে। সে জমিও মোশারফ হোসেন ভোগ–দখল করছেন, অথচ তাঁদের চলাচলের রাস্তা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) বিভিন্ন দপ্তরে রাস্তা ঘিরে রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেছি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ এলাকার বাসিন্দারা এখন গ্রামের শেষ প্রান্ত দিয়ে দেড় কিলোমিটার মেঠোপথ ঘুরে নতুন মূলগ্রামের পাকা রাস্তায় যাচ্ছেন।

নতুন মূলগ্রামের অমিরন নেসা (৬৮) বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকে কর্মকারদের এ পথ দিয়ে চলাচল করতে দেখছেন। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াটা চরম অন্যায়। ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, জমিরমালিক যে–ই হোন না কেন, একটি এলাকার তিন শতাধিক মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়াটি চরম অন্যায় হয়েছে।

এ বিষয়ে ওই দুই পুকুরের মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, এতদিন তাঁর জমির ওপর দিয়ে কর্মকারপাড়াসহ অন্যরা চলাচল করতেন। তিনি সম্প্রতি তাঁর দুটি পুকুর একসঙ্গে বড় করার জন্যে ওখানে গেলে কর্মকারপাড়ার লোকজন তাঁকে মারধর করেন। সে কারণে তিনি তাঁর জায়গা ঘিরে দিয়েছেন। তিন তাঁর জমির ওপর দিয়ে কাউকে যেতে দেবেন না।

এ ব্যাপারে কেশবপুরের উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) আরিফুজ্জামান বলেন, পুকুরের পশ্চিম অংশে পুকুরের মধ্যে খাসজমি আছে। সে জমি উদ্ধার করা হবে। এরপর সেখানে সংসদ সদস্যের মাধ্যমে একটি প্রকল্প বরাদ্দের ব্যবস্থা করে দক্ষিণে মাটির রাস্তা করে দেওয়া হবে।