Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৪৪:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২১৬ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

আগে ব্যাটিং করে ১২৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো পিচেই এটাকে নিরাপদ স্কোর বলা যাবে না। কিন্তু এই স্কোর নিয়েই বাজিমাত করলেন বাংলাদেশের বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে এই পুঁজি নিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আজ ১০২ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। যাতে ২৭ রানে জয় নিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। প্রায় ৬ বছর পর ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচটা জিতে ১-০তে এগিয়ে ছিলেন টাইগাররা। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জয়ে ২-০তে সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো সফরকারীদের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তাড়ার শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। প্রথম দুই ওভারে তারা তোলে ১৯ রান। তবে পরের ওভারেই জোড়া উইকেটে তাদেরকে নাড়িয়ে দেন তাসকিন আহমেদ। তার দুর্দান্ত প্রথম ডেলিভারির জবাব পাননি ব্র্যান্ডন কিং। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্যতে বিদায় নেন আন্দ্রে ফ্লেচার।

প্রথম ওভারে জনসন চার্লসের ব্যাটে ছক্কা ও চার হজম করা শেখ মেহেদি শোধ তোলেন তাকে ১৪ রানেই থামিয়ে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এই অফ স্পিনার বিদায় করেন বিপজ্জনক নিকোলাস পুরানকেও। স্লিপে ফিল্ডার রাখার জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে অধিনায়ক লিটনকেও।

রভম্যান পাওয়েল আউট হতে পারতেন পরের ওভারেই। কিন্তু তানজিম হাসানের বলে স্লিপে সহজ ক্যাচ ছাড়েন সৌম্য সরকার। বল ছোবল দেয় তার আঙুলে। ফিজিওর সঙ্গে মাঠ ছাড়েন তিনি ব্যাথায় কাতরাতে কাতরাতে।
তবে এটির খেসারত দিতে হয়নি দলকে। পরের ওভারেই হাসান মাহমুদ বিদায় করেন পাওয়েলকে। পয়েন্টে সামনে ঝাঁপিয়ে চমৎকার ক্যাচ নেন মিরাজ। আগের ম্যাচে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক এবার শূন্যতে জীবন পেয়ে ফেরেন ৬ রানে। পরের ওভারে তানজিমের শর্ট বলে যখন আউট হলেন শেফার্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন ধুঁকছে ৪২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে।

দলের পঞ্চাশ হতেই লেগে যায় দ্বাদশ ওভার। রোস্টন চেইস ও আকিল হোসেন চেষ্টা করেন দলকে লড়াইয়ে রাখতে। বড় শট খেলার সুযোগ অবশ্য তারা পাচ্ছিলেন না। পাঁচ ওভারে যখন প্রয়োজন ৬৪ রান, গা ঝাড়া দেন তখন দুজন। হাসান মাহমুদের টানা দুই বলে ছক্কা মারেন চেইস, রিশাদকে মাথার ওপর দিয়ে উড়িয়ে দিন আকিল।

তবে ওই ওভারেই টানা দুই বলে চেইস (৩৪ বলে ৩২) ও গুডাকেশ মোটিকে ফিরিয়ে উত্তেজনা শেষ করে দেন রিশাদ। আকিলের ৩১ রানে কোনোরকমে একশ পার হতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাকে ফিরিয়েই ম্যাচ শেষ করে দেন তাসকিন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বনিম্ন সংগ্রহ এটিই।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে আরও একবার ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে বাংলাদেশ। আর্নেস ভ্যালি স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে একের পর এক ব্যাটারদের আসা-যাওয়া। ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছিল উইন্ডিজ বোলিং লাইনআপ। দলীয় রান ৫০ পেরুবার আগেই নেই দলের ৪ উইকেট। আরও একবার লাল-সবুজের ত্রাতা হয়ে আসেন লোয়ার মিডল অর্ডারের শামীম পাটোয়ারী। তার ২ চার ও ২ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটাই শেষ অব্দি বাংলাদেশের বোলারদের খানিক লড়াই করার পুঁজি এনে দেয়।

ম্যাচের তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আকিল হোসেনের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ৩ রান করে ফেরেন লিটন দাস। চতুর্থ ওভারে আরেক স্পিনার রোস্টন চেজ আক্রমণে এসেই পেয়ে যান তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট। সাধারণ সুইং বুঝতে পারেননি তানজিদ। হয়েছেন বোল্ড। পরের ওভারে এলো এক চার এবং এক ছক্কা। মেহেদি হাসান মিরাজ দিলেন আগ্রাসী হওয়ার ইঙ্গিত।

মিরাজের সঙ্গে ২৮ রানের জুটির পর রানআউট হন সৌম্য সরকার। এই আউট দিয়েই পরপর ৩ ওভারে ৩ উইকেটের পতন দেখেছে বাংলাদেশ। পরের ওভারে আলজারি জোসেফকে পুল করতে গিয়ে আউট হন মিরাজ। তার পরের ওভারে গুদাকেশ মোতির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন রিশাদ হোসেন। এরপরেই আসে বৃষ্টি। তার আগে ১১.৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ হয় ৬২ রান।

শেষের দিকে বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন শামীম। ২ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ১৭ বলে ৩৫ রানের দারুণ এক ক্যামিওতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ পেরোয়। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন শামীম। ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১২৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ২৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে উইন্ডিজের সেরা বোলার মোটি।

২০১৮ সালেও দেশের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সিরিজ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেবার শেষ দুটি ম্যাচ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ক্যারিবিয়ানের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় তাই এটিই প্রথম।

শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় ক্যারিবিয়ানদের হোয়াইটওয়াশ করার অভিযানে নামবেন লিটনরা।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৪:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

আগে ব্যাটিং করে ১২৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো পিচেই এটাকে নিরাপদ স্কোর বলা যাবে না। কিন্তু এই স্কোর নিয়েই বাজিমাত করলেন বাংলাদেশের বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে এই পুঁজি নিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আজ ১০২ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। যাতে ২৭ রানে জয় নিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। প্রায় ৬ বছর পর ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচটা জিতে ১-০তে এগিয়ে ছিলেন টাইগাররা। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জয়ে ২-০তে সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো সফরকারীদের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তাড়ার শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। প্রথম দুই ওভারে তারা তোলে ১৯ রান। তবে পরের ওভারেই জোড়া উইকেটে তাদেরকে নাড়িয়ে দেন তাসকিন আহমেদ। তার দুর্দান্ত প্রথম ডেলিভারির জবাব পাননি ব্র্যান্ডন কিং। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্যতে বিদায় নেন আন্দ্রে ফ্লেচার।

প্রথম ওভারে জনসন চার্লসের ব্যাটে ছক্কা ও চার হজম করা শেখ মেহেদি শোধ তোলেন তাকে ১৪ রানেই থামিয়ে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এই অফ স্পিনার বিদায় করেন বিপজ্জনক নিকোলাস পুরানকেও। স্লিপে ফিল্ডার রাখার জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে অধিনায়ক লিটনকেও।

রভম্যান পাওয়েল আউট হতে পারতেন পরের ওভারেই। কিন্তু তানজিম হাসানের বলে স্লিপে সহজ ক্যাচ ছাড়েন সৌম্য সরকার। বল ছোবল দেয় তার আঙুলে। ফিজিওর সঙ্গে মাঠ ছাড়েন তিনি ব্যাথায় কাতরাতে কাতরাতে।
তবে এটির খেসারত দিতে হয়নি দলকে। পরের ওভারেই হাসান মাহমুদ বিদায় করেন পাওয়েলকে। পয়েন্টে সামনে ঝাঁপিয়ে চমৎকার ক্যাচ নেন মিরাজ। আগের ম্যাচে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক এবার শূন্যতে জীবন পেয়ে ফেরেন ৬ রানে। পরের ওভারে তানজিমের শর্ট বলে যখন আউট হলেন শেফার্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন ধুঁকছে ৪২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে।

দলের পঞ্চাশ হতেই লেগে যায় দ্বাদশ ওভার। রোস্টন চেইস ও আকিল হোসেন চেষ্টা করেন দলকে লড়াইয়ে রাখতে। বড় শট খেলার সুযোগ অবশ্য তারা পাচ্ছিলেন না। পাঁচ ওভারে যখন প্রয়োজন ৬৪ রান, গা ঝাড়া দেন তখন দুজন। হাসান মাহমুদের টানা দুই বলে ছক্কা মারেন চেইস, রিশাদকে মাথার ওপর দিয়ে উড়িয়ে দিন আকিল।

তবে ওই ওভারেই টানা দুই বলে চেইস (৩৪ বলে ৩২) ও গুডাকেশ মোটিকে ফিরিয়ে উত্তেজনা শেষ করে দেন রিশাদ। আকিলের ৩১ রানে কোনোরকমে একশ পার হতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাকে ফিরিয়েই ম্যাচ শেষ করে দেন তাসকিন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বনিম্ন সংগ্রহ এটিই।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে আরও একবার ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে বাংলাদেশ। আর্নেস ভ্যালি স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে একের পর এক ব্যাটারদের আসা-যাওয়া। ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছিল উইন্ডিজ বোলিং লাইনআপ। দলীয় রান ৫০ পেরুবার আগেই নেই দলের ৪ উইকেট। আরও একবার লাল-সবুজের ত্রাতা হয়ে আসেন লোয়ার মিডল অর্ডারের শামীম পাটোয়ারী। তার ২ চার ও ২ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটাই শেষ অব্দি বাংলাদেশের বোলারদের খানিক লড়াই করার পুঁজি এনে দেয়।

ম্যাচের তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আকিল হোসেনের আঁটসাঁট বোলিংয়ে ৩ রান করে ফেরেন লিটন দাস। চতুর্থ ওভারে আরেক স্পিনার রোস্টন চেজ আক্রমণে এসেই পেয়ে যান তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট। সাধারণ সুইং বুঝতে পারেননি তানজিদ। হয়েছেন বোল্ড। পরের ওভারে এলো এক চার এবং এক ছক্কা। মেহেদি হাসান মিরাজ দিলেন আগ্রাসী হওয়ার ইঙ্গিত।

মিরাজের সঙ্গে ২৮ রানের জুটির পর রানআউট হন সৌম্য সরকার। এই আউট দিয়েই পরপর ৩ ওভারে ৩ উইকেটের পতন দেখেছে বাংলাদেশ। পরের ওভারে আলজারি জোসেফকে পুল করতে গিয়ে আউট হন মিরাজ। তার পরের ওভারে গুদাকেশ মোতির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন রিশাদ হোসেন। এরপরেই আসে বৃষ্টি। তার আগে ১১.৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ হয় ৬২ রান।

শেষের দিকে বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন শামীম। ২ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ১৭ বলে ৩৫ রানের দারুণ এক ক্যামিওতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ পেরোয়। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন শামীম। ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১২৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ২৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে উইন্ডিজের সেরা বোলার মোটি।

২০১৮ সালেও দেশের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সিরিজ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেবার শেষ দুটি ম্যাচ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ক্যারিবিয়ানের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় তাই এটিই প্রথম।

শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় ক্যারিবিয়ানদের হোয়াইটওয়াশ করার অভিযানে নামবেন লিটনরা।