Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এদেশে জন্ম নেওয়া কেউই সংখ্যালঘু নয় : প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৮৭ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এদেশে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন তারা যে ধর্মেরই হোক, কেউই সংখ্যালঘু নয়। নিজেদের সংখ্যালঘু না ভাবতে সনাতন ধর্মের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গণভবনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, গণভবনের মাটি আজ ধন্য হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে যারা জন্ম নিয়েছেন, তারা সবাই এই মাটির সন্তান ও নাগরিক। এ মাটির ওপরই আপনাদের অধিকার। কেনো সংখ্যালঘু বলেন নিজেদের? কে জাতীয় পার্টি, কে বিএনপি, কে আওয়ামী লীগ, কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে খ্রিষ্টান- তা দেখে সেবা করি না আমরা। সব রক্তের রঙ লাল। মুক্তিযুদ্ধে সবার রক্ত মিশে গেছে এক স্রোতে। এই দেশ সবার।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন ধর্মীয় কোনো বৈষম্য নেই। যোগ্যতা দেখেই মূল্যায়ন করা হয়। এখানে ধর্মীয়ভাবে কোনো চিন্তা করা হয় না। বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষ যার যার ধর্ম, সে সে পালন করবে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে উৎসবে শামিল হতে চাই।

বিএনপির মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল বিএনপির মাধ্যমে। বার বার অত্যাচার হয়েছে অসাম্প্রাদায়িক চেতনার ওপর। ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দিয়েছিলেন বলেই, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, যোগ্যতা দেখেই মূল্যায়ন করা হয়, এখানে ধর্মীয়ভাবে কোনো চিন্তা করা হয় না। বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। এদেশে সব ধর্মের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে আওয়ামী লীগ। ধর্ম যার যার উৎসব সবার- এই নীতিতে সরকার বিশ্বাস করে।

শেখ হাসিনা বলেন, শ্রী কৃঞ্চের আবির্ভাব হয়েছিল দুষ্টের দমন শিষ্টের লালনের জন্য। সব ধর্মের মর্মবাণী এক ও অভিন্ন। ভাষা হয়ত ভিন্ন হতে পারে।

এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত করেছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালায়।

বিএনপির শাসনামলে ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারা দেশে ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেগুলো সংস্কার করেছে। জরাজীর্ণ মন্দিরগুলো সংস্কার করা হচ্ছে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমান সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার নিয়ে বাঁচবে। কারণ আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সব ধর্মের উন্নয়নে সমানভাবে কাজ করছে। মসজিদভিত্তিক শিক্ষার যেমন ব্যবস্থা করা হয়েছে তেমনি মন্দিরভিত্তিক শিক্ষারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিন্দুরা মন্দিরে যাবে, মুসলিমরা মসজিদে যাবে। সবাই প্রাথমিক শিক্ষা পাবে।

বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে বলা আছে বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। কিন্তু জিয়াউর রহমান ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সংবিধান সংশোধন করে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আবারও প্রতিষ্ঠা করেছে।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, দেশে এখন চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য নেই। কে দক্ষ, কে কাজ করে আমরা সেটিই দেখি। ধর্ম দেখে যোগ্যতা-দক্ষতা দেখে মূল্যায়ন করি না। অর্পিত সম্পত্তি আইন নিয়ে আপনাদের আপত্তি ছিল, তা বাতিল করছি। আপনারা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই আইন করে দিয়েছি। আরও একটা কাজ করে দিয়েছি- হেবা আইনে আমরা মুসলমানরা যে অধিকারটা ভোগ করি, সেটা হিন্দু ধর্মসহ অন্যান্য সকল ধর্মের জন্য বাস্তবায়ন করে দিয়েছি। আপনার সম্পত্তি যেন অন্য কেউ নয়-ছয় করতে না পারে সেজন্য।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

এদেশে জন্ম নেওয়া কেউই সংখ্যালঘু নয় : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৩:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এদেশে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন তারা যে ধর্মেরই হোক, কেউই সংখ্যালঘু নয়। নিজেদের সংখ্যালঘু না ভাবতে সনাতন ধর্মের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গণভবনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, গণভবনের মাটি আজ ধন্য হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে যারা জন্ম নিয়েছেন, তারা সবাই এই মাটির সন্তান ও নাগরিক। এ মাটির ওপরই আপনাদের অধিকার। কেনো সংখ্যালঘু বলেন নিজেদের? কে জাতীয় পার্টি, কে বিএনপি, কে আওয়ামী লীগ, কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে খ্রিষ্টান- তা দেখে সেবা করি না আমরা। সব রক্তের রঙ লাল। মুক্তিযুদ্ধে সবার রক্ত মিশে গেছে এক স্রোতে। এই দেশ সবার।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন ধর্মীয় কোনো বৈষম্য নেই। যোগ্যতা দেখেই মূল্যায়ন করা হয়। এখানে ধর্মীয়ভাবে কোনো চিন্তা করা হয় না। বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষ যার যার ধর্ম, সে সে পালন করবে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে উৎসবে শামিল হতে চাই।

বিএনপির মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল বিএনপির মাধ্যমে। বার বার অত্যাচার হয়েছে অসাম্প্রাদায়িক চেতনার ওপর। ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দিয়েছিলেন বলেই, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, যোগ্যতা দেখেই মূল্যায়ন করা হয়, এখানে ধর্মীয়ভাবে কোনো চিন্তা করা হয় না। বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। এদেশে সব ধর্মের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে আওয়ামী লীগ। ধর্ম যার যার উৎসব সবার- এই নীতিতে সরকার বিশ্বাস করে।

শেখ হাসিনা বলেন, শ্রী কৃঞ্চের আবির্ভাব হয়েছিল দুষ্টের দমন শিষ্টের লালনের জন্য। সব ধর্মের মর্মবাণী এক ও অভিন্ন। ভাষা হয়ত ভিন্ন হতে পারে।

এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত করেছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালায়।

বিএনপির শাসনামলে ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারা দেশে ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেগুলো সংস্কার করেছে। জরাজীর্ণ মন্দিরগুলো সংস্কার করা হচ্ছে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমান সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার নিয়ে বাঁচবে। কারণ আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সব ধর্মের উন্নয়নে সমানভাবে কাজ করছে। মসজিদভিত্তিক শিক্ষার যেমন ব্যবস্থা করা হয়েছে তেমনি মন্দিরভিত্তিক শিক্ষারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিন্দুরা মন্দিরে যাবে, মুসলিমরা মসজিদে যাবে। সবাই প্রাথমিক শিক্ষা পাবে।

বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে বলা আছে বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। কিন্তু জিয়াউর রহমান ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সংবিধান সংশোধন করে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আবারও প্রতিষ্ঠা করেছে।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, দেশে এখন চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য নেই। কে দক্ষ, কে কাজ করে আমরা সেটিই দেখি। ধর্ম দেখে যোগ্যতা-দক্ষতা দেখে মূল্যায়ন করি না। অর্পিত সম্পত্তি আইন নিয়ে আপনাদের আপত্তি ছিল, তা বাতিল করছি। আপনারা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই আইন করে দিয়েছি। আরও একটা কাজ করে দিয়েছি- হেবা আইনে আমরা মুসলমানরা যে অধিকারটা ভোগ করি, সেটা হিন্দু ধর্মসহ অন্যান্য সকল ধর্মের জন্য বাস্তবায়ন করে দিয়েছি। আপনার সম্পত্তি যেন অন্য কেউ নয়-ছয় করতে না পারে সেজন্য।