নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশজুড়ে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এতে প্রতিটি পরীক্ষার কেন্দ্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা এক জরুরি স্মারকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. কেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীসহ পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবার মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক।
২. পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
৩. ডেঙ্গু বিস্তার রোধে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে এবং আশপাশে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৪. পরীক্ষা শুরুর পূর্বে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে মশক নিধন ঔষধ স্প্রে করতে হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে।
৫. পরীক্ষা কক্ষের আসন বিন্যাস বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিপালন করতে হবে।
৬. প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের মেডিকেল টিমকে সক্রিয় রাখতে হবে। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন/উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে।
৭. জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের জটলা নিরুৎসাহিত করার প্রচারণা চালাতে হবে।
আদেশে আরও বলা হয়, শিক্ষক-পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র জানায়, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিতে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ফরম পূরণ করেছেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী। এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ও ছাত্রী ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন।
গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন পরীক্ষার্থী। সেই হিসাবে এ বছর পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন।
প্রসঙ্গত, বোর্ডের প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২৬ জুন শুরু হয়ে চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।
২০২০ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়। এরপর দেশে কয়েক দফায় সংক্রমণ বেড়েছে এবং জনস্বাস্থ্য সংকট সৃষ্টি হয়। সরকারিভাবে মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং জনসমাগম এড়ানোসহ স্বাস্থ্যবিধি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় এসব বিধিনিষেধ অনেকাংশে শিথিল করা হয়।
সম্প্রতি দেশে আবারও কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা গেছে। এরপরই আবার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।