Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগামী নির্বাচনে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলকে সামনে রেখে কিছু হবে না : সারজিস আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আগামী নির্বাচনে কোনও নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তিকে সামনে রেখে কিছু হবে না। চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে সবাই ঐক্যবদ্ধ। কারও অপপ্রচার বা প্রপাগাণ্ডায় কিছু যায়-আসে না।

শনিবার (২৮ জুন) বিকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের’ দাবিতে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত মহাসমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিগত দিনে পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিতদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আগামীতে দেশ, জনগণ ও খুনিদের বিচার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। আমরা এক থাকলে হাসিনার মতো কেউ আর আসতে পারবে না। যত বড় খুনিই হোক তাদের প্রতিহত করা হবে। তিনি সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন।

সারজিসের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের লোকজন বিদেশে বসে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছে। দকে কারও প্রপাগাণ্ডায় আমাদের কিছু আসে যায় না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

সারজিস বলেন, ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা যারা সামনে ছিলাম, কোনো দল বা ব্যক্তিকে সামনে রেখে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। জনগণের সামনে আমাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক সমাবেশ করব, কিন্তু জনগণের ভোগান্তি যেন না হয়, সেটা মনে রাখতে হবে। আগেও এখানে সমাবেশে হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি সমাবেশ শেষ করে ময়লা পরিষ্কার করা হয়েছে। এই বাংলাদেশই আমরা চেয়েছিলাম।

আগামী জাতীয় নির্বাচন যেন পিআর পদ্ধতিতে হয়, সেই দাবি নিয়ে জোরেজোরে জাগতে হবে বলেও এসময় উল্লেখ করেন সারজিস।

তিনি বলেন, আমাদের ভাইয়েরা যে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার না হয়। আগামীর বাংলাদেশে কেউ যেন টার্গেট কিলিংয়ের শিকার না হয়। আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকবে, ততদিন ওই খুনি হাসিনা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।

এনসিপি উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধতা থাকলে ভবিষ্যতে কোনো সরকারই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকবো, ততদিন এই বাংলাদেশে আর কোনো হাসিনা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।

সারজিস আলম তার বক্তব্যে বলেন, আমার সামনে আজ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে যে, লাখো ছাত্র জনতার উপস্থিতি, তারাই ছিল আমাদের জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোদ্ধা।

তিনি বলেন, আমরা যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ওই স্মৃতিকে নিজেদের বুকে ধারণ করে শহীদের যে আত্মত্যাগ, জুলাই যোদ্ধাদের যে রক্ত দেওয়া, সেগুলোকে আমরা যতক্ষণ ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে চলবো, ততক্ষণ কারো প্রপাগান্ডা বা বিদেশি এজেন্টের চক্রান্তে আমাদের কিছু আসে যায় না।

সারজিস জোর দিয়ে বলেন, এই ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা যারা অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধা ছিলাম, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট কোনো নামে, কোনো ব্যক্তিকে সামনে রেখে, কোনো দলকে সামনে রেখে এই বাংলাদেশে দাঁড়াতে পারবে না।

সারজিস ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের শৃঙ্খলার প্রশংসা করে বলেন, আজকে যখন আমি আসছিলাম, রাস্তার আশেপাশের প্রত্যেকটি মোড়ে আমার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ট্রাফিকের কাজ করছে। এটাই হচ্ছে দৃষ্টান্ত যে আমরা কাজ করব। আমাদের রাজনৈতিক সমাবেশ করব। একইসঙ্গে জনগণের যে হয়রানি, সেটাও আমাদের মাথায় থাকবে।

তিনি পূর্ববর্তী সমাবেশের পর মাঠ পরিষ্কার করার উদাহরণ টেনে বলেন, এটাই হচ্ছে আগামী বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত যে, আমাদের যারা সাময়িক যদি কোনো সমস্যা হয়, আমরা আবার ঐক্যবদ্ধভাবে সেই সমস্যার সমাধান করব।

তিনি বলেন, আমার মাদ্রাসার অসংখ্য ভাই এই টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন। আগামীর বাংলাদেশে কেউ যেন কাউকে ট্যাগিং করে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার না করতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সারজিস আলম সংস্কার ও বিচার-কে তাদের লড়াইয়ের মূলভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য ‘পিয়ার’ ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই যে পিয়ার, আগামী বাংলাদেশের সংসদে আমরা যদি আসলেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব চাই, তাহলে আগামীতে এই পিয়ার নিয়ে আমাদের আরো জোরদার কাজ করতে হবে।

এনসিপির পক্ষ থেকে তিনি অঙ্গীকার করে বলেন, বাংলাদেশের প্রশ্নে, জনগণের প্রশ্নে আপনারা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, আপনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘২৪-এর মতো এনসিপি আবারও আগামীর বাংলাদেশে লড়াই করবে।

সারজিস আলম বলেন, আমাদের এই বাংলাদেশের ‘২৪ এর অভ্যুত্থানের স্পিরিটের প্রশ্নে, ওই খুনিদের বিচারের প্রশ্নে, রাষ্ট্রের সংস্কারের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাব। আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকব, ততদিন এই বাংলাদেশে আর কোনো হাসিনা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ আপনাদের সাথে আমাদের আবারো দেখা হবে রাজপথের লড়াইয়ে অথবা বিজয়ে। ততদিন পর্যন্ত সত্যের সাথে থাকবেন, ন্যায়ের সাথে থাকবেন। যত বড় খুনি, যত বড় সাহসী, যত বড় নেতাই ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার চেষ্টা করুক না কেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করব ইনশাআল্লাহ জিন্দাবাদ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

আগামী নির্বাচনে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলকে সামনে রেখে কিছু হবে না : সারজিস আলম

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আগামী নির্বাচনে কোনও নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তিকে সামনে রেখে কিছু হবে না। চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে সবাই ঐক্যবদ্ধ। কারও অপপ্রচার বা প্রপাগাণ্ডায় কিছু যায়-আসে না।

শনিবার (২৮ জুন) বিকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের’ দাবিতে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত মহাসমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিগত দিনে পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিতদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আগামীতে দেশ, জনগণ ও খুনিদের বিচার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। আমরা এক থাকলে হাসিনার মতো কেউ আর আসতে পারবে না। যত বড় খুনিই হোক তাদের প্রতিহত করা হবে। তিনি সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন।

সারজিসের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের লোকজন বিদেশে বসে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছে। দকে কারও প্রপাগাণ্ডায় আমাদের কিছু আসে যায় না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

সারজিস বলেন, ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা যারা সামনে ছিলাম, কোনো দল বা ব্যক্তিকে সামনে রেখে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। জনগণের সামনে আমাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক সমাবেশ করব, কিন্তু জনগণের ভোগান্তি যেন না হয়, সেটা মনে রাখতে হবে। আগেও এখানে সমাবেশে হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি সমাবেশ শেষ করে ময়লা পরিষ্কার করা হয়েছে। এই বাংলাদেশই আমরা চেয়েছিলাম।

আগামী জাতীয় নির্বাচন যেন পিআর পদ্ধতিতে হয়, সেই দাবি নিয়ে জোরেজোরে জাগতে হবে বলেও এসময় উল্লেখ করেন সারজিস।

তিনি বলেন, আমাদের ভাইয়েরা যে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার না হয়। আগামীর বাংলাদেশে কেউ যেন টার্গেট কিলিংয়ের শিকার না হয়। আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকবে, ততদিন ওই খুনি হাসিনা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।

এনসিপি উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধতা থাকলে ভবিষ্যতে কোনো সরকারই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকবো, ততদিন এই বাংলাদেশে আর কোনো হাসিনা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।

সারজিস আলম তার বক্তব্যে বলেন, আমার সামনে আজ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে যে, লাখো ছাত্র জনতার উপস্থিতি, তারাই ছিল আমাদের জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোদ্ধা।

তিনি বলেন, আমরা যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ওই স্মৃতিকে নিজেদের বুকে ধারণ করে শহীদের যে আত্মত্যাগ, জুলাই যোদ্ধাদের যে রক্ত দেওয়া, সেগুলোকে আমরা যতক্ষণ ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে চলবো, ততক্ষণ কারো প্রপাগান্ডা বা বিদেশি এজেন্টের চক্রান্তে আমাদের কিছু আসে যায় না।

সারজিস জোর দিয়ে বলেন, এই ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা যারা অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধা ছিলাম, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট কোনো নামে, কোনো ব্যক্তিকে সামনে রেখে, কোনো দলকে সামনে রেখে এই বাংলাদেশে দাঁড়াতে পারবে না।

সারজিস ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের শৃঙ্খলার প্রশংসা করে বলেন, আজকে যখন আমি আসছিলাম, রাস্তার আশেপাশের প্রত্যেকটি মোড়ে আমার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ট্রাফিকের কাজ করছে। এটাই হচ্ছে দৃষ্টান্ত যে আমরা কাজ করব। আমাদের রাজনৈতিক সমাবেশ করব। একইসঙ্গে জনগণের যে হয়রানি, সেটাও আমাদের মাথায় থাকবে।

তিনি পূর্ববর্তী সমাবেশের পর মাঠ পরিষ্কার করার উদাহরণ টেনে বলেন, এটাই হচ্ছে আগামী বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত যে, আমাদের যারা সাময়িক যদি কোনো সমস্যা হয়, আমরা আবার ঐক্যবদ্ধভাবে সেই সমস্যার সমাধান করব।

তিনি বলেন, আমার মাদ্রাসার অসংখ্য ভাই এই টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন। আগামীর বাংলাদেশে কেউ যেন কাউকে ট্যাগিং করে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার না করতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সারজিস আলম সংস্কার ও বিচার-কে তাদের লড়াইয়ের মূলভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য ‘পিয়ার’ ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই যে পিয়ার, আগামী বাংলাদেশের সংসদে আমরা যদি আসলেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব চাই, তাহলে আগামীতে এই পিয়ার নিয়ে আমাদের আরো জোরদার কাজ করতে হবে।

এনসিপির পক্ষ থেকে তিনি অঙ্গীকার করে বলেন, বাংলাদেশের প্রশ্নে, জনগণের প্রশ্নে আপনারা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, আপনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘২৪-এর মতো এনসিপি আবারও আগামীর বাংলাদেশে লড়াই করবে।

সারজিস আলম বলেন, আমাদের এই বাংলাদেশের ‘২৪ এর অভ্যুত্থানের স্পিরিটের প্রশ্নে, ওই খুনিদের বিচারের প্রশ্নে, রাষ্ট্রের সংস্কারের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাব। আমরা যতদিন ঐক্যবদ্ধ থাকব, ততদিন এই বাংলাদেশে আর কোনো হাসিনা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ আপনাদের সাথে আমাদের আবারো দেখা হবে রাজপথের লড়াইয়ে অথবা বিজয়ে। ততদিন পর্যন্ত সত্যের সাথে থাকবেন, ন্যায়ের সাথে থাকবেন। যত বড় খুনি, যত বড় সাহসী, যত বড় নেতাই ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার চেষ্টা করুক না কেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করব ইনশাআল্লাহ জিন্দাবাদ।