নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিমানে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল জেট ফুয়েলের দাম কমানো হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রতি লিটারে ১১১ টাকা থেকে কমিয়ে ৯৩ টাকা ৫৭ পয়সা এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে প্রতি লিটার ০ দশমিক ৭৫০০ ডলার থেকে কমিয়ে ০ দশমিক ৬০৬৬ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) নতুন এ দাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মজুতকরণ ও বিপণন চার্জ প্রতি লিটার ৪.০৪ টাকা এবং জেট এ-১ (এভিয়েশন ফুয়েল) বিপণনে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের বিপণন চার্জ প্রতি লিটার ০.৮৮ টাকা পুনর্র্নিধারণ করা হয়েছে। নতুন এই দর আজ রাত ১২টা থেকে কার্যকর হবে। কমিশন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য শুল্ক ও মূসকসহ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য শুল্ক ও মূসকমুক্ত মূল্য নির্ধারণ করেছে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩ অনুযায়ী দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ডিউটি ফ্রি (শুল্ক ও মূসকমুক্ত) এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য শুল্ক ও মূসকসহ জেট এ-১ (এভিয়েশন ফুয়েল) এর মূল্যহার নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গত ২০ জানুয়ারি এবং বিপিসির প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (পিওসিএল) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জেট এ-১ বিপণনে তাদের বিপণন চার্জ পুনর্র্নিধারণের প্রস্তাব কমিশনে দাখিল করে।
এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে গত ২৩ মার্চ বিইআরসি কার্যালয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরে গত ৬ এপ্রিল পর্যন্ত গণশুনানি পরবর্তী লিখিত মতামত প্রদানের সুযোগ দেওয়া হয়। সবশেষ পর্যালোচনার ভিত্তিতে বিইআরসি এই দাম নির্ধারণ করে।
বিপিসির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেট ফুয়েল বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৫ টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৩ টনে।
এর আগে ২০০৩ সালে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও আধা বিচারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিইআরসি গঠিত হয়। আইনে সব ধরনের জ্বালানির দাম নির্ধারণের এখতিয়ার দেওয়া হলেও প্রবিধানমালা ঝুলে থাকায় শুধু গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করে আসছিল বিইআরসি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২৩ সালে আইন সংশোধন করে নির্বাহী আদেশে দাম সমন্বয় (কম/বেশি) করার বিধান যুক্ত করে। তারপর থেকে কার্যত বেকার হয়ে পড়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশের ধারাটি বাতিল করে দিলে গতিশীল হতে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে আগের মতোই এখনো নির্বাহী আদেশে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে।
যে প্রবিধানমালার দোহাই দিয়ে জ্বালানি তেল এত দিন নির্বাহী আদেশে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে, সেগুলো এখনো ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে ঝুলে থাকা প্রবিধানমালা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দিকে নাড়াচাড়া শুরু হলেও এখন আবার চাপা পড়ে গেছে।