Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ব্যাংক করা হবে : গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, দেশে ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে। ইসলামী ব্যাংকগুলো পুরোদমে নতুনরূপ দেওয়া হবে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী দশম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন-২০২৫ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, দেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের জন্য সঠিক নিয়ন্ত্রক কাঠামোর অভাব আছে। এ বিষয়ে আইনি ফাঁক রয়ে গেছে। আমরা এটি নিয়েও কাজ করছি। ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একদম নতুন রূপ দেওয়া হবে। একটি বড় ও অনেকগুলো ছোট ছোট ইসলামী ব্যাংক আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই সমস্যাগ্রস্ত। ইসলামী ব্যাংকের জন্য আইন ও তদারকির ব্যবস্থা চালু করা হবে। আন্তর্জাতিক উত্তম রীতি-নীতি অনুসরণ করে এসব করা হবে।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যেন ভবিষ্যতে অন্যরা একই কাজ করতে নিরুৎসাহিত হয়। পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা জানি, ব্যাংকিং খাতে অনেক ধরনের হস্তক্ষেপ ও দ্বৈত শাসনব্যবস্থা রয়েছে। এর অবসান হওয়া দরকার। সমগ্র ব্যাংকিং ব্যবস্থার জন্য একটি সমন্বিত নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রয়োজন। আমরা সেই লক্ষ্যেও কাজ করছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করা হচ্ছে। স্বায়ত্তশাসন ও তদারকি বাড়াতে কাজ চলছে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর হয়ে ওঠে। ব্যাংক খাতে যেসব সমস্যা হচ্ছে বা হতে পারে, তা যেন আগেই জানা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে।

গভর্নর তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন ও হস্তক্ষেপ দীর্ঘদিনের সমস্যা। এটি বন্ধ করতে হবে। একটি নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর আওতায় পুরো ব্যাংকিং খাতকে আনতে হবে, এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক তার তদারকি ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার কাজ করছে বলেও জানান তিনি। ‘যাতে আমরা ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ না করেই অনিয়ম শনাক্ত করতে পারি,’ বলেন গভর্নর।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচার করা অর্থ উদ্ধারে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কাজ চলছে এবং আইনি ও নৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব ব্যাংকে অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমানে ১১টি ব্যাংক এবং পরে আরও দুটি ব্যাংকে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

গভর্নর আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করা হচ্ছে এবং ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চলছে, যাতে ভবিষ্যতে ব্যাংক খাতে সমস্যা আগেই চিহ্নিত করা যায় এবং সমাধান করা সম্ভব হয়।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক খাতে সমস্যার পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকও একটি কারণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর বিভিন্ন চাপ থাকে, সেই সঙ্গে আছে ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন। স্বায়ত্তশাসন ও তদারকি বাড়াতে কাজ চলছে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর হয়ে ওঠে। ব্যাংক খাতে যেসব সমস্যা হচ্ছে বা হতে পারে, তা যেন আগেই জানা যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা যাতে তাদের দায়িত্ব পালন করে, তা নিবিড়ভাবে তদারকি করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিপোর্টিং পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করা হবে। সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে জমা নেওয়া হবে।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল হান্নান চৌধুরী।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে বিদেশে-অনলাইনে পরে থাকতে হবে : তারেককে ইঙ্গিত করে পাটওয়ারী

ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ব্যাংক করা হবে : গভর্নর

প্রকাশের সময় : ১০:৩৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, দেশে ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে। ইসলামী ব্যাংকগুলো পুরোদমে নতুনরূপ দেওয়া হবে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী দশম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন-২০২৫ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

গভর্নর বলেন, দেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের জন্য সঠিক নিয়ন্ত্রক কাঠামোর অভাব আছে। এ বিষয়ে আইনি ফাঁক রয়ে গেছে। আমরা এটি নিয়েও কাজ করছি। ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একদম নতুন রূপ দেওয়া হবে। একটি বড় ও অনেকগুলো ছোট ছোট ইসলামী ব্যাংক আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই সমস্যাগ্রস্ত। ইসলামী ব্যাংকের জন্য আইন ও তদারকির ব্যবস্থা চালু করা হবে। আন্তর্জাতিক উত্তম রীতি-নীতি অনুসরণ করে এসব করা হবে।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যেন ভবিষ্যতে অন্যরা একই কাজ করতে নিরুৎসাহিত হয়। পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা জানি, ব্যাংকিং খাতে অনেক ধরনের হস্তক্ষেপ ও দ্বৈত শাসনব্যবস্থা রয়েছে। এর অবসান হওয়া দরকার। সমগ্র ব্যাংকিং ব্যবস্থার জন্য একটি সমন্বিত নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রয়োজন। আমরা সেই লক্ষ্যেও কাজ করছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করা হচ্ছে। স্বায়ত্তশাসন ও তদারকি বাড়াতে কাজ চলছে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর হয়ে ওঠে। ব্যাংক খাতে যেসব সমস্যা হচ্ছে বা হতে পারে, তা যেন আগেই জানা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে।

গভর্নর তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন ও হস্তক্ষেপ দীর্ঘদিনের সমস্যা। এটি বন্ধ করতে হবে। একটি নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর আওতায় পুরো ব্যাংকিং খাতকে আনতে হবে, এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক তার তদারকি ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার কাজ করছে বলেও জানান তিনি। ‘যাতে আমরা ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ না করেই অনিয়ম শনাক্ত করতে পারি,’ বলেন গভর্নর।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচার করা অর্থ উদ্ধারে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কাজ চলছে এবং আইনি ও নৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব ব্যাংকে অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমানে ১১টি ব্যাংক এবং পরে আরও দুটি ব্যাংকে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

গভর্নর আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করা হচ্ছে এবং ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চলছে, যাতে ভবিষ্যতে ব্যাংক খাতে সমস্যা আগেই চিহ্নিত করা যায় এবং সমাধান করা সম্ভব হয়।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক খাতে সমস্যার পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকও একটি কারণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালী করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর বিভিন্ন চাপ থাকে, সেই সঙ্গে আছে ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন। স্বায়ত্তশাসন ও তদারকি বাড়াতে কাজ চলছে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর হয়ে ওঠে। ব্যাংক খাতে যেসব সমস্যা হচ্ছে বা হতে পারে, তা যেন আগেই জানা যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা যাতে তাদের দায়িত্ব পালন করে, তা নিবিড়ভাবে তদারকি করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিপোর্টিং পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করা হবে। সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে জমা নেওয়া হবে।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল হান্নান চৌধুরী।