Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউনূসের মামলা পর্যবেক্ষণে বিদেশ থেকে কোনো আবেদন আসেনি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১০:০১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৮৪ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা পর্যবেক্ষণে বিদেশ থেকে কোনো আবেদন এখনো আসেনি।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরকারপ্রধানের জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়া নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূসের পক্ষে বিশ্বনেতারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্বনেতারা চাইলে ইউনূসের মামলা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। মামলা পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিকভাবে কোনো আবেদন এসেছে কি না-জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, না, কেউ যোগাযোগ করেনি।

মোমেন বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা সবসময় বলছি, তিনি সম্মানিত নাগরিক এবং তিনি দেশের আইন-কানুন জানেন। তার বিরুদ্ধে মামলা সরকার করেনি। যারা ভুক্তভোগী, তারা করেছেন। মামলা আইনি প্রক্রিয়ায় চলছে। আমাদের কিছুই করার নেই। আদালতকে সরকার কোনোভাবে প্রভাবিত করবে না। আমাদের আইন ব্যবস্থা স্বাধীন।

মন্ত্রী বলেন, বিদেশি পণ্ডিতরা, নামিদামি লোকেরা, তারা পুরোটা জানেন না। তারা মামলা সম্পর্কে না জেনে বন্ধ করে দিতে বলেছেন। সরকারের কোনো ক্ষমতা নেই মামলা বন্ধ করার। নোবেল বিজয়ী হলেই তিনি সব অপরাধের ঊর্ধ্বে, তা ঠিক নয়।

মোমেন বলেন, যদি তিনি (ড. ইউনূস) কোনো অপরাধ না করে থাকেন, তাহলে তো ভয়ের কোনো কারণ নেই। বিচার তার পক্ষে যেতে পারে, যদি তিনি অপরাধ না করে থাকেন। তার অপরাধবোধ থাকার কারণটা তো খুব দুঃখজনক। এ রকম নামিদামি লোক ভয়ে আছেন কেন? দোষী থাকলে একটু ভয় থাকে।

তিনি বলেন, ইউনূস যদি সৎসাহসী হয়ে থাকেন, তিনি মামলা মোকাবিলা করবেন। এ দেশের নাগরিক হলে তাকে তো এ দেশের আইন মেনে চলতে হবে।

মোমেন বলেন, শুনেছি তিনি একটি তহবিল তৈরি করে বিভিন্ন লোকের সই নিয়ে আসছেন। তারা (বিদেশিরা) এসে মামলা নিয়ে লড়াই করতে পারেন।

সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিক, সুশীল ও নাগরিক সমাজ এটিকে স্বাগত জানায়নি। বিশ্বের কোথাও থেকে এ আইনের ক্ষেত্রে সাধুবাদ পেয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘শোনেন, আপনার মায়ের বিরুদ্ধে যদি কেউ ওয়েবসাইটে একটা বাজে কথা লিখে দেয়, তখন আপনি কী করবেন? সরকারকে গালি দেবেন। বলবেন, সরকার এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’

এ সময়ে পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগে আইনটি পড়েন, পড়ে দেখেন যে এটি কী ধরনের আইন। তারপরে অভিযোগ করার জন্য হয়তো অভিযোগ করবেন। কেউ কেউ বিদেশি সংবাদমাধ্যমের অনুকম্পা পাওয়ার জন্য এই অভিযোগ করেন।

যুদ্ধ বন্ধের (রাশিয়া-ইউক্রেন) কথা প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন। এবার তিনি জাতিসংঘের বক্তব্যে সেই আহ্বান জানাবেন কি না। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও অভিবাসন নিয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন কি না, প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, অভিবাসনে আমরা সভাপতি। আমরা চাই, বিশ্বে নিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন চাই। আমরা কোনো অবৈধ অভিবাসন চাই না। অভিবাসীরা স্থানীয়দের কর্মসংস্থান কেড়ে নেন না, তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন।

যুক্তরাষ্ট্র দেশটি পুরোটিই অভিবাসীদের দেশ। বিশ্বের সব দেশের লোকজন গিয়ে ওই দেশটিকে উন্নত করেছেন। অভিবাসীরা খুবই উদ্ভাবনী ও সৃষ্টিশীল হন। তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন। আমরা সবসময় এ বাণী দিয়ে এসেছি।

তিনি বলেন, আমরা শিগগির বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাজার হবো। সেই কথাগুলো আমরা বলতে চাই বিশ্বকে। তারপর কে গ্রহণ করবে, না করবে, এটা তাদের বিষয়। বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় পণ্ডিতরা একবাক্যে বলেন, বাংলাদেশ ইজ রাইজিং স্টার, ইজ অ্যা রাইজিং টাইগার।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আগের আইনটি বাতিল করে নতুন আইন করা হয়েছে। সেখানে যে উদ্বেগগুলো ছিল, সবকিছু ভালোমতো অ্যাকোমোডেট করা হয়েছে। আশা করছি, সবাই এটি গ্রহণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আগের আইনটির কিছু বিষয় পরিবর্তন করতে নিয়মিত বৈঠক করতেন। তাদের সেসব বিষয় সামগ্রিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা আইনের চেয়েও কুখ্যাত আইন পশ্চিমা বিশ্বে আছে। আমার-আপনার জ্ঞানের অভাবের কারণে সবসময় সেই তুলনা করতে পারি না।

বাংলাদেশের কেউ এ আইনকে স্বাগত জানায়নি কেন, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আইনটি পাস হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমালোচনা কে করেছেন, আদৌ করেছেন কি না- এ রকম তালিকা থাকলে আমাদের দেবেন।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ইউনূসের মামলা পর্যবেক্ষণে বিদেশ থেকে কোনো আবেদন আসেনি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০:০১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা পর্যবেক্ষণে বিদেশ থেকে কোনো আবেদন এখনো আসেনি।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরকারপ্রধানের জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়া নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূসের পক্ষে বিশ্বনেতারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্বনেতারা চাইলে ইউনূসের মামলা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। মামলা পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিকভাবে কোনো আবেদন এসেছে কি না-জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, না, কেউ যোগাযোগ করেনি।

মোমেন বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। আমরা সবসময় বলছি, তিনি সম্মানিত নাগরিক এবং তিনি দেশের আইন-কানুন জানেন। তার বিরুদ্ধে মামলা সরকার করেনি। যারা ভুক্তভোগী, তারা করেছেন। মামলা আইনি প্রক্রিয়ায় চলছে। আমাদের কিছুই করার নেই। আদালতকে সরকার কোনোভাবে প্রভাবিত করবে না। আমাদের আইন ব্যবস্থা স্বাধীন।

মন্ত্রী বলেন, বিদেশি পণ্ডিতরা, নামিদামি লোকেরা, তারা পুরোটা জানেন না। তারা মামলা সম্পর্কে না জেনে বন্ধ করে দিতে বলেছেন। সরকারের কোনো ক্ষমতা নেই মামলা বন্ধ করার। নোবেল বিজয়ী হলেই তিনি সব অপরাধের ঊর্ধ্বে, তা ঠিক নয়।

মোমেন বলেন, যদি তিনি (ড. ইউনূস) কোনো অপরাধ না করে থাকেন, তাহলে তো ভয়ের কোনো কারণ নেই। বিচার তার পক্ষে যেতে পারে, যদি তিনি অপরাধ না করে থাকেন। তার অপরাধবোধ থাকার কারণটা তো খুব দুঃখজনক। এ রকম নামিদামি লোক ভয়ে আছেন কেন? দোষী থাকলে একটু ভয় থাকে।

তিনি বলেন, ইউনূস যদি সৎসাহসী হয়ে থাকেন, তিনি মামলা মোকাবিলা করবেন। এ দেশের নাগরিক হলে তাকে তো এ দেশের আইন মেনে চলতে হবে।

মোমেন বলেন, শুনেছি তিনি একটি তহবিল তৈরি করে বিভিন্ন লোকের সই নিয়ে আসছেন। তারা (বিদেশিরা) এসে মামলা নিয়ে লড়াই করতে পারেন।

সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিক, সুশীল ও নাগরিক সমাজ এটিকে স্বাগত জানায়নি। বিশ্বের কোথাও থেকে এ আইনের ক্ষেত্রে সাধুবাদ পেয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘শোনেন, আপনার মায়ের বিরুদ্ধে যদি কেউ ওয়েবসাইটে একটা বাজে কথা লিখে দেয়, তখন আপনি কী করবেন? সরকারকে গালি দেবেন। বলবেন, সরকার এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’

এ সময়ে পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগে আইনটি পড়েন, পড়ে দেখেন যে এটি কী ধরনের আইন। তারপরে অভিযোগ করার জন্য হয়তো অভিযোগ করবেন। কেউ কেউ বিদেশি সংবাদমাধ্যমের অনুকম্পা পাওয়ার জন্য এই অভিযোগ করেন।

যুদ্ধ বন্ধের (রাশিয়া-ইউক্রেন) কথা প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন। এবার তিনি জাতিসংঘের বক্তব্যে সেই আহ্বান জানাবেন কি না। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও অভিবাসন নিয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন কি না, প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, অভিবাসনে আমরা সভাপতি। আমরা চাই, বিশ্বে নিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন চাই। আমরা কোনো অবৈধ অভিবাসন চাই না। অভিবাসীরা স্থানীয়দের কর্মসংস্থান কেড়ে নেন না, তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন।

যুক্তরাষ্ট্র দেশটি পুরোটিই অভিবাসীদের দেশ। বিশ্বের সব দেশের লোকজন গিয়ে ওই দেশটিকে উন্নত করেছেন। অভিবাসীরা খুবই উদ্ভাবনী ও সৃষ্টিশীল হন। তারা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন। আমরা সবসময় এ বাণী দিয়ে এসেছি।

তিনি বলেন, আমরা শিগগির বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাজার হবো। সেই কথাগুলো আমরা বলতে চাই বিশ্বকে। তারপর কে গ্রহণ করবে, না করবে, এটা তাদের বিষয়। বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় পণ্ডিতরা একবাক্যে বলেন, বাংলাদেশ ইজ রাইজিং স্টার, ইজ অ্যা রাইজিং টাইগার।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আগের আইনটি বাতিল করে নতুন আইন করা হয়েছে। সেখানে যে উদ্বেগগুলো ছিল, সবকিছু ভালোমতো অ্যাকোমোডেট করা হয়েছে। আশা করছি, সবাই এটি গ্রহণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আগের আইনটির কিছু বিষয় পরিবর্তন করতে নিয়মিত বৈঠক করতেন। তাদের সেসব বিষয় সামগ্রিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা আইনের চেয়েও কুখ্যাত আইন পশ্চিমা বিশ্বে আছে। আমার-আপনার জ্ঞানের অভাবের কারণে সবসময় সেই তুলনা করতে পারি না।

বাংলাদেশের কেউ এ আইনকে স্বাগত জানায়নি কেন, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আইনটি পাস হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমালোচনা কে করেছেন, আদৌ করেছেন কি না- এ রকম তালিকা থাকলে আমাদের দেবেন।’