আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইরাকের উত্তরাঞ্চলের নিনেভেহ প্রদেশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫০। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা ও জরুরি সেবা সংস্থার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে বর এবং কনেও রয়েছে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ইরাকের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় নিনেভেহ প্রদেশের আল হামদানিয়া জেলায় ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কী কারণে ওই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে প্রাথমিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আতশবাজি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
ইরাকের নিনেভেহ প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর হাসান আল-আলাক রয়টার্সকে বলেছেন- অগ্নিকাণ্ডে ১১৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। অবশ্য মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির রাষ্ট্রীয় মিডিয়া মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ১০০ এবং আহতের সংখ্যা ১৫০ জন বলে জানিয়েছে।
ইরাকের আইএনএ নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, নিনেভেহ প্রদেশের হামদানিয়াহ জেলার একটি হলরুমে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫০ মানুষ। রাজধানী বাগদাদ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ও উত্তরাঞ্চলের বড় শহর মসুলের পাশে এই হামদানিয়াহ জেলার অবস্থান।
ইরাকের বার্তা সংস্থা নিনা একটি ছবি পোস্ট করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, দমকল কর্মীরা আগুন নেভানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া স্থানীয় সাংবাদিকরা সামাজিক মাধ্যমে যেসব ছবি পোস্ট করেছেন সেখানে পুড়ে যাওয়া ইভেন্ট হলের ধ্বংসাবশেষ এবং সেখানকার পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
ইরাকের বেসামরিক প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে নিনার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পুড়ে যাওয়া ভবনে থাকা দাহ্য প্যানেল সম্ভব আগুন আরও ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে। এক কর্মকর্তা বলেন, স্বল্পমূল্যের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই ইভেন্ট হলের কিছু অংশ ধসে পড়ে।
বুধবার সকালেও সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে দেখা গেছে। জীবিতদের খোঁজে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ওই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। সে সময় শত শত মানুষ বিয়ের অনুষ্ঠানে আনন্দ করছিলেন।
প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর পরই সেখানে অ্যাম্বুলেন্স এবং মেডিকেল সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী।
ইতোমধ্যেই আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে হামদানিয়া শহরের একটি হাসপাতালে আহতদের রক্ত দিয়ে সহায়তা করতে অনেক মানুষকে জড়ো হতে দেখা গেছে।