Dhaka বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কার্যালয়ের সামনে বাঘ দেখে হতভম্ব বনকর্মী

বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : 

সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী অভয়ারণ্য বন কার্যালয়ের সামনে আবারও একটি বাঘের দেখা পেয়েছেন বনরক্ষীরা। বাঘটি বনরক্ষীদের ব্যারাকের খুব কাছে চলে আসে।

মোস্তাক আহমেদ নামের বন বিভাগের এক কর্মী মোবাইল ফোনে বাঘের ভিডিও ধারণ করেন। সেই ভিডিও বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন তিনি। এক মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বাঘটি ব্যারাকের সামনে ঘোরাফেরা করছে। পরে লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে বনের দিকে চলে যায়।

মোস্তাক আহমেদ বলেন, ডিউটি শেষে রাতে ঘুমিয়ে পড়ি। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি কেন্দ্রের বাইরে একটি বাঘ দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ করে বাঘটি দেখে হতভম্ভ হয়ে যাই। পরে ভয়ে ভয়ে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করা শুরু করি। একটু পরে বাঘটি বনের দিকে চলে যায়।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মাহাবুব হোসেন বলেন, এর আগেও এলাকায় বাঘের আনাগোনা দেখা গিয়েছে। অভয়ারণ্য এলাকায় সব ধরনের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাঘগুলো অবাধে বিচরণ করতে পারছে। এ কারণেই সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বাঘের দেখা পাচ্ছেন। তবে আমরা তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলেছি।

বনে বাঘ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেন বন বিভাগের এই কর্মকর্তা।

পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সগকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মাহাবুব হাসান বলেন, কচিখালী ফরেস্ট অফিসের বনরক্ষীরা বাঘ দেখতে পেয়েছেন বলে শুনেছি। এক বনরক্ষীর মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও দেখেছি। ওই অফিসের সকল বনরক্ষীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে বাঘ দেখাটা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল মাত্র ১১৪টি। তাতে সচরাচর বাঘের দেখা পাওয়াটা ছিল দুরূহ। ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে প্রায়ই বাঘের দেখা পাওয়ার খবর শোনা যাচ্ছে। তাতে ধারণা করা হচ্ছে সুন্দরবনে আগের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বন বিভাগের কঠোর নজরদারিতে চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য অনেকটা কমেছে। তাই স্বাভাবিক মৃত্যু ছাড়া বাঘ শিকার হচ্ছে না বললেই চলে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি অফিসের পুকুর পাড়ে দেখা মেলে জোড়া বাঘের। প্রায় ২২ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে বাঘ দুটি আবার বনে ফিরে যায়। এ ছাড়া গত বছরের ৩১ অক্টোবর পশ্চিম বন বিভাগের সজনেখালী রেঞ্জ অফিসের চোরাগাজীখালীর বনে চারটি বাঘ দেখতে পান পর্যটকরা। একই বছরের ১২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের ছিটা কটকা এলাকায় পর্যটকরা চারটি বাঘের দেখা পান এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি কটকা এলাকায় আরও তিনটি বাঘ দেখতে পান বনরক্ষীরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইউনূসের ‘স্বজনপ্রীতির’ সবচেয়ে বড় উদাহরণ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা : হাসনাত আব্দুল্লাহ

কার্যালয়ের সামনে বাঘ দেখে হতভম্ব বনকর্মী

প্রকাশের সময় : ০৫:০৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অগাস্ট ২০২৩

বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : 

সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী অভয়ারণ্য বন কার্যালয়ের সামনে আবারও একটি বাঘের দেখা পেয়েছেন বনরক্ষীরা। বাঘটি বনরক্ষীদের ব্যারাকের খুব কাছে চলে আসে।

মোস্তাক আহমেদ নামের বন বিভাগের এক কর্মী মোবাইল ফোনে বাঘের ভিডিও ধারণ করেন। সেই ভিডিও বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন তিনি। এক মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বাঘটি ব্যারাকের সামনে ঘোরাফেরা করছে। পরে লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে বনের দিকে চলে যায়।

মোস্তাক আহমেদ বলেন, ডিউটি শেষে রাতে ঘুমিয়ে পড়ি। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি কেন্দ্রের বাইরে একটি বাঘ দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ করে বাঘটি দেখে হতভম্ভ হয়ে যাই। পরে ভয়ে ভয়ে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করা শুরু করি। একটু পরে বাঘটি বনের দিকে চলে যায়।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মাহাবুব হোসেন বলেন, এর আগেও এলাকায় বাঘের আনাগোনা দেখা গিয়েছে। অভয়ারণ্য এলাকায় সব ধরনের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাঘগুলো অবাধে বিচরণ করতে পারছে। এ কারণেই সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বাঘের দেখা পাচ্ছেন। তবে আমরা তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলেছি।

বনে বাঘ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেন বন বিভাগের এই কর্মকর্তা।

পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সগকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মাহাবুব হাসান বলেন, কচিখালী ফরেস্ট অফিসের বনরক্ষীরা বাঘ দেখতে পেয়েছেন বলে শুনেছি। এক বনরক্ষীর মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও দেখেছি। ওই অফিসের সকল বনরক্ষীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে বাঘ দেখাটা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল মাত্র ১১৪টি। তাতে সচরাচর বাঘের দেখা পাওয়াটা ছিল দুরূহ। ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে প্রায়ই বাঘের দেখা পাওয়ার খবর শোনা যাচ্ছে। তাতে ধারণা করা হচ্ছে সুন্দরবনে আগের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বন বিভাগের কঠোর নজরদারিতে চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য অনেকটা কমেছে। তাই স্বাভাবিক মৃত্যু ছাড়া বাঘ শিকার হচ্ছে না বললেই চলে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি অফিসের পুকুর পাড়ে দেখা মেলে জোড়া বাঘের। প্রায় ২২ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে বাঘ দুটি আবার বনে ফিরে যায়। এ ছাড়া গত বছরের ৩১ অক্টোবর পশ্চিম বন বিভাগের সজনেখালী রেঞ্জ অফিসের চোরাগাজীখালীর বনে চারটি বাঘ দেখতে পান পর্যটকরা। একই বছরের ১২ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের ছিটা কটকা এলাকায় পর্যটকরা চারটি বাঘের দেখা পান এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি কটকা এলাকায় আরও তিনটি বাঘ দেখতে পান বনরক্ষীরা।