নিজস্ব প্রতিবেদক :
এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দাম কিছুটা কমেছে। ধরনভেদে প্রতি কেজি চালে ১-৪ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। এর পাশাপাশি সামান্য দাম কমেছে পেঁয়াজ ও আলুর। তবে মুরগির দামে কিছুটা বাড়তি প্রবণতা দেখা গেছে।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীতে প্রতি কেজি মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, মাঝারি চাল ৫৮-৬৪ টাকা ও সরু চাল ৭২-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব চালের দাম এক সপ্তাহ আগে ১-৪ টাকা পর্যন্ত বেশি ছিল। যেমন মাঝারি মানের ব্রি-২৯ চাল বিক্রি হয়েছে ৫৮-৬২ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এ চালের দাম ছিল ৬২-৬৫ টাকা। বিভিন্ন কোম্পানির মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ১-২ টাকা কমেছে। আবার মোটা বলে পরিচিত স্বর্ণা চালের দাম ৩ টাকা কমে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যদিও ঢাকার সব খুচরা বাজারে কম দামের চাল বিক্রি শুরু হয়নি।
রাজধানীর এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় শীতকালীন সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। এসব বাজারে সিম ১৫ থেকে ৩০ টাকা, বড় আকারের ফুলকপি ১০ থেকে ২০ টাকা পিস, বাঁধা কপি বড় সাইজের ১০ থেকে ২০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পাকা টমেটো কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মুলা কেজি ২০ টাকা, মটরশুঁটি ৭০ টাকা, খিরাই ৩০ টাকা এবং শসা ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গ্রীষ্মকালীন সবজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর মুখী ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা এবং কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা ১০০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, চাল কুমড়া ৬০ টাকা পিস এবং মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, কলমি শাক তিন আঁটি ২০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা এবং ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
নতুন আলু কেজিতে ৫ টাকা কমে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বগুড়ার লাল আলু ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা কমে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পুরাতন পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারগুলোতে আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, মিনি কেট চাল ৭৮ থেকে ৮৬ টাকা এবং নাজির সের ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের দামেই সোনালি কক মুরগি ৩৩০ টাকায় এবং সোনালি হাইব্রিড ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগী ৩০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা, ব্রয়লার মুরগী ১৯০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫২০ টাকা করে দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
অবশ্য স্থিতিশীল দেখা গেছে রাজধানীর মাছের বাজার। আটশ’ গ্রাম ওজনের এক কেজি রুই মাছের দাম ৩০০ থেকে বাজার ভেদে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। দেড় কেজি থেকে দুই কেজি বা তার বেশি ওজনের রুই ও কাতল বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে। ছোট পাঙাস ও সিলভার কার্প ১৪০ থেকে বাজার ভেদে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি থেকে বেশি ওজনের এসব মাছ কিছুটা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের টেংরা মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে বাজারভেদে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, বেলে ধরনভেদে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টাকির কেজি ৩৫০ টাকা, বড় শোল ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, বড় চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বাইম ৮০০ টাকা, বড় বাঘাইড় ১ হাজার ১০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ টাকা এবং দেশি প্রতি কেজি কই ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় আইড়ের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা, চিতল (এক কেজির কম) ৬০০ টাকা রাখা হচ্ছে বাজারে। এক কেজি থেকে বেশি ওজনের ইলিশের দাম ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে বাজারভেদে ২ হাজার ৬০০ টাকা, ৮০০ গ্রামের ইলিশ দুই হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশের দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে।
বোতলের সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, পাম তেল ১৫৫ থেকে ১৫৮ টাকায়, পাম তেল সুপার ১৫৯ থেকে ১৬২ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৪০ টাকা ও বোতলজাত ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
অন্যান্য মুদিপণ্যের মধ্যে প্যাকেটজাত চিনি প্রতিকেজি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা, ছোলা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই কেজি প্যাকেট আটা ১২৫ টাকা, ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।