আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ। বিমান হামলায় এত মানুষ নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফিলিস্তিনের স্থানীয় কর্মকর্তারা।
স্থানীয় মেডিকেল সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান বেসামরিক ভবনে হামলা চালাচ্ছে ফলে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়ছে। গাজার স্থানীয় প্রশাসন, সাধারণ মানুষকে রক্তদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। ‘সোর্ড অব আইরন’ অভিজানের অংশ হিসেবে এই পাল্টা হামালা শুরু করেছে ইসরায়েল।
সংবাদ সংস্থা ওয়াফার খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের বাইরে একটি ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি আহত হন। আহতদের মধ্যে একজন প্যারামেডিকও রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তুর্কি সংবাদ মাধ্যম টিআরটি জানায়, দখলকৃত পশ্চিম তীরের শহর হুওয়ারাতে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়, পরে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা নতুন করে সহিংসতা ছড়ালে আহত আরও নয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে গাজা থেকে প্রতিরোধ যুদ্ধের ডাক দেয় হামাস।
এদিকে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ইসরায়েলে মারা গেছেন অন্তত ৪০ জন। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫০ জনে। ইসরায়েলি সরকার হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন যে দেশটি এখন যুদ্ধের মধ্যে আছে। এছাড়া তিনি অঙ্গীকার করেছেন যে হামাসকে এ সামরিক অভিযানের জন্য অকল্পনীয় মূল্য দিতে হবে।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েলের নাগরিকরা, আমরা এখন যুদ্ধের মধ্যে আছি। এটা কোনো সামরিক অভিযান নয় বা সংঘাত নয়। আমরা এখন যুদ্ধ করছি।
হামাস দাবি করেছে, তারা গাজা থেকে ইসরায়েলে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই হাজার ২০০ রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলার পর এক ব্রিফিংয়ে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট বলেছেন, হামাসেরে যোদ্ধারা প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে গাজা থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছে।
আইডিএফ-এর কাছে হামলার বিষয়ে আগাম সতর্কতা ছিল কিনা সে সম্পর্কে সাংবাদিকদের বারবার প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন হেচট।
এর আগে, শনিবার ভোরে গাজা থেকে ইসরায়েলে কয়েক হাজার রকেট ছোড়ে হামাস। ২০ মিনিটে ইসরায়েলে পাঁচ হাজার রকেট ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভেতরে সশস্ত্র যোদ্ধারা ঢুকে পড়ারও খবর পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, আমাদের শত্রুদের এমন মূল্য দিতে হবে, যা তারা কখনো দেখেনি। আমরা যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি এবং এই যুদ্ধে আমরাই জিতবো।
হামলার দায় স্বীকার করে হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-ক্বাসাম ব্রিগেডের নেতা মোহাম্মদ দায়েফ এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা ফিলিস্তিনিদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।