Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। তবে কেউ আক্রমণ করলে সমুচিত জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি আমাদের থাকবে।

সোমবার (২০ মার্চ) বিকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবনির্মিত ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ সাবমেরিন ঘাঁটির কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারের পেকুয়ায় নবনির্মিত ঘাঁটির সঙ্গে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

তিনি বলেন, তবে, যদি কখনও তেমন পরিবেশ-পরিস্থিতি হয় তাহলে যেন আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি সেইভাবে আমাদেরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং সেইভাবেই আমরা আমাদের বাহিনীগুলোকে তৈরি করে দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌবাহিনীতে আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজন করা হয়েছে। সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের নতুন মাইলফলক হলো এ সাবমেরিন ঘাঁটি।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগই উদ্যোগ নেয় দেশের সমুদ্রসীমায় কীভাবে অধিকার আদায় করা যায়। জিয়া-এরশাদ কেউই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি। পরবর্তীকালে মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই বঙ্গোপসাগরের বিশাল অংশে আমরা আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় দেশের ভূখণ্ড অরক্ষিত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ’৬৬ সালের ৬ দফায় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের নৌবাহিনীর ঘাঁটি চট্টগ্রামে করার দাবি জানিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নৌবাহিনীর বিশাল অবদান রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার নৌবাহিনীকে একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়াও আধুনিকভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে সব বাহিনীকে। এরইমধ্যে ৩১টি যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সাবমেরিন ঘাঁটিতে ৬টি সাবমেরিন ও ৮টি যুদ্ধজাহাজ নোঙর করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। যুদ্ধে নৌবাহিনীর বড় ভূমিকা রয়েছে।

জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। তবে আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক, তারা সকল ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করুক সেটাই আমরা চাই।

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে সক্ষম করে গড়া হচ্ছে

তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশাল ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সেখানে কর্তব্য পালনে তারা যেন কোনভাবেই পিছিয়ে না থাকে সেভাবেই আমরা এই বাহিনীগুলোকে প্রস্তুত করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন-সেই ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, এই সমুদ্র সীমায় আমাদের যে বিশাল সম্পদ রয়েছে তা যেনও আমাদের অর্থনীতিতে কাজে লাগে সেজন্য ‘ব্লু ইকোনমি’ নীতি বাস্তবায়ন করছে সরকার। তাছাড়া, এক্ষেত্রে আমাদের পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা থেকে শুরু করে অনেক সুযোগ রয়েছে কাজ করার।

সরকারপ্রধান দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করে বলেন, বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সুরক্ষিত রাখতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও জোরালো হবে।

বর্তমানে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণ বেড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে হবে, সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও হবে স্মার্ট।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব বাধা পেরিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এরই মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

এ সময় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় থাকবে বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি থেকে নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।

নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটির প্রধান কমোডর এম. আতিকুর রহমানের কাছে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন। এরপরই ঘাঁটিতে প্রথমবারের মতো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সাবমেরিন ঘাঁটির ওপর একটি সংক্ষিপ্ত অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনও প্রদর্শিত হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৩:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। তবে কেউ আক্রমণ করলে সমুচিত জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি আমাদের থাকবে।

সোমবার (২০ মার্চ) বিকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবনির্মিত ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ সাবমেরিন ঘাঁটির কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারের পেকুয়ায় নবনির্মিত ঘাঁটির সঙ্গে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

তিনি বলেন, তবে, যদি কখনও তেমন পরিবেশ-পরিস্থিতি হয় তাহলে যেন আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি সেইভাবে আমাদেরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং সেইভাবেই আমরা আমাদের বাহিনীগুলোকে তৈরি করে দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌবাহিনীতে আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজন করা হয়েছে। সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের নতুন মাইলফলক হলো এ সাবমেরিন ঘাঁটি।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগই উদ্যোগ নেয় দেশের সমুদ্রসীমায় কীভাবে অধিকার আদায় করা যায়। জিয়া-এরশাদ কেউই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি। পরবর্তীকালে মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই বঙ্গোপসাগরের বিশাল অংশে আমরা আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় দেশের ভূখণ্ড অরক্ষিত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ’৬৬ সালের ৬ দফায় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের নৌবাহিনীর ঘাঁটি চট্টগ্রামে করার দাবি জানিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নৌবাহিনীর বিশাল অবদান রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার নৌবাহিনীকে একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়াও আধুনিকভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে সব বাহিনীকে। এরইমধ্যে ৩১টি যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সাবমেরিন ঘাঁটিতে ৬টি সাবমেরিন ও ৮টি যুদ্ধজাহাজ নোঙর করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। যুদ্ধে নৌবাহিনীর বড় ভূমিকা রয়েছে।

জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। তবে আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক, তারা সকল ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করুক সেটাই আমরা চাই।

দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে সক্ষম করে গড়া হচ্ছে

তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশাল ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সেখানে কর্তব্য পালনে তারা যেন কোনভাবেই পিছিয়ে না থাকে সেভাবেই আমরা এই বাহিনীগুলোকে প্রস্তুত করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন-সেই ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, এই সমুদ্র সীমায় আমাদের যে বিশাল সম্পদ রয়েছে তা যেনও আমাদের অর্থনীতিতে কাজে লাগে সেজন্য ‘ব্লু ইকোনমি’ নীতি বাস্তবায়ন করছে সরকার। তাছাড়া, এক্ষেত্রে আমাদের পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা থেকে শুরু করে অনেক সুযোগ রয়েছে কাজ করার।

সরকারপ্রধান দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করে বলেন, বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সুরক্ষিত রাখতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও জোরালো হবে।

বর্তমানে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণ বেড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে হবে, সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও হবে স্মার্ট।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব বাধা পেরিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এরই মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

এ সময় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় থাকবে বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি থেকে নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।

নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটির প্রধান কমোডর এম. আতিকুর রহমানের কাছে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন। এরপরই ঘাঁটিতে প্রথমবারের মতো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সাবমেরিন ঘাঁটির ওপর একটি সংক্ষিপ্ত অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনও প্রদর্শিত হয়।