দশমিনা উপজেলা প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্ট পর্যন্ত আহত ও নিহতের সব ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হবে না।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জুলাই আন্দোলনে নিহত ঢাকা কবি নজরুল কলেজের ছাত্র জিহাদ মোল্লার কবর জিয়ারত শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় কালে তিনি এ কথা বলেন।
ভোর ৪টায় দশমিনা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন শাহাবুদ্দিন মাস্টারের বাড়ি পৌঁছান হাসনাত। তিনি শাহাবুদ্দিন মাস্টারেরে ছোট মেয়েকে বিয়ের পর এই প্রথম শ্বশুরবাড়ি আসেন। পরে বেলা ১১টায় ছাত্র আন্দোলনে শহীদ জিহাদের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং জিহাদের কবর জিয়ারত করেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে, সেসব ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে পারে না। আমরা ওই হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য জনগণকে নিয়ে পুনরায় যা করার করব। ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর বর্তমান দেশ গড়তে সময় লাগবে। আমরাও চাই নির্বাচনের জন্য একটি সুষ্ঠু, সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এতে সময় লাগবে। আহতদের সুচিকিৎসা ও নিহতদের জন্য জুলাই শহীদ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’ হাসনাত আব্দুল্লাহ সরকারের ইতিবাচক বিভিন্ন কাজের প্রশংসাও করেন।
আ’লীগ ও তার দোসরদের বিচার না করে নির্বাচন দিলে প্রতিহত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পাটি এই ফ্যাসিজমকে ফ্যাসিলেটেড করেছেন। তাদের বিচার প্রকৃয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে ছাত্র-জনতা সিদ্ধান্ত নিবে তারা নির্বাচনে আসবেন কি আসবেন না। তবে বিচারের আগে তাদের নির্বাচনকে স্বাগত জানাবো না। প্রয়োজনে আমরা সেটাকে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিহত করবো।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের জন্য ফান্ড গঠন করা হয়েছে। তবে আহতদের ব্যাপারে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকার স্কিল ডেভলপমেন্টের মাধ্যমে ৯ লাখ মানুষের কর্ম সংস্থানের উদ্দ্যোগ নিয়েছেন, সেখানে আহতদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
তিনি আহতদের পুনর্বাসনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিওদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসা পাওয়ার আন্দোলনটা আমাদের জন্য লজ্জার।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা শুনেছি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা যারা জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হয়েছে তাদের অনেকেই আহত হিসেবে তালিকাভুক্তি করেছেন এবং তারা এক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। এরকম হয়ে থাকলে আমি সরকারকে আহ্বান জানাবো সেটাকে খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার, যাতে আহতদের রাস্তায় নেমে আসতে না হয়।
বিএনপির দ্রুত নির্বাচন চাওয়ার ব্যাপারে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শুধুমাত্র একটি ভোটের অধিকারের জন্য হয়নি, বিগত ১৬ বছর বিএনপি সব থেকে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন এটা সত্যি, বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা সেগুলোর ব্যাপারে আমরা কিন্তু দেখেছি বিএনপিকে অনাস্থা প্রকাশ করতে। এখন নির্বাচন হচ্ছে সংস্কারের একটি প্রক্রিয়া, যখন সংস্কারটি সম্পন্ন হবে তখন যে নির্বাচন হবে সেটা গণমানুষের নির্বাচন হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে।
তিনি আরো বলেন, সরকারের ভাল কাজের ব্যাপারে আমরা সহযোগিতা করবো আর যেখানে ভুল করবে সেখানে সমালোচনা করবো।
এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন শহীদ জিহাদের বাবা নূরু হোসেন মোল্লা, চাচা রুহুল আমিন মোল্লা, আল-আমিন মোল্লা, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বশারসহ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।