Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঐকমত্য না হওয়া বিষয়গুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে : আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজনৈতিক দলগুলোর একমত না হওয়া বিষয়গুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

রোববার (২৫ মে) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সুশীল সমাজের আলোচনায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা।

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ধাপের আলোচনায় অনেক বিষয়েই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে একমত না হওয়া বিষয়গুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে। আমাদের লক্ষ্য জাতীয় সনদ প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ প্রায় ৬ মাস হয়ে গেল। এই সময়ে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় কিছু বিষয়ে একমত হয়েছি, আবার কিছু বিষয়ে একমত হইনি। সংস্কারের অসীম সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে। মানুষের ত্যাগের প্রতি দায় ও দায়িত্বের জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, ঐকমত্য গঠনে শুধু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক যথেষ্ট নয়। এর জন্য নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ ব্যতীত সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রতির সুযোগ নেই।

ড. আলী রীয়াজ বলেন, প্রথম ধাপের আলোচনায় অনেক বিষয়েই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এছাড়া যেসব বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি করা যাবে না, সেসব বিষয়ও জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, মানুষের ত্যাগের প্রতি দায় ও দায়িত্বের জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কমিশনের চূড়ান্ত লক্ষ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা। একইসঙ্গে এই চ্যালেঞ্জও অত্যন্ত কঠোর। এই সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ ব্যতীত সংস্কার কার্যক্রম অগ্রতির সুযোগ নেই।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, সেখানে দলগতভাবে কিছু বিষয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে যখন ঐকমত্য হয়েছে, কিছু মৌলিক বিষয়ে এখনো হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটা হচ্ছে বাস্তব।

তিনি বলেন, পাশাপাশি আমরা নাগরিক সমাজের চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আজকে আমরা এখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ নিতে চাইছি।

আলী রীয়াজ বলেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়নি সেগুলো আমরা জানাব স্বচ্ছতার জন্য এবং জনগণের পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সহযোগিতা করার জন্য। আমরা মনে করি সেটা খুবই জরুরি। সেই বিবেচনা থেকেই আমরা এখন পর্যন্ত অগ্রসর হচ্ছি এবং সে ক্ষেত্রে আপনাদের পরামর্শ আমাদের সাহায্য করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা চেষ্টা করব জাতীয় সনদ তৈরির পাশাপাশি যে প্রতিবেদন আমরা তৈরি করতে চাই সেখানে যেন এই মতামতগুলো থাকে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার গুরুত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি জাতীয় ঐকমত্য গঠনে মাত্র রাজনৈতিক দলগুলোতে আলোচনায় যথেষ্ট নয়, নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে গঠিত হওয়ার পর থেকে আমাদের নির্ধারিত সময় দেওয়া হয়েছে ছয় মাস। সেই ছয় মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমরা উপস্থিত। এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা তার সংক্ষেপ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা তাদের মতামত দিয়েছেন। তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রায় মাস আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অমিত সম্ভাবনা তৈরি করেছি কিন্তু যে কোনো সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো অত্যন্ত কঠিন। আমাদের প্রত্যাশা যে সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের যে সুযোগ, সেই সুযোগকে আমরা গ্রহণ করতে পারব। ৫৩ বছরের ধরে যে চেষ্টা সেই চেষ্টার পাশাপাশি গত ১৬ বছর ধরে, যে সংগ্রাম সর্বোপরি জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে রক্তপাত, প্রাণনাশ, মানুষের আত্মদান সেগুলোর কাছে আমাদের দায় আছে। আমাদের দায়িত্ব সেই এবং দায়িত্বের জায়গা থেকেই আমরা আশা করি যে সকলেই তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো যতটা অর্জন করা সম্ভব, সে জন্য সক্রিয় থাকবে সেই আশা থেকেই আমাদের এই আলোচনা।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিচারপতি আবদুল মতিন, ড. গীতিয়ারা নাসরীন, জেনারেল (অব) মুনীরুজ্জামান, ড. ওয়ারেসুল করিম, ড. সামিনা লুৎফা, ড. মির্জা হাসান, আশরাফুন নাহার মিষ্টি, বাসুদেব ধর, সুলতানা রাজিয়া ও ইলিরা দেওয়ান।

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

ঐকমত্য না হওয়া বিষয়গুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে : আলী রীয়াজ

প্রকাশের সময় : ০৩:১১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজনৈতিক দলগুলোর একমত না হওয়া বিষয়গুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

রোববার (২৫ মে) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সুশীল সমাজের আলোচনায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা।

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ধাপের আলোচনায় অনেক বিষয়েই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে একমত না হওয়া বিষয়গুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে। আমাদের লক্ষ্য জাতীয় সনদ প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ প্রায় ৬ মাস হয়ে গেল। এই সময়ে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় কিছু বিষয়ে একমত হয়েছি, আবার কিছু বিষয়ে একমত হইনি। সংস্কারের অসীম সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে। মানুষের ত্যাগের প্রতি দায় ও দায়িত্বের জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, ঐকমত্য গঠনে শুধু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক যথেষ্ট নয়। এর জন্য নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ ব্যতীত সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রতির সুযোগ নেই।

ড. আলী রীয়াজ বলেন, প্রথম ধাপের আলোচনায় অনেক বিষয়েই ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এছাড়া যেসব বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি করা যাবে না, সেসব বিষয়ও জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, মানুষের ত্যাগের প্রতি দায় ও দায়িত্বের জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কমিশনের চূড়ান্ত লক্ষ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা। একইসঙ্গে এই চ্যালেঞ্জও অত্যন্ত কঠোর। এই সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ ব্যতীত সংস্কার কার্যক্রম অগ্রতির সুযোগ নেই।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, সেখানে দলগতভাবে কিছু বিষয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে যখন ঐকমত্য হয়েছে, কিছু মৌলিক বিষয়ে এখনো হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটা হচ্ছে বাস্তব।

তিনি বলেন, পাশাপাশি আমরা নাগরিক সমাজের চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আজকে আমরা এখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং এই আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ নিতে চাইছি।

আলী রীয়াজ বলেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়নি সেগুলো আমরা জানাব স্বচ্ছতার জন্য এবং জনগণের পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সহযোগিতা করার জন্য। আমরা মনে করি সেটা খুবই জরুরি। সেই বিবেচনা থেকেই আমরা এখন পর্যন্ত অগ্রসর হচ্ছি এবং সে ক্ষেত্রে আপনাদের পরামর্শ আমাদের সাহায্য করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা চেষ্টা করব জাতীয় সনদ তৈরির পাশাপাশি যে প্রতিবেদন আমরা তৈরি করতে চাই সেখানে যেন এই মতামতগুলো থাকে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার গুরুত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি জাতীয় ঐকমত্য গঠনে মাত্র রাজনৈতিক দলগুলোতে আলোচনায় যথেষ্ট নয়, নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে গঠিত হওয়ার পর থেকে আমাদের নির্ধারিত সময় দেওয়া হয়েছে ছয় মাস। সেই ছয় মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমরা উপস্থিত। এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা তার সংক্ষেপ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা তাদের মতামত দিয়েছেন। তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রায় মাস আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। অমিত সম্ভাবনা তৈরি করেছি কিন্তু যে কোনো সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলো অত্যন্ত কঠিন। আমাদের প্রত্যাশা যে সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের যে সুযোগ, সেই সুযোগকে আমরা গ্রহণ করতে পারব। ৫৩ বছরের ধরে যে চেষ্টা সেই চেষ্টার পাশাপাশি গত ১৬ বছর ধরে, যে সংগ্রাম সর্বোপরি জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে রক্তপাত, প্রাণনাশ, মানুষের আত্মদান সেগুলোর কাছে আমাদের দায় আছে। আমাদের দায়িত্ব সেই এবং দায়িত্বের জায়গা থেকেই আমরা আশা করি যে সকলেই তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো যতটা অর্জন করা সম্ভব, সে জন্য সক্রিয় থাকবে সেই আশা থেকেই আমাদের এই আলোচনা।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিচারপতি আবদুল মতিন, ড. গীতিয়ারা নাসরীন, জেনারেল (অব) মুনীরুজ্জামান, ড. ওয়ারেসুল করিম, ড. সামিনা লুৎফা, ড. মির্জা হাসান, আশরাফুন নাহার মিষ্টি, বাসুদেব ধর, সুলতানা রাজিয়া ও ইলিরা দেওয়ান।