Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আ’লীগের ১৭ বছরের জঞ্জাল ১৭ মাসেও সরানো সম্ভব না : মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ১৭ বছরে দেশে যে পারিমাণ জঞ্জাল তৈরি করে গেছে, তা সরানো ১৭ দিনে সম্ভব না, ১৭ মাসেও সম্ভব না। এজন্য সময় প্রয়োজন। তাই জাতি হিসেবে আমাদের এখন সহনশীল হতে হবে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের পর কালিবাড়ির নিজ বাস ভবনে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এখন যেটা মনে করি এবং এখন যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার জাতি হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হলে চলবে না, আমাদের সহনশীল হতে হবে। ১৭ বছরে একটা জঞ্জাল, একটা গার্বেজ তৈরি হয়েছে এটা সত্যি কথা বলতে ১৭ দিনেও সম্ভব না, ১৭ মাসেও না। তাদের সময় দিতে হবে। তাদের প্রধান যে দায়িত্ব আমরা বারবার বলছি, সব সংস্কারে তাদের হাত দেওয়ার খুব বেশি প্রয়োজন নেই। নির্বাচিত যে পার্লামেন্ট আসবে তারা সে কাজগুলো করবে। এই সরকারের দায়িত্ব হবে নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সকলে যেন ভোট দিতে পারে। সকলে যেন অংশ নিতে পারে। আর ভোটের যে সিস্টেম আওয়ামী লীগ করে গেছে সেগুলো নির্মূল করা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার যে কাজটা সফলভাবে করেছে, তা হলো তারা জাতিকে বিভক্ত করেছে। এ বিভক্তিটা দূর করে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। আমাদের মতামত ভিন্ন থাকতেই পারে, গণতান্ত্রিক দেশে এটা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঐক্যটা জরুরি। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে হঠাতে ৬৩টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করেছি, ডান-বাম মধ্যপন্থি সব একসাথে। সেদিক থেকে আমরা বলব, অনেকটা কাজ হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে একটা চূড়ান্ত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে। এখন আমাদের যেটা দরকার, তা হলো এ সরকার একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে, একটা লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে, যেন সবাই সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে। সংস্কারের নামে সব সেক্টরে হাত দেয়ার দরকার নেই। সেটা নির্বাচিত পার্লামেন্ট করবে। আওয়ামী লীগ যেসব লোকগুলোকে নিয়োগ দিয়েছিল, তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ লোক নিয়োগ করা, বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা। তাহলেই নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।

রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করা ছেড়েছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে পরিষ্কার নির্দেশ দেয়া আছে, কখনোই কোনো নিয়ন্ত্রণ করা বা প্রসাশনের কারো ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করার মধ্যে আমরা নেই। এমন কথা যদি কোনো অফিসার বলে থাকে, তাহলে এটা তার অন্যায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ একটা কাজ খুব সফলভাবে করেছে। তা হলো জাতিকে বিভক্ত করা। এই বিভক্তি দূর করে একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন থাকবে কিন্তু ঐক্য থাকবে মৌলিক বিষয়ে। এই ঐক্য রাখার ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করেছি এবং সফলও হয়েছি।

নতুন উপদেষ্টা নিয়োগে আন্দোলনের ছাত্র-জনতা ও রাজনীতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় হয় কিনা এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, কাকে উপদেষ্টা নিয়োগ দেবে এটি নির্ভর করে প্রধান উপদেষ্টার উপর। এখানে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে বিষয়টি এমন নয়। তারা চাইলে করতেই পারে।

তিনি বলেন, আমি ফেসবুক দেখি না। সোশ্যাল মিডিয়াতে আমি ইলিটারেটর। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফেসবুক দিয়ে ভালো কাজও সম্ভব, ভয়ংকর কাজও সম্ভব। বর্তমানে সেখানে গুজব ছড়ানোর প্রবণতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের যে অর্জন সেই অর্জনকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কিছু ব্যক্তি চেষ্টা করছেন।

তিনি আরও বলেন, এত বড় একটি অভ্যুত্থানের পরে আমরা যদি ধৈর্য না ধরি তাহলে তো চলবে না। জনগণ এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন সেগুলো করা দরকার বলে আমরা মনে করি। আমি বাসায় এসেই খোঁজখবর নিয়েছি যে এখানে আলুর দাম কত, সবজির দাম কত, চালের দাম কত। সবকিছুর দাম অনেক বেড়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের বাসায় একজন দিদি আছেন যিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেন। তিনি আমাকে বললেন, আগে চালের দাম ছিল ৬০ টাকা, এখন হয়েছে ৭০ টাকা। এটা আমাদের সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টকর। আমার মনে হয় সরকারের এই দিকটাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে নিয়ে আসার জন্য সরকারের যা যা করণীয় সেটা করবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশে এখন সব থেকে যে জিনিসটা জরুরি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু একটি নির্বাচন। তার আগে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য উপযোগী একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।

এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা যুবদল সভাপতি চৌধুরী মহেবুল্লাহ আবু নুর, সদর থানার সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ অন্যান্য নেতারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

আ’লীগের ১৭ বছরের জঞ্জাল ১৭ মাসেও সরানো সম্ভব না : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১২:৫৮:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ১৭ বছরে দেশে যে পারিমাণ জঞ্জাল তৈরি করে গেছে, তা সরানো ১৭ দিনে সম্ভব না, ১৭ মাসেও সম্ভব না। এজন্য সময় প্রয়োজন। তাই জাতি হিসেবে আমাদের এখন সহনশীল হতে হবে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের পর কালিবাড়ির নিজ বাস ভবনে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এখন যেটা মনে করি এবং এখন যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার জাতি হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হলে চলবে না, আমাদের সহনশীল হতে হবে। ১৭ বছরে একটা জঞ্জাল, একটা গার্বেজ তৈরি হয়েছে এটা সত্যি কথা বলতে ১৭ দিনেও সম্ভব না, ১৭ মাসেও না। তাদের সময় দিতে হবে। তাদের প্রধান যে দায়িত্ব আমরা বারবার বলছি, সব সংস্কারে তাদের হাত দেওয়ার খুব বেশি প্রয়োজন নেই। নির্বাচিত যে পার্লামেন্ট আসবে তারা সে কাজগুলো করবে। এই সরকারের দায়িত্ব হবে নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সকলে যেন ভোট দিতে পারে। সকলে যেন অংশ নিতে পারে। আর ভোটের যে সিস্টেম আওয়ামী লীগ করে গেছে সেগুলো নির্মূল করা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার যে কাজটা সফলভাবে করেছে, তা হলো তারা জাতিকে বিভক্ত করেছে। এ বিভক্তিটা দূর করে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। আমাদের মতামত ভিন্ন থাকতেই পারে, গণতান্ত্রিক দেশে এটা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঐক্যটা জরুরি। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে হঠাতে ৬৩টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করেছি, ডান-বাম মধ্যপন্থি সব একসাথে। সেদিক থেকে আমরা বলব, অনেকটা কাজ হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে একটা চূড়ান্ত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে। এখন আমাদের যেটা দরকার, তা হলো এ সরকার একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে, একটা লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে, যেন সবাই সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে। সংস্কারের নামে সব সেক্টরে হাত দেয়ার দরকার নেই। সেটা নির্বাচিত পার্লামেন্ট করবে। আওয়ামী লীগ যেসব লোকগুলোকে নিয়োগ দিয়েছিল, তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ লোক নিয়োগ করা, বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা। তাহলেই নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।

রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করা ছেড়েছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে পরিষ্কার নির্দেশ দেয়া আছে, কখনোই কোনো নিয়ন্ত্রণ করা বা প্রসাশনের কারো ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করার মধ্যে আমরা নেই। এমন কথা যদি কোনো অফিসার বলে থাকে, তাহলে এটা তার অন্যায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ একটা কাজ খুব সফলভাবে করেছে। তা হলো জাতিকে বিভক্ত করা। এই বিভক্তি দূর করে একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন থাকবে কিন্তু ঐক্য থাকবে মৌলিক বিষয়ে। এই ঐক্য রাখার ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করেছি এবং সফলও হয়েছি।

নতুন উপদেষ্টা নিয়োগে আন্দোলনের ছাত্র-জনতা ও রাজনীতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় হয় কিনা এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, কাকে উপদেষ্টা নিয়োগ দেবে এটি নির্ভর করে প্রধান উপদেষ্টার উপর। এখানে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে বিষয়টি এমন নয়। তারা চাইলে করতেই পারে।

তিনি বলেন, আমি ফেসবুক দেখি না। সোশ্যাল মিডিয়াতে আমি ইলিটারেটর। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফেসবুক দিয়ে ভালো কাজও সম্ভব, ভয়ংকর কাজও সম্ভব। বর্তমানে সেখানে গুজব ছড়ানোর প্রবণতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের যে অর্জন সেই অর্জনকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কিছু ব্যক্তি চেষ্টা করছেন।

তিনি আরও বলেন, এত বড় একটি অভ্যুত্থানের পরে আমরা যদি ধৈর্য না ধরি তাহলে তো চলবে না। জনগণ এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন সেগুলো করা দরকার বলে আমরা মনে করি। আমি বাসায় এসেই খোঁজখবর নিয়েছি যে এখানে আলুর দাম কত, সবজির দাম কত, চালের দাম কত। সবকিছুর দাম অনেক বেড়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের বাসায় একজন দিদি আছেন যিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেন। তিনি আমাকে বললেন, আগে চালের দাম ছিল ৬০ টাকা, এখন হয়েছে ৭০ টাকা। এটা আমাদের সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টকর। আমার মনে হয় সরকারের এই দিকটাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে নিয়ে আসার জন্য সরকারের যা যা করণীয় সেটা করবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশে এখন সব থেকে যে জিনিসটা জরুরি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু একটি নির্বাচন। তার আগে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য উপযোগী একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।

এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা যুবদল সভাপতি চৌধুরী মহেবুল্লাহ আবু নুর, সদর থানার সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ অন্যান্য নেতারা।