Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুয়েতের নতুন আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহকে দেশটির নতুন আমির হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) পূর্বসূরি শেখ নাওয়াফের মৃত্যুর পর তেল সমৃদ্ধ দেশটির নতুন আমির হয়েছেন তিনি।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। এরপর দেশটি নতুন আমিরের নাম ঘোষণা করেছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা আল খানদারি এক বিবৃতিতে জানান, শেখ মিশাল আল আহমদ আল জাবেরকে আমিরের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে তার বয়স ৮৩ বছর। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

এর আগে শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল আহমদ আল জাবেরের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। রয়েল কোর্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা গভীর দুঃখ ও শোক প্রকাশ করছি। কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল আহমাদ আল সাবাহ মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

২০২০ সালে তৎকালীন আমির সাবাহ আল-আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহর মৃত্যুর পর ৮০ বছর বয়সে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন মিশাল। এর মাধ্যমে বিশ্বের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বয়স্ক ক্রাউন প্রিন্স’ হওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।

নাওয়াফ ২০২০ সালে আমির হয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময় থেকেই নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০২১ সালে চিকিৎসার জন্য একবার যুক্তরাষ্ট্রেও গিয়েছিলেন তিনি। তবে গত কয়েকদিন ধরে তার শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে যায়। ওই সময় থেকেই নিবিড় পরিচর্যায় ছিলেন তিনি। ৮৬ বছর বয়সে আজ তার মৃত্যু হয়েছে।

সদ্যই প্রয়াত নাওয়াফ অসুস্থ থাকায়— কুয়েতের রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছিলেন ক্রাউন প্রিন্স মিশাল। নাওয়াফের বদলে কয়েকদিন আগে মিশাল যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এছাড়া কুয়েতের সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণাও এসেছিল তার মুখ থেকে।

২০২০ সালে মিশালকে যখন ক্রাউন প্রিন্স বানানো হয়; তখন এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। মূলত তার বয়সের কারণেই এমনটি হয়েছিল। তবে বিশ্লেষকরা তখন জানান, কুয়েতের শাসকরা এখনই পরবর্তী প্রজন্মের হাতে শাসনভার দিতে চান না। এ কারণে তরুণদের বদলে বুড়ো মিশালকে ক্রাউন প্রিন্স বানানো হয়েছিল।

শেখ নওয়াফ ৫৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে কুয়েতের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৬২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ২৫ বছর বয়সে তিনি হাওয়ালির গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯ মার্চ ১৯৭৮ পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব¡ গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৮ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। উপসাগরীয় যুদ্ধে কুয়েতের স্বাধীনতার পর শেখ নওয়াফ ১৯৯১ সালের ২০ এপ্রিল শ্রম ও সামাজিকবিষয়কমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯৯২ সালের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৪ সালের ১৬ অক্টোবর শেখ নওয়াফ কুয়েত ন্যাশনাল গার্ডের উপপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০৩ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। একই বছর শেখ নওয়াফ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণ করেন যতক্ষণ না ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর আমিরি ডিক্রি জারি করা হয়। তখন তাকে কুয়েতের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। উপসাগরীয় ও আরব দেশগুলোর আরব রাষ্ট্রসমূহের সহযোগিতা কাউন্সিলের মধ্যে জাতীয় ঐক্যকে সমর্থন কারী কর্মসূচিকে সমর্থন করতে শেখ নওয়াফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কুয়েতের নতুন আমির শেখ মেশাল আল-আহমদ

প্রকাশের সময় : ০৮:২০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মেশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহকে দেশটির নতুন আমির হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) পূর্বসূরি শেখ নাওয়াফের মৃত্যুর পর তেল সমৃদ্ধ দেশটির নতুন আমির হয়েছেন তিনি।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। এরপর দেশটি নতুন আমিরের নাম ঘোষণা করেছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা আল খানদারি এক বিবৃতিতে জানান, শেখ মিশাল আল আহমদ আল জাবেরকে আমিরের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে তার বয়স ৮৩ বছর। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

এর আগে শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল আহমদ আল জাবেরের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। রয়েল কোর্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা গভীর দুঃখ ও শোক প্রকাশ করছি। কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল আহমাদ আল সাবাহ মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

২০২০ সালে তৎকালীন আমির সাবাহ আল-আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহর মৃত্যুর পর ৮০ বছর বয়সে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন মিশাল। এর মাধ্যমে বিশ্বের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বয়স্ক ক্রাউন প্রিন্স’ হওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।

নাওয়াফ ২০২০ সালে আমির হয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময় থেকেই নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০২১ সালে চিকিৎসার জন্য একবার যুক্তরাষ্ট্রেও গিয়েছিলেন তিনি। তবে গত কয়েকদিন ধরে তার শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে যায়। ওই সময় থেকেই নিবিড় পরিচর্যায় ছিলেন তিনি। ৮৬ বছর বয়সে আজ তার মৃত্যু হয়েছে।

সদ্যই প্রয়াত নাওয়াফ অসুস্থ থাকায়— কুয়েতের রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছিলেন ক্রাউন প্রিন্স মিশাল। নাওয়াফের বদলে কয়েকদিন আগে মিশাল যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এছাড়া কুয়েতের সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণাও এসেছিল তার মুখ থেকে।

২০২০ সালে মিশালকে যখন ক্রাউন প্রিন্স বানানো হয়; তখন এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। মূলত তার বয়সের কারণেই এমনটি হয়েছিল। তবে বিশ্লেষকরা তখন জানান, কুয়েতের শাসকরা এখনই পরবর্তী প্রজন্মের হাতে শাসনভার দিতে চান না। এ কারণে তরুণদের বদলে বুড়ো মিশালকে ক্রাউন প্রিন্স বানানো হয়েছিল।

শেখ নওয়াফ ৫৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে কুয়েতের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৬২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ২৫ বছর বয়সে তিনি হাওয়ালির গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯ মার্চ ১৯৭৮ পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব¡ গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৮ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। উপসাগরীয় যুদ্ধে কুয়েতের স্বাধীনতার পর শেখ নওয়াফ ১৯৯১ সালের ২০ এপ্রিল শ্রম ও সামাজিকবিষয়কমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯৯২ সালের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৪ সালের ১৬ অক্টোবর শেখ নওয়াফ কুয়েত ন্যাশনাল গার্ডের উপপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০৩ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। একই বছর শেখ নওয়াফ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণ করেন যতক্ষণ না ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর আমিরি ডিক্রি জারি করা হয়। তখন তাকে কুয়েতের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। উপসাগরীয় ও আরব দেশগুলোর আরব রাষ্ট্রসমূহের সহযোগিতা কাউন্সিলের মধ্যে জাতীয় ঐক্যকে সমর্থন কারী কর্মসূচিকে সমর্থন করতে শেখ নওয়াফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।