Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা তো মাত্র দুজনের রূপকথার কাহিনী শুনেছি: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা পাচার ও লুট হচ্ছে, ব্যাংক শূন্য হচ্ছে। আমরা তো শুধু দুজনের কথা শুনেছি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং পুলিশ প্রধান। এটা তো শুধু তাদের রূপকথার কাহিনী। এদের মতো আরও যারা সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করেছে, গুম-খুনে লিপ্ত ছিলেন তাদের কাহিনী তো আমরা জানি না। আমরা না জানলেও কথাগুলো মানুষের কাছে আছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা পরিষদের উদ্যোগে আহবাব চৌধুরী খোকনের সম্পাদনায় ‘জিয়াউর রহমান অনন্য রাষ্ট্রনায়ক’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ এবং সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ যে এতকিছু করেছে এটা কি প্রধানমন্ত্রী জানতেন না? আওয়ামী লীগ সরকার কি কিছু জানতো না? রাষ্ট্রের যারা গোয়েন্দা বাহিনী রয়েছে তারা তো প্রধানমন্ত্রীর কব্জায়। শেখ হাসিনা যদি আমেরিকায় যায় সেখানে আন্দোলন হলে সেই ছবিগুলো তুলে রাখা হয় এবং পরবর্তীকালে সে আন্দোলনকারী বাংলাদেশে এলে এয়ারপোর্টে গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা লন্ডনে গিয়েছিলেন, সেখানে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে। সেই ছবিগুলো গোয়েন্দাদের কাছে দেওয়া হয়েছে, আন্দোলনকারীরা যখনই বাড়িতে আসেন তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়েছে। গ্রেফতারও করেছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশ থেকে যে লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, লুট হচ্ছে, ব্যাংক শূন্য হচ্ছে, রাজকোষ শূন্য হচ্ছে, আমরা তো শুধু দুজনের কথা শুনেছি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং পুলিশপ্রধান। তাদের যে রূপকথার কাহিনী শুনেছি, এ রকম আরও যারা সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করেছে, গুম-খুন এবং নানান অত্যাচারে লিপ্ত ছিল, তাদের কাহিনী তো আমরা জানি না। আমরা না জানলেও কথাগুলো তো মানুষের কাছে আছে।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) অন্তরে হচ্ছে মানুষকে নিপীড়ন করা ও ক্ষমতাকে স্থায়ী করে রাজত্ব কায়েম করা। এজন্য তারা উদারতাকে পছন্দ করে না। তাদের মনের মধ্যে বিদ্বেষ। এ জন্য তারা জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি বিদ্বেষ, তারেক জিয়ার প্রতি বিদ্বেষ দেখায়।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যে গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ নন, সেটি তারা প্রমাণ করছে। রাষ্ট্র পরিচালনা করার জন্য ওনার মধ্যে কোন নীতি-নৈতিকতা এবং জনগণের কাছে অঙ্গীকার—এরকম কিছুই নেই। তিনি রাজনীতিকে একটা প্লট মনে করেন, প্রতারণা মনে করেন। তিনি জনগণের কাছে অনেক ওয়াদা করেন, কিন্তু সেটি না রক্ষা করাকেই রাজনীতি মনে করেন।

রিজভী বলেন, জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের দেড় লাখ বাড়ি-ঘর তছনছ হয়ে গেছে। ১৬ জন মানুষ মারা গেছে। প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে দৃষ্টি যাতে না যায়, সেজন্য তিনি (শেখ হাসিনা) পরশুদিন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটা বাজে কথা বলেছেন। ওনার মনের মধ্যে থাকা যে প্রতিহিংসা এবং ক্ষোভ রয়েছে, সেগুলো এমনই ঘূর্ণিঝড় তৈরি করে, এটা প্রকাশ করার জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে গেছেন। জনগণ জলোচ্ছ্বাসে বাঁচলো কি মরলো এটুকু খেয়ালও ওনার নেই। ওনার টার্গেট হলো যেকোনো মুহূর্তে, যে কোনো অবস্থাতে জিয়া পরিবারকে আক্রমণ করা। ঘূর্ণিঝড়ে মানুষকে আশ্রয় দেওয়া, সাহায্য করা, খাবার দেওয়া এগুলোর ক্ষেত্রে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, এ সরকার কত যে অপকর্ম করেছে, কত যে নিষ্ঠুরতা করেছে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যাকেই তারা প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেছে, তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এ সরকার নিজেদের লোকগুলোকে অর্থ-বিত্তে আঙুল খুলে কলা গাছ করার জন্য নানা ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আজকে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বলে তাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই উন্নয়ন লোক দেখানো সেটা এখন টের পাওয়া যাচ্ছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্রদল নেতা ডা: তৌহিদুর রহমান আউয়াল সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ডিইউজের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বকুল প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে আবারও ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

আমরা তো মাত্র দুজনের রূপকথার কাহিনী শুনেছি: রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৯:৪০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা পাচার ও লুট হচ্ছে, ব্যাংক শূন্য হচ্ছে। আমরা তো শুধু দুজনের কথা শুনেছি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং পুলিশ প্রধান। এটা তো শুধু তাদের রূপকথার কাহিনী। এদের মতো আরও যারা সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করেছে, গুম-খুনে লিপ্ত ছিলেন তাদের কাহিনী তো আমরা জানি না। আমরা না জানলেও কথাগুলো মানুষের কাছে আছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা পরিষদের উদ্যোগে আহবাব চৌধুরী খোকনের সম্পাদনায় ‘জিয়াউর রহমান অনন্য রাষ্ট্রনায়ক’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ এবং সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ যে এতকিছু করেছে এটা কি প্রধানমন্ত্রী জানতেন না? আওয়ামী লীগ সরকার কি কিছু জানতো না? রাষ্ট্রের যারা গোয়েন্দা বাহিনী রয়েছে তারা তো প্রধানমন্ত্রীর কব্জায়। শেখ হাসিনা যদি আমেরিকায় যায় সেখানে আন্দোলন হলে সেই ছবিগুলো তুলে রাখা হয় এবং পরবর্তীকালে সে আন্দোলনকারী বাংলাদেশে এলে এয়ারপোর্টে গ্রেফতার করে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা লন্ডনে গিয়েছিলেন, সেখানে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে। সেই ছবিগুলো গোয়েন্দাদের কাছে দেওয়া হয়েছে, আন্দোলনকারীরা যখনই বাড়িতে আসেন তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়েছে। গ্রেফতারও করেছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশ থেকে যে লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, লুট হচ্ছে, ব্যাংক শূন্য হচ্ছে, রাজকোষ শূন্য হচ্ছে, আমরা তো শুধু দুজনের কথা শুনেছি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং পুলিশপ্রধান। তাদের যে রূপকথার কাহিনী শুনেছি, এ রকম আরও যারা সরকারকে নানাভাবে সাহায্য করেছে, গুম-খুন এবং নানান অত্যাচারে লিপ্ত ছিল, তাদের কাহিনী তো আমরা জানি না। আমরা না জানলেও কথাগুলো তো মানুষের কাছে আছে।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) অন্তরে হচ্ছে মানুষকে নিপীড়ন করা ও ক্ষমতাকে স্থায়ী করে রাজত্ব কায়েম করা। এজন্য তারা উদারতাকে পছন্দ করে না। তাদের মনের মধ্যে বিদ্বেষ। এ জন্য তারা জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি বিদ্বেষ, তারেক জিয়ার প্রতি বিদ্বেষ দেখায়।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যে গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ নন, সেটি তারা প্রমাণ করছে। রাষ্ট্র পরিচালনা করার জন্য ওনার মধ্যে কোন নীতি-নৈতিকতা এবং জনগণের কাছে অঙ্গীকার—এরকম কিছুই নেই। তিনি রাজনীতিকে একটা প্লট মনে করেন, প্রতারণা মনে করেন। তিনি জনগণের কাছে অনেক ওয়াদা করেন, কিন্তু সেটি না রক্ষা করাকেই রাজনীতি মনে করেন।

রিজভী বলেন, জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের দেড় লাখ বাড়ি-ঘর তছনছ হয়ে গেছে। ১৬ জন মানুষ মারা গেছে। প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে দৃষ্টি যাতে না যায়, সেজন্য তিনি (শেখ হাসিনা) পরশুদিন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটা বাজে কথা বলেছেন। ওনার মনের মধ্যে থাকা যে প্রতিহিংসা এবং ক্ষোভ রয়েছে, সেগুলো এমনই ঘূর্ণিঝড় তৈরি করে, এটা প্রকাশ করার জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে গেছেন। জনগণ জলোচ্ছ্বাসে বাঁচলো কি মরলো এটুকু খেয়ালও ওনার নেই। ওনার টার্গেট হলো যেকোনো মুহূর্তে, যে কোনো অবস্থাতে জিয়া পরিবারকে আক্রমণ করা। ঘূর্ণিঝড়ে মানুষকে আশ্রয় দেওয়া, সাহায্য করা, খাবার দেওয়া এগুলোর ক্ষেত্রে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, এ সরকার কত যে অপকর্ম করেছে, কত যে নিষ্ঠুরতা করেছে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যাকেই তারা প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেছে, তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এ সরকার নিজেদের লোকগুলোকে অর্থ-বিত্তে আঙুল খুলে কলা গাছ করার জন্য নানা ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আজকে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বলে তাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই উন্নয়ন লোক দেখানো সেটা এখন টের পাওয়া যাচ্ছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্রদল নেতা ডা: তৌহিদুর রহমান আউয়াল সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, তাঁতীদলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ডিইউজের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বকুল প্রমুখ।