স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রথম ওভারে তিন বাউন্ডারি। তৃতীয় ওভারে ক্যাচ হাতছাড়া। শুরুতেই যেন এলোমেলো বাংলাদেশ। তবে সেই সময়টা দীর্ঘায়িত হলো না বেশি। বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দ্রুতই গুছিয়ে নিয়ে আয়ারল্যান্ডকে প্রবলভাবে চেপে ধরল বাংলাদেশ। সেই চাপে হাঁসফাঁস করে একের পর এক উইকেট হারাল আইরিশরা। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হয়ে উঠল এক তরফা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতেছে ৮ উইকেটে। মাত্র ১১৮ রানের লক্ষ্য স্বাগতিক দল পেরিয়েছে ৩৮ বল আগে। ৩৪ বলে ফিফটি করা তানজিদ অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৫৫ আনে, ২৬ বলে ৩৩ করেন পারভেজ। এই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।
আইরিশদের ১১৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়েছে। নিয়মিত ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে চারে পাঠিয়ে সাইফ হাসানকে ওপেনিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। সাইফ দারুণ শুরু করলেও ইনিংস অবশ্য বড় করতে পারেননি। ১৪ বলে ২টি চার ১টি ছয়ে ১৯ রান কর আউট হয়েছেন।
তিনে নেমে লিটন আজ ব্যর্থ। ফিরেছেন ৬ বলে ৭ রান করে। চার নম্বরের নতুন পজিশনে নেমে পারভেজ ইমনও শুরুতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দে ছিলেন না। প্রথম ১০ বল খেলে তার রান ছিল মাত্র ৩। তবে সময় নিয়ে ঠিকই সেট হয়েছেন। আর অপর ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম শুরু থেকেই স্বাচ্ছেন্দে ব্যাট করেছেন।
তামিমের সঙ্গে ইমন সেট হয়ে ঝড় তুললেন বলেই এতো দ্রুত ম্যাচটা জিততে পারল বাংলাদেশ। ১৩.৪ ওভারে জয়ের জন্য ১১৯ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ।
দলের জয় নিশ্চিত হওয়ার সময় তানজিদ হাসান তামিম ৩৬ বলে ৪টি চার ৩টি ছয়ে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। পারভেজ হোসেন ইমন ২৬ বলে ১টি চার ৩টি ছয়ে অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রান করে।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় আয়ারল্যান্ড, তবে আগের দুই ম্যাচের মত উড়তে পারেনি তারা। চতুর্থ ওভারে ১০ বলে ১৭ করে বোল্ড হয়ে যান টিম টেক্টর। ৩৮ রানে পড়ে তাদের প্রথম উইকেট। এরপর আর কোন জুটিই গড়তে পারেনি তারা। এরপরের সর্বোচ্চ জুটি আসে ৬ষ্ঠ উইকেটে ২০ রানের। জর্জ ডকরেল ও গ্যারেথ ডেলানি তাতে লাগান ২৩ বল। পাওয়ার প্লের পর ক্রমই স্থবির হয়ে পড়া সফরকারী দল হারায় একের পর এক উইকেট।
টিম ওপেনে নেমে কিছু বড় শট খেলে ফিরলেও তার বড় ভাই হ্যারি টেক্টর থিতু হতে পারেননি। ৬ বলে ৫ রান করে মোস্তাফিজের বলে দুর্ভাগ্যের শিকার তিনি। প্রথম বলটি ঠেকিয়ে দিলেও তা এক বাউন্সে গিয়ে আঘাত হাতে স্টাম্পে। লোরকান টাকার, কার্টিস ক্যাম্পার দুজনেই ব্যর্থ। টাকার ফেরেন শেখ মেহেদীর শিকার হয়ে, ক্যাম্পারকে গুগলিতে বোল্ড করেন রিশাদ। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় সফরকারী দল। সেখান থেকে তাদের আর ফেরা হয়নি।
আইরিশদের ভরসা ছিলেন স্টার্লিং। তিনিই বাড়াচ্ছিলেন দলের রান। তবে লম্বা হয়নি তার ইনিংস। ২৭ বলে ৫ চার ১ ছয়ে ৩৮ রান করে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। নিজের শেষ ওভারে গ্যারেথ ডেলানিকেও তুলে নেন রিশাদ। ১৮তম ওভারে এসে মোস্তাফিজ পর পর তুলে নেন মার্ক অ্যাডাইয়ার ও ম্যাথু হ্যামফ্রিসকে। শেষ ওভারে বেন হোয়াইটকে ছেঁটে ইনিংস মুড়ে দেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
১৯.৫ ওভারে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। ২৭ বলে ৫টি চার ১টি ছয়ে ৩৮ রান করেছেন পল স্ট্যার্লিং। জর্জ ডরকেল করেছেন ২৩ বলে ১৯ রান।
বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ৩ ওভার বোলিং করে মাত্র ১১ রান খরচায় নিয়েছেন ৩টি উইকেট। রিশাদ ৪ ওভারে ২১ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট। ৩ ওভারে ২১ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। সাইফউদ্দিন ও শেখ মাহেদি নিয়েছেন একটা করে উইকেট।
এই সিরিজ দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে সফলতম বছর শেষ হলো বাংলাদেশের। ৩০ ম্যাচ খেলে এ বছর ১৫টি ম্যাচ জিতেছে তারা। এই সংস্করণে লিটনদের পরের ম্যাচ আগামী ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপে।
স্পোর্টস ডেস্ক 
























