নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে নাগরিকদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমেছে বলে জানিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, প্রতি মাসে সংশোধনের আবেদন যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে ভোগান্তির মাত্রাও।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এনআইডি সংশোধনের ক্রাশ প্রোগ্রাম নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে অনিষ্পন্ন থাকা আবেদন ছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৬টি। এর মধ্যে গত ছয় মাসে নতুনভাবে জমা পড়ে আরও ৬ লাখ ৫ হাজার ৫২০টি আবেদন। সবমিলিয়ে আবেদন দাঁড়ায় ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫৬টিতে। এর মধ্যে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রামের’ মাধ্যমে নিষ্পন্ন করা হয়েছে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬৬২টি।
তিনি বলেন, আগে প্রতি মাসে যেখানে এক লাখের মতো আবেদন আসত, এখন তা কমে ৮০ হাজারে নেমে এসেছে। বর্তমানে অনিষ্পন্ন আবেদনের সংখ্যা মাত্র ৭৬ হাজার ৬৯৪টি।
আখতার হোসেন বলেন, এনআইডি সেবা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। এতে নাগরিকদের হয়রানি কমেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ সেবা আরও স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছেন তিনি।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এনআইডি নিয়ে ভোগান্তির মাত্রা কমেছে। আগামী তিন মাসে এটা আরও কমে আসবে, মানুষের হয়রানি আর থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, মাঠ পর্যায়ে নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা কাজটা করেছি। সবাই ধন্যবাদ পেতেই পারেন। এনআইডি সংশোধন নিয়ে যে হয়রানি সেটা আর থাকবে না। তবে বর্তমানে ৭৬ হাজার ৬৯৪টি এনআইডি আবেদন এখনও অনিষ্পন্ন আছে।
ইসি সচিব বলেন, আমারা জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নানা বিষয়ে কাজ করি। নিজের নাম, বাবা-মায়ের নাম, ঠিকানা ও বয়স ইত্যাদি সংশোধন করা হয়। আমরা কাজ করছি গুরুত্ব দিয়ে। কমিশন সিদ্ধান্তে এসেছে সংশোধন জিরো লেবেলে আনা যায় কি না। তবে এটা জিরো লেভেল সম্ভব না। তবে কাজটি সন্তুষ্টির পর্যায়ে আনতে চাই। এক হিসেবে কোন পেন্ডিং আবেদন নেই বলা চলে। কারণ বিগত ৬ মাসে গড়ে প্রতি মাসে ১ লাখ ৯২০টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে এটা বর্তমানে কমে ৮০ হাজার হয়েছে। আমরা বিগত সাত মাসে কোনোভাবেই অনিষ্পন্নের সংখ্যা তিন লাখের নিচে নামাতে পারছিলাম না। ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে অনিয়ম প্রসঙ্গে সচিব বলেন, মাঠ পর্যায়ে ভোগান্তির বিষয়টি বলার আগে বলতে চাই। মাঠ পর্যায় থেকে অনেকে আমাকে তথ্য পাঠাচ্ছেন। হয়রানির তথ্য আমাদের কাছে আসছে। ঘটনা সত্য হলে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবো।
রাজনীতিবিদদের মধ্যে এনআইডি লক কতজনের এ প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, এই প্রশ্নের উত্তরটা রেডিমেট না। এই প্রশ্ন হবে আমি আশা করিনি। এনআইডি লক হতেই পারে। শুনেছি আমারটাও লক করা আছে, এটা বিভিন্ন কারণে। কারণ কি! মিস ইউজ, অ্যাবিউজ যেন না হয়। এটা আমি শুনেছি সত্য-মিথ্যা কি জানি না। আমি এটা যাচাই করতে যায়নি। এটার প্রয়োজনও হয়নি। কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে তথ্য না নেওয়াটাই ভালো।
তিনি আরও বলেন, আমারটা শুনেছি আই এম নট কনফার্ম। আমার নিশ্চিত করার কোনো ব্যাপার নেই। যদি লক হয়ে থাকে ভালো তো! ডাটা অ্যাবিউজ হবে না।
নির্বাচন কমিশনারদের এনআইডি লক আছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আমি আমারটা বলেছি। ডিজি (এনআইডি) সাহেব উত্তর দেবে কেন? আমার উত্তর আমি দিচ্ছি। ডিজি সাহেবকে দিয়ে যাচাই করার কি আছে, তার মানে আমার কথার সত্যতা আপনার কাছে নেই। আমি আমারটা বলছি। ব্যক্তি পর্যায়ে তথ্য নেওয়া উচিত না।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর, এনআইডি পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, এনআইডি পরিচালক (পরিচালনা) মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।