Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারের সৈকতে হুঁশিয়ারি সংকেত মানছেন না পর্যটকরা

কক্সবাজার সৈকতের শুক্রবারের ছবি।

বঙ্গপোসাগরে গভীর নিম্নচাপ। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। বড় বড় ঢেউ আচড়ে পড়ছে তীরে। সেই সাথে বৃষ্টি ও জলোচ্ছাসতো আছেই। এমতবস্থায় চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। অথচ সাপ্তাহিক ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা কোনো হুঁশিয়ারিই মানছেন না। ঝুঁকি নিয়ে তারা সমুদ্রের পাড়ে সৈকতে অবস্থান করছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সৈকতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আগমনের কথা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে হোটেলে বন্দি অনেক পর্যটক। আবার অনেকেই বৃষ্টির উপেক্ষা করে নেমে পড়ছেন সৈকতের পানি। তারা ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত মানছেন না।

ইমরান আহমেদ নামের এক পর্যটক বলেন, আবহাওয়া খারাপ এটা জানতাম। কিন্তু কক্সবাজারে এসে এভাবে পরিস্থিতি খারাপ হবে এটা জানতাম না। বৃহস্পতিবার থেকে হোটেলেই বসে দিন কাটিয়েছি। কিন্তু অবশেষে শুক্রবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে সৈকতে চলে এলাম।

রিয়া নামে এক পর্যটক বলেন, কিছু ভাল লাগছিল না। তাই বৃষ্টি ভিজে সৈকতের বালিয়াড়ি হাঁটছি আর সৈকতের বিশাল বিশাল ঢেউ উপভোগ করছি।

রিয়াদ, আমিন ও সাদ্দাম বলেন, সৈকতে গোসল করতে নেমে পড়েছিলাম। কিন্তু লাইফ গার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ গোসল করতে দিলেন না। তারা নিরাপত্তার কথা বলে সৈকত থেকে উঠিয়ে দিলেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আর আনন্দ করা গেল না।

পর্যটক আগমনের ওপর নির্ভর করে সংসার চলে সৈকতের ফটোগ্রাফার ও হকারদের। কিন্তু দুদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বেকার রয়েছেন তারা।



শুক্কুর নামের এক ফটোগ্রাফার বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় সব শেষ করে দিল। বৃষ্টির কারণে পর্যটকরা সৈকতে কম নামছে। ফলে পর্যটকদের ছবি তুলতে না পেরে ছাতা মার্কেটে বসে আছি।

শামুক-ঝিনুক ব্যবসায়ী সিরাজ আহমদ বলেন, বেচা-বিক্রি বন্ধ বৈরী আবহাওয়ার কারণে। এখন দোকান খুললেও পর্যটকের দেখা নেই। গত দুইদিনই বেচা-বিক্রি শূন্য।

আর ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় সৈকতে পর্যটকদের নামতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে লাইফ গার্ড কর্মী।

সি-সেইভ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ জহির জানান, গভীর নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজারকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। তাই সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে।

আরও পড়ুন : ৪০০ পর্যটক আটকা পড়েছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপে

আর পর্যটকদের সৈকতে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। মাইকিংও করছি। কিন্তু অনেক পর্যটক নিষেধ অমান্য করে সৈকতে নেমে পড়ছে। তারপরও চেষ্টা করছি পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে যেতে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, গভীর নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত আগামী দুই/একদিন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে গিয়ে আটকা পড়েছেন সাড়ে ৪ শতাধিক পর্যটক।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

কক্সবাজারের সৈকতে হুঁশিয়ারি সংকেত মানছেন না পর্যটকরা

প্রকাশের সময় : ০৮:১৯:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০

বঙ্গপোসাগরে গভীর নিম্নচাপ। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। বড় বড় ঢেউ আচড়ে পড়ছে তীরে। সেই সাথে বৃষ্টি ও জলোচ্ছাসতো আছেই। এমতবস্থায় চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। অথচ সাপ্তাহিক ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা কোনো হুঁশিয়ারিই মানছেন না। ঝুঁকি নিয়ে তারা সমুদ্রের পাড়ে সৈকতে অবস্থান করছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সৈকতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আগমনের কথা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে হোটেলে বন্দি অনেক পর্যটক। আবার অনেকেই বৃষ্টির উপেক্ষা করে নেমে পড়ছেন সৈকতের পানি। তারা ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত মানছেন না।

ইমরান আহমেদ নামের এক পর্যটক বলেন, আবহাওয়া খারাপ এটা জানতাম। কিন্তু কক্সবাজারে এসে এভাবে পরিস্থিতি খারাপ হবে এটা জানতাম না। বৃহস্পতিবার থেকে হোটেলেই বসে দিন কাটিয়েছি। কিন্তু অবশেষে শুক্রবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে সৈকতে চলে এলাম।

রিয়া নামে এক পর্যটক বলেন, কিছু ভাল লাগছিল না। তাই বৃষ্টি ভিজে সৈকতের বালিয়াড়ি হাঁটছি আর সৈকতের বিশাল বিশাল ঢেউ উপভোগ করছি।

রিয়াদ, আমিন ও সাদ্দাম বলেন, সৈকতে গোসল করতে নেমে পড়েছিলাম। কিন্তু লাইফ গার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ গোসল করতে দিলেন না। তারা নিরাপত্তার কথা বলে সৈকত থেকে উঠিয়ে দিলেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আর আনন্দ করা গেল না।

পর্যটক আগমনের ওপর নির্ভর করে সংসার চলে সৈকতের ফটোগ্রাফার ও হকারদের। কিন্তু দুদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বেকার রয়েছেন তারা।



শুক্কুর নামের এক ফটোগ্রাফার বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় সব শেষ করে দিল। বৃষ্টির কারণে পর্যটকরা সৈকতে কম নামছে। ফলে পর্যটকদের ছবি তুলতে না পেরে ছাতা মার্কেটে বসে আছি।

শামুক-ঝিনুক ব্যবসায়ী সিরাজ আহমদ বলেন, বেচা-বিক্রি বন্ধ বৈরী আবহাওয়ার কারণে। এখন দোকান খুললেও পর্যটকের দেখা নেই। গত দুইদিনই বেচা-বিক্রি শূন্য।

আর ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় সৈকতে পর্যটকদের নামতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে লাইফ গার্ড কর্মী।

সি-সেইভ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ জহির জানান, গভীর নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজারকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। তাই সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে।

আরও পড়ুন : ৪০০ পর্যটক আটকা পড়েছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপে

আর পর্যটকদের সৈকতে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। মাইকিংও করছি। কিন্তু অনেক পর্যটক নিষেধ অমান্য করে সৈকতে নেমে পড়ছে। তারপরও চেষ্টা করছি পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে যেতে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, গভীর নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত আগামী দুই/একদিন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে গিয়ে আটকা পড়েছেন সাড়ে ৪ শতাধিক পর্যটক।