Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ সরকারকে রুখে দিতে হবে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কৃষক-শ্রমিক-জনতার স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১ মে) মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিএনপি, শ্রমিকদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বেলা আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১১টার দিকেই ফকিরাপুল নয়াপল্টন সড়ক পূর্ণ হয়ে যায়। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পিকআপ দিয়ে করা হয় ভ্রাম্যমাণ মঞ্চ। ৪টা ৪০ মিনিটে সমাবেশ শেষ হলে শুরু হয় র‌্যালি। নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক হয়ে মগবাজার গিয়ে শেষ হয়এই র‌্যালি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সবচেয়ে কষ্টে আছে শ্রমজীবী মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ। তারা দুই বেলা খেতে পায় না। তাই নিজেদের স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে, শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে, কৃষকের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আবার সেই পুরনো কাদায় তারা আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। আবার মানুষ যেন ভোট দিতে না পারে, ভোট চুরি করে যেন ক্ষমতা আসতে পারে এবং তারা যেন আবার ক্ষমতা দখল করতে পারে, সেজন্য এখন থেকে তারা হুমকি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চায়। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার, শ্রমিকদের সরকার, কৃষকদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আজকের সমাবেশ প্রমাণ করে, বাংলাদেশ এখন জনগণের বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। আজ পহেলা মে থেকে শ্রমিক দলের সমাবেশের মধ্য দিয়ে নতুন সংগ্রাম শুরু হল। এই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদেরকে (আওয়ামী লীগ সরকার) পরাজিত করব। জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করে নতুন সরকার গঠন করব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ গোটা দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে, গণতন্ত্রগামী মানুষকে হত্যা-গুম-খুন করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে গোটা দেশকে কারাগারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে তছনছ করে এই আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারই পুনরাবৃত্তিতে আবার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে— এই লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। লড়াইয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে— আগামী দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে কিনা, দেশের মানুষ মুক্ত থাকবে কী থাকবে না। এ লড়াই আমাদের মুক্তির লড়াই, আমাদের স্বাধীনতার লড়াই, এ লড়াই দেশনেত্রীকে মুক্ত করার লড়াই। এ লড়াই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার লড়াই।

‘নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের গোলযোগ বরদাস্ত করা হবে না’-পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তাকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গোলযোগ কোথায় দেখছেন? গোলযোগ তো আপনারা সৃষ্টি করছেন। আজকে খুলনায় শ্রমিক দলের শান্তিপূর্ণ র‌্যালিতে হামলা করে পণ্ড করে দিয়েছেন। সেখান থেকে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আবার সেই পুরোনো খেলা শুরু হয়েছে। আবার তারা সেই পুরানো কায়দায় আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। ভোটার যেন ভোট দিতে না পারে, ভোট চুরি করে তারা যেন ক্ষমতায় আসতে পারে এবং আবার যেন ক্ষমতা দখল করতে পারে সেজন্য এখন থেকে হুমকি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চায়।

রাজধানীর বাইরে মানুষ যথাযথভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলন, ‘তারা ঢাকায় কিছু বিদ্যুৎ দেয়, যাতে মানুষ রাস্তায় না নামে। ঢাকার বাইরে কোনো বিদ্যুৎ নেই, শুধু লোডশেডিং আর লোডশেডিং। অথচ তারা সবসময় বলছে— বিদ্যুৎ উৎপাদন সবচেয়ে বেশি বাড়িয়েছে। এত বাড়িয়েছে যে, তাদের দলের লোকেরা সংসদীয় কমিটিতে বলছে, এত বিদ্যুৎ উৎপাদের প্রয়োজন ছিল না, কারণ এখন তা দিতে পারছে না। বেশি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে তারা চুরি ও দুর্নীতি করেছে। আজকে আবার নতুন খবর এসেছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারা এভাবে লুট করেছে। সমস্ত অর্থনীতিতে লুটেরাদের রাজত্ব কায়েম করেছে।

সভ্যতার প্রধান কারিগর শ্রমজীবী মানুষেরা বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, তারা সবচেয়ে বেশি শোষিত। তারা দুইবেলা ঠিকমতো খেতে পায় না। কারণ চাল, ডাল ও লবণসহ প্রতিটি জিনিসের দাম যে হারে বেড়েছে, তা তাদের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ক্ষমতাসীনরা মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির বলেন, আজ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা নানা কথা বলছেন। তারা তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছেন না, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মিথ্যাচার করছেন, এটা লজ্জাজনক ।

ফখরুল বলেন, আজ প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি আয় করছেন, অথচ প্রবাসীদেরই সবচেয়ে বেশি শোষণ করা হচ্ছে। এ সরকার শ্রমিকবিরোধী সরকার, কৃষকবিরোধী সরকার।

তিনি বলেন, তারা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে, শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়ে পুরো দেশকে তারা আজ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আবারও সেই একই কায়দায় নতুন করে নির্বাচন করতে চায়, কিন্তু পারবে না। এখনকার বাংলাদেশ গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, এখনকার বাংলাদেশ জনগণের বাংলাদেশ। এ শ্রমিক সমাবেশের মধ্যদিয়ে নতুন আন্দোলন শুরু হয়েছে। অচিরেই আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন হবে।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা শাহ আবু জাফর, খায়রুল কবির খোকন ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, মীর সরাফত আলী সপুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহীম, ছাত্রদল নেতা কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

আওয়ামী লীগ সরকারকে রুখে দিতে হবে : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১০:২৮:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কৃষক-শ্রমিক-জনতার স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১ মে) মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিএনপি, শ্রমিকদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বেলা আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১১টার দিকেই ফকিরাপুল নয়াপল্টন সড়ক পূর্ণ হয়ে যায়। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পিকআপ দিয়ে করা হয় ভ্রাম্যমাণ মঞ্চ। ৪টা ৪০ মিনিটে সমাবেশ শেষ হলে শুরু হয় র‌্যালি। নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক হয়ে মগবাজার গিয়ে শেষ হয়এই র‌্যালি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সবচেয়ে কষ্টে আছে শ্রমজীবী মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ। তারা দুই বেলা খেতে পায় না। তাই নিজেদের স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে, শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে, কৃষকের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আবার সেই পুরনো কাদায় তারা আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। আবার মানুষ যেন ভোট দিতে না পারে, ভোট চুরি করে যেন ক্ষমতা আসতে পারে এবং তারা যেন আবার ক্ষমতা দখল করতে পারে, সেজন্য এখন থেকে তারা হুমকি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চায়। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার, শ্রমিকদের সরকার, কৃষকদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আজকের সমাবেশ প্রমাণ করে, বাংলাদেশ এখন জনগণের বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। আজ পহেলা মে থেকে শ্রমিক দলের সমাবেশের মধ্য দিয়ে নতুন সংগ্রাম শুরু হল। এই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদেরকে (আওয়ামী লীগ সরকার) পরাজিত করব। জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করে নতুন সরকার গঠন করব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ গোটা দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে, গণতন্ত্রগামী মানুষকে হত্যা-গুম-খুন করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে গোটা দেশকে কারাগারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে তছনছ করে এই আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারই পুনরাবৃত্তিতে আবার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে— এই লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। লড়াইয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে— আগামী দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে কিনা, দেশের মানুষ মুক্ত থাকবে কী থাকবে না। এ লড়াই আমাদের মুক্তির লড়াই, আমাদের স্বাধীনতার লড়াই, এ লড়াই দেশনেত্রীকে মুক্ত করার লড়াই। এ লড়াই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার লড়াই।

‘নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের গোলযোগ বরদাস্ত করা হবে না’-পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তাকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গোলযোগ কোথায় দেখছেন? গোলযোগ তো আপনারা সৃষ্টি করছেন। আজকে খুলনায় শ্রমিক দলের শান্তিপূর্ণ র‌্যালিতে হামলা করে পণ্ড করে দিয়েছেন। সেখান থেকে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আবার সেই পুরোনো খেলা শুরু হয়েছে। আবার তারা সেই পুরানো কায়দায় আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। ভোটার যেন ভোট দিতে না পারে, ভোট চুরি করে তারা যেন ক্ষমতায় আসতে পারে এবং আবার যেন ক্ষমতা দখল করতে পারে সেজন্য এখন থেকে হুমকি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চায়।

রাজধানীর বাইরে মানুষ যথাযথভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলন, ‘তারা ঢাকায় কিছু বিদ্যুৎ দেয়, যাতে মানুষ রাস্তায় না নামে। ঢাকার বাইরে কোনো বিদ্যুৎ নেই, শুধু লোডশেডিং আর লোডশেডিং। অথচ তারা সবসময় বলছে— বিদ্যুৎ উৎপাদন সবচেয়ে বেশি বাড়িয়েছে। এত বাড়িয়েছে যে, তাদের দলের লোকেরা সংসদীয় কমিটিতে বলছে, এত বিদ্যুৎ উৎপাদের প্রয়োজন ছিল না, কারণ এখন তা দিতে পারছে না। বেশি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে তারা চুরি ও দুর্নীতি করেছে। আজকে আবার নতুন খবর এসেছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারা এভাবে লুট করেছে। সমস্ত অর্থনীতিতে লুটেরাদের রাজত্ব কায়েম করেছে।

সভ্যতার প্রধান কারিগর শ্রমজীবী মানুষেরা বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, তারা সবচেয়ে বেশি শোষিত। তারা দুইবেলা ঠিকমতো খেতে পায় না। কারণ চাল, ডাল ও লবণসহ প্রতিটি জিনিসের দাম যে হারে বেড়েছে, তা তাদের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ক্ষমতাসীনরা মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির বলেন, আজ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা নানা কথা বলছেন। তারা তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছেন না, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মিথ্যাচার করছেন, এটা লজ্জাজনক ।

ফখরুল বলেন, আজ প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি আয় করছেন, অথচ প্রবাসীদেরই সবচেয়ে বেশি শোষণ করা হচ্ছে। এ সরকার শ্রমিকবিরোধী সরকার, কৃষকবিরোধী সরকার।

তিনি বলেন, তারা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে, শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়ে পুরো দেশকে তারা আজ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আবারও সেই একই কায়দায় নতুন করে নির্বাচন করতে চায়, কিন্তু পারবে না। এখনকার বাংলাদেশ গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, এখনকার বাংলাদেশ জনগণের বাংলাদেশ। এ শ্রমিক সমাবেশের মধ্যদিয়ে নতুন আন্দোলন শুরু হয়েছে। অচিরেই আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন হবে।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা শাহ আবু জাফর, খায়রুল কবির খোকন ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, মীর সরাফত আলী সপুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহীম, ছাত্রদল নেতা কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।