গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. মো. নজমুল করিম খান বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ করলেই হবে না, জনসাধারণকেও আইন মানতে হবে। তাহলেই শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে জেলার চান্দনা চৌরাস্তায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উঠতে দেওয়া হবে না। অটোরিকশাগুলো মহাসড়ক থেকে যেসব ফিডার রোড রয়েছে সেসব ফিডার রোডে অবস্থান নেবে এবং মহাসড়ক থেকে একশ মিটার দূরে যাত্রী ওঠানামা করবে। এছাড়া অটোরিকশা মহাসড়কে উঠলে তার বিরুদ্ধে ডাম্পিংসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঈদ উপলক্ষে বাসের ভাড়া বেশি নেওয়া হলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিএমপি কমিশনার বলেন, মহাসড়কে কোনোভাবেই অটোরিকশা উঠতে দেওয়া হবে না এবং নির্দিষ্ট স্থান থেকে অন্তত ১০০ মিটার দূরে রাখতে হবে। ছিনতাই ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধে সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করছে, পাশাপাশি যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গে ভলান্টিয়াররাও সহায়তা করছে।
তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এরইমধ্যে মহাসড়কের ওপর থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ পার্কিং সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যানবাহন চলাচলের শৃঙ্খলা আনয়নে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকও কাজ করছে। মহাসড়কে কাঁচামাল ও নিত্যপণ্য বহনকারী যানবাহন ছাড়া অন্যসব ট্রাক ও ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে। সড়কের খানাখন্দ মেরামত করা হয়েছে।
জিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঈদের বন্ধে শুধু জরুরি পরিবহন ছাড়া, গার্মেন্টস পরিবহন ছাড়া, যাত্রী পরিবহন ছাড়া, অন্য সকল পরিবহন আমরা বন্ধ রাখবো। ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় আমরা ট্রাকগুলোকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করে দেবো।’
জিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে দীর্ঘ একটি ভ্যাকেশন আছে। ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেশি হবে। মানুষকে সেভ করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। মনে রাখতে হবে, তাড়াহুড়ো করবেন না। একটি দুর্ঘটনা পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আপনারা দেখেছেন, এই গাজীপুরে সব সময় যানজট ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি, গাজীপুরের রাস্তাকে স্মুথ করার জন্য। যারা এখানে হকার ছিল, হকার উচ্ছেদ করেছি। যাদের গাড়ি পার্কিং ছিল সেগুলো সরিয়ে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার একটি কথা সবাইকে জানাতে চাই, রাস্তায় গাড়ি উঠবে মানে গাড়ির চাকা ঘুরবে। রাস্তায় মানুষ উঠবে মানুষ হাঁটবে। সে দাঁড়িয়ে থাকবে না। রাস্তায় গাড়ির চাকা বন্ধ হলে যানজট সৃষ্টি হয়ে যায়। পাঁচশ পুলিশ অফিসারকে কাজে লাগিয়েছি। আমরা সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ করেছি, ওনারা কিছু ভলানটিয়ার দিয়েছেন।’
নগরীতে ছিনতাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছিনতাইয়ের ব্যাপারে মহানগর পুলিশ জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছে। আগের চাইতে ছিনতাই কমে এসেছে। বিভিন্ন স্থানে ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। ছিনতাইকারীদের ধরতে গিয়ে পুলিশের এক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। তারপরও ছিনতাইকারীকে ছাড়া হয়নি। গোপনে অ্যাম্বুস করে ছিনতাইকারীদের ধরার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
নাজমুল করিম খান বলেন, অনেকে চাকরি হারিয়ে ছিনতাই কাজে নেমেছে। তাদেরকে যারা লেলিয়ে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।