Dhaka শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগে দেশের মানুষকে ইলিশ খাওয়াতে হবে : মৎস্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি ইলিশ রপ্তানি করা যেতে পারে। আমরাও ইলিশ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে পারি। তবে আগে আমাদের দেশের মানুষকে ইলিশ খাওয়াতে হবে। এবার জুন মাসের পরে যখন ইলিশ বাজারে আসবে, তখন যেন দামটা ঠিক থাকে—সেদিকে নজর রাখতে হবে। তা না হলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না।’

শনিবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে (বিএআরসি) ‘ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রজনন সাফল্য নিরূপণ, জাটকা সংরক্ষণ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা যদি যথেষ্ট সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি। তাহলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। আর ৯৫ ভাগ জেলেরা যদি ইলিশ ধরা বন্ধের সময় তারা না ধরেন তাহলে কেন আমরা বাকি কাজটা করতে পারবো না। জেলেরা যেখানে মাছ ধরতে যান, সেখানে দস্যুরা আক্রমণ করে। জেলেরা দস্যু না। তাদের চিহ্নিত করে ধরতে হবে। আমরা যে সহায়তা দিয়ে থাকি, সেখানে জেলেরাই যেন পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এটা এলাকাভিত্তিক করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, ইলিশ শুধু জালের কারণে নষ্ট হচ্ছে। এটা নিয়ে অভিযান চলছে, অনেক কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জে জালের কারখানা রয়েছে। সেখানে বৈধ ও অবৈধ জাল তৈরি হয়। এজন্য অবৈধ জাল তৈরি বন্ধ করতে হবে, কারখানা নয়। এক্ষেত্রে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক আন্তরিক আছেন।

তিনি বলেন, ইলিশের কৃত্রিম প্রজননের বিষয়ে এখনই আগাতে চাই না। প্রাকৃতিক সম্পদকে প্রাকৃতিক রাখাই ভালো। আমরা যদি এই মুহূর্তে সেই দিকে যাই, তাহলে আমাদের গবেষণা হারিয়ে যেতে পারে। কৃত্রিম প্রজনন আমাদের প্রাণিসম্পদের খুব বেশি উপকার করেনি। এর ক্ষতিকর প্রভাব কিন্তু ইতিমধ্যে দেখছি। এটা আমার দিক থেকে একটা সতর্কবার্তা।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, যে ১১টা দেশে ইলিশ পাওয়া যায়, তার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। তবে আমি মনে করি, ইলিশ একটা বৈশ্বিক মাছ। বিশ্বের একটা সম্পদ যেটা আমাদের কাছে আছে। ইলিশের ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করতে পারলে সারা বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে পারব। ইলিশকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে হবে।

সভায় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম মূল প্রবন্ধে বলেন, দেশে ইলিশের মোট উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও দুই বছর যাবৎ বড় আকৃতির ইলিশের সংখ্যা কমছে। এ ছাড়া দূষণের কারণে নদ–নদীতে ইলিশের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমছে। সেই সঙ্গে কারেন্ট জালসহ ক্ষতিকর জাল ইলিশ মাছের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ইলিশ গবেষণায় আরও জোর দেওয়ার তাগিদ দেন ড. আশরাফুল আলম। তিনি জানান, জাটকা নিধন বন্ধ করতে পারলে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত ইলিশ উৎপাদন সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুর রউফ প্রমুখ।

আবহাওয়া

বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগৈলঝাড়ায় ছাতার কারিগরদের ব্যাপক কদর

আগে দেশের মানুষকে ইলিশ খাওয়াতে হবে : মৎস্য উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৯:১৮:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি ইলিশ রপ্তানি করা যেতে পারে। আমরাও ইলিশ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে পারি। তবে আগে আমাদের দেশের মানুষকে ইলিশ খাওয়াতে হবে। এবার জুন মাসের পরে যখন ইলিশ বাজারে আসবে, তখন যেন দামটা ঠিক থাকে—সেদিকে নজর রাখতে হবে। তা না হলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না।’

শনিবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে (বিএআরসি) ‘ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রজনন সাফল্য নিরূপণ, জাটকা সংরক্ষণ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা যদি যথেষ্ট সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি। তাহলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। আর ৯৫ ভাগ জেলেরা যদি ইলিশ ধরা বন্ধের সময় তারা না ধরেন তাহলে কেন আমরা বাকি কাজটা করতে পারবো না। জেলেরা যেখানে মাছ ধরতে যান, সেখানে দস্যুরা আক্রমণ করে। জেলেরা দস্যু না। তাদের চিহ্নিত করে ধরতে হবে। আমরা যে সহায়তা দিয়ে থাকি, সেখানে জেলেরাই যেন পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এটা এলাকাভিত্তিক করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, ইলিশ শুধু জালের কারণে নষ্ট হচ্ছে। এটা নিয়ে অভিযান চলছে, অনেক কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জে জালের কারখানা রয়েছে। সেখানে বৈধ ও অবৈধ জাল তৈরি হয়। এজন্য অবৈধ জাল তৈরি বন্ধ করতে হবে, কারখানা নয়। এক্ষেত্রে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক আন্তরিক আছেন।

তিনি বলেন, ইলিশের কৃত্রিম প্রজননের বিষয়ে এখনই আগাতে চাই না। প্রাকৃতিক সম্পদকে প্রাকৃতিক রাখাই ভালো। আমরা যদি এই মুহূর্তে সেই দিকে যাই, তাহলে আমাদের গবেষণা হারিয়ে যেতে পারে। কৃত্রিম প্রজনন আমাদের প্রাণিসম্পদের খুব বেশি উপকার করেনি। এর ক্ষতিকর প্রভাব কিন্তু ইতিমধ্যে দেখছি। এটা আমার দিক থেকে একটা সতর্কবার্তা।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, যে ১১টা দেশে ইলিশ পাওয়া যায়, তার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। তবে আমি মনে করি, ইলিশ একটা বৈশ্বিক মাছ। বিশ্বের একটা সম্পদ যেটা আমাদের কাছে আছে। ইলিশের ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করতে পারলে সারা বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে পারব। ইলিশকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে হবে।

সভায় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম মূল প্রবন্ধে বলেন, দেশে ইলিশের মোট উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও দুই বছর যাবৎ বড় আকৃতির ইলিশের সংখ্যা কমছে। এ ছাড়া দূষণের কারণে নদ–নদীতে ইলিশের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমছে। সেই সঙ্গে কারেন্ট জালসহ ক্ষতিকর জাল ইলিশ মাছের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

ইলিশ গবেষণায় আরও জোর দেওয়ার তাগিদ দেন ড. আশরাফুল আলম। তিনি জানান, জাটকা নিধন বন্ধ করতে পারলে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত ইলিশ উৎপাদন সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুর রউফ প্রমুখ।