ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি :
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ইতিহাসের সামনের সারিতে ঠাকুরগাঁও জেলা থাকবে উল্লেখ্য করে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ জেলার মানুষ। মিছিল-মিটিংসহ রণক্ষেত্রে পরিণত হলেও তারা পিছপা হননি। তাদের উপর নির্যাতন করা হলেও তারা পিছু হটেনি।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের প্রেরণার শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস দমনের প্রতিবাদে মতবিনিময় সভায় এসব বলেন তিনি।
সারজিস বলেন, সারাজীবন ধরে শুধুমাত্র নৌকায় ভোট দেওয়াটা সবচেয়ে বড় দূর্বলতা সংখ্যা লঘু ভাই-বোনদের। তারা এমন দূর্বলতা নিজেরাই সৃষ্টি করেছেন। কোন কিছু না ভেবে শুধুমাত্র একটি মার্কায় ভোট দিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে দুই আসনে মেম্বার থেকে সাংসদ একই পরিবারের উল্লেখ্য করে সারজিস বলেন, দবিরুল এমপি তার এলাকায় পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছে। সব জায়গায় তার পরিবারের সদস্য। এসব করেই জায়গা জমি দখল করে নিয়েছে।
তিনি আরোও বলেন, দেশে যা কিছু হবে ছাত্র জনতার রায়ের মাধ্যমে হবে। এখানে মামলা মামলা খেলা চলছে। টাকার বিনিময়ে নাম দেয়া হয় নাম কাটা হয়। সব জায়গয়া টাকা দিতে হয় টাকা ছাড়া কোন কাজ হয়না। এসব আর করতে দেয়া হবেনা।
তিনি বলেন, সীমান্তে ফেলানীর মতো আর কাউকে দেখতে চাই না। রাষ্ট্র সংস্কারের আগে নিজেদের পরিবার সংস্কার করতে হবে। আলাদা পেশায় যোগদানের পাশাপাশি ভালো রাজনীতিবিদও হতে হবে।
সারজিস আলম বলেন, বিগত বছরগুলোতে স্বৈরশাসন আমলে যে অন্যায়গুলো ছিল সেগুলো এখনো শেষ হয়ে যায়নি।
এসময় তিনি ছাত্র-জনতাকে অনুরোধ করে বলেন, আপনারা যদি আগামীর স্বপ্নের বাংলাদেশকে দেখতে চান তাহলে প্রতিবাদ জারি রাখুন। নয়তো আওয়ামী লীগ ১৬ বছরে বাংলাদেশে যে দুর্নীতির সিস্টেম তৈরি করেছে, আবার তার একটি নতুন চলচ্চিত্রায়ন দেখা যাবে। যে যে ধর্মেরই বা দলের হোক না কেন, সে যদি চাঁদাবাজি করে, দুর্নীতি করে তাকে অন্যায়কারী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং প্রতিবাদ করতে হবে।
সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে হবে। আমরা ফেলানির মতো আর কাউকে ঝুলে থাকতে দেখতে চাই না।
ভোটের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করে তিনি আরও বলেন, আপনারা আপনাদের দুর্বলতা নিজেরাই সৃষ্টি করেছেন। আপনাদের মূল্যবান ভোটটি কোনো কিছু চিন্তা না করে, না বুঝে একটি মাত্র মার্কাতে (নৌকা) ফিক্সড করে রেখেছেন।
সারজিস বলেন, এ বাংলাদেশে এরপর থেকে যা হবে তা ছাত্র-জনতার রায়ের ভিত্তিতে হবে। কোনো পরিবার থেকে নয় এবং কোনো ফ্যাসিস্ট সিস্টেম থেকে নয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, এ আন্দোলনে আমাদের বোনেরা আমাদের ঢাল হিসেবে সামনে ছিলেন। নারীদের সম্মান করতে হবে। এছাড়া যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণ রাখতে হবে এবং আহতদের পরিবারগুলোর পাশে দাড়াতে হবে।
এসময় অন্যান্য সমন্বয়কদের মধ্যে সজিব ভূইয়া, জহির রায়হান, আবু সাঈদ স্বপন সহ স্থানীয় ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন।