Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী ৫ মে দেশে ফিরবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হলেও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে। কাতার আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় ফিরবেন বলে জানা গেছে।

শনিবার (৩ মে) সন্ধ্যায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ বিমান তথা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আগামী সোমবার (৫ মে) বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশে আসবেন ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। সময় চূড়ান্ত হবার পর জানাবো। সবার আবেগ আছে, সবাই উচ্ছ্বসিত। বিএনপি চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা দিতে প্রস্তুত সবাই।

বেগম জিয়ার আগমন ও অভ্যর্থনার জন্য বিমানবন্দর থেকে কাকলী পর্যন্ত রাস্তা এড়িয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চার মাস যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রতিদিন তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভালো পরিবেশ ও পরিবারের সঙ্গে থাকাসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা হওয়ায় নেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতির এ উন্নতি হয়। বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থবোধ করছেন। তাই তিনি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

নেতাকর্মী ও দেশের সাধারণ মানুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের নেত্রী দেশে ফিরে আসবেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মধ্যে আবেগ আছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে, তারা অত্যন্ত শৃঙ্খলা সহকারে রাস্তার দুই ধারে কোনো যানজট যেনো সৃষ্টি না করে এই মহান নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আমরা পরামর্শ দিয়েছি এক হাতে জাতীয় পতাকা, আরেক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে আমরা তাকে অভ্যর্থনা জানাবো। জনগণের কাছে আহ্বান থাকবে, তিনি আসার পরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পথটিতে যেনো তারা যাওয়ার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে কাকলি পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে যেন তারা অবস্থান নেন। নিচের সড়ক বাদ দিয়ে। আমার বিশ্বাস জনগণ আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন এবং তাদের নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এশিয়া মহাদেশের নারী নেত্রীদের মধ্যে যে দুই একজন সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন গণতন্ত্রের জন্য এবং সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন, কারা নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি কখনোই অন্যায়ের কাছে বিশেষ করে ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহবায়ক আমিনুল হক ও বিএনপি চেয়ারপার্সন একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার, নিরাপত্তা সমন্নয়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম সামছুল রহমানসহ অঙ্গ সংগঠন নেতৃবৃন্দ।

এর আগে বাংলাদেশ বিমানের বিজনেস ক্লাসে করে তার সিলেট হয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল। সে সিদ্ধান্ত বদল হয়েছে।

প্রথমে জানানো হয়, তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটে ফিরবেন। এ ফ্লাইটে তার পরিবারের সদস্য ও বিএনপির শীর্ষ নেতারাও থাকবেন। তবে শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে দুই কেবিন ক্রুকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের স্থলে নতুন দুইজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরিয়ে দেওয়া কেবিন ক্রুদের একজন অতীতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখেছিলেন এবং একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন। অপরজন সরকারি দলের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার অভিযোগে আলোচিত।

বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি রুটিন প্রক্রিয়ার অংশ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। তবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। করোনা মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

এরপর গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি তাকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আজ থেকে দেশের ৬৪ জেলায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে : সংস্কৃতি উপদেষ্টা

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৪:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী ৫ মে দেশে ফিরবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হলেও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে। কাতার আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় ফিরবেন বলে জানা গেছে।

শনিবার (৩ মে) সন্ধ্যায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ বিমান তথা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আগামী সোমবার (৫ মে) বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশে আসবেন ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। সময় চূড়ান্ত হবার পর জানাবো। সবার আবেগ আছে, সবাই উচ্ছ্বসিত। বিএনপি চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা দিতে প্রস্তুত সবাই।

বেগম জিয়ার আগমন ও অভ্যর্থনার জন্য বিমানবন্দর থেকে কাকলী পর্যন্ত রাস্তা এড়িয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চার মাস যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রতিদিন তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভালো পরিবেশ ও পরিবারের সঙ্গে থাকাসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা হওয়ায় নেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতির এ উন্নতি হয়। বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থবোধ করছেন। তাই তিনি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

নেতাকর্মী ও দেশের সাধারণ মানুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের নেত্রী দেশে ফিরে আসবেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মধ্যে আবেগ আছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে, তারা অত্যন্ত শৃঙ্খলা সহকারে রাস্তার দুই ধারে কোনো যানজট যেনো সৃষ্টি না করে এই মহান নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আমরা পরামর্শ দিয়েছি এক হাতে জাতীয় পতাকা, আরেক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে আমরা তাকে অভ্যর্থনা জানাবো। জনগণের কাছে আহ্বান থাকবে, তিনি আসার পরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পথটিতে যেনো তারা যাওয়ার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে কাকলি পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে যেন তারা অবস্থান নেন। নিচের সড়ক বাদ দিয়ে। আমার বিশ্বাস জনগণ আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন এবং তাদের নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এশিয়া মহাদেশের নারী নেত্রীদের মধ্যে যে দুই একজন সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন গণতন্ত্রের জন্য এবং সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন, কারা নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি কখনোই অন্যায়ের কাছে বিশেষ করে ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহবায়ক আমিনুল হক ও বিএনপি চেয়ারপার্সন একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার, নিরাপত্তা সমন্নয়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম সামছুল রহমানসহ অঙ্গ সংগঠন নেতৃবৃন্দ।

এর আগে বাংলাদেশ বিমানের বিজনেস ক্লাসে করে তার সিলেট হয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল। সে সিদ্ধান্ত বদল হয়েছে।

প্রথমে জানানো হয়, তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটে ফিরবেন। এ ফ্লাইটে তার পরিবারের সদস্য ও বিএনপির শীর্ষ নেতারাও থাকবেন। তবে শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে দুই কেবিন ক্রুকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের স্থলে নতুন দুইজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরিয়ে দেওয়া কেবিন ক্রুদের একজন অতীতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখেছিলেন এবং একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন। অপরজন সরকারি দলের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার অভিযোগে আলোচিত।

বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি রুটিন প্রক্রিয়ার অংশ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। তবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। করোনা মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

এরপর গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি তাকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।