নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা মহানগরে, বঙ্গবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা আওয়ামী লীগের জিনের মধ্যে এই অগ্নিসন্ত্রাস। তাদের দুটো ব্যাপার— একটা সন্ত্রাস অন্যটা দুর্নীতি। অবাধ, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন না করে বিরোধী দলের প্রতি আঙুল তোলা ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর কৌশল।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদসম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদসম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, অগ্নিকাণ্ডগুলোর প্রতিটাই এই অবৈধ সরকারের ব্যর্থতার কারণে সংঘটিত হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতর ও সংগঠনগুলোর তদারকির অভাব, সীমাহীন উদাসীনতা এবং দুর্নীতির কারণেই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। অপরদিকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপকৌশল মাত্র।
মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় চার্জগঠন ও বিচার শুরু করায় আদালতের নির্দেশে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। বলা হয় যে, বিরোধীদলকে নির্মূল করার নীল নকশার অংশ হিসেবে ১/১১ অবৈধ সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক পরিবারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এ পরিবারের সদস্য শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, প্রহসনমূলক বিচার ও ফরমায়েশি রায় দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার হীন চক্রান্ত করে আসছে। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার বিচার কাজ শুরু করার লক্ষ্য হচ্ছে তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের রাজনীতির বাইরে রাখা। প্রকৃত পক্ষে অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন একটি এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। জিয়া পরিবারই নয় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, গণতন্ত্রকামী বিরোধীদলের প্রায় ৪০ লাখ নেতা-কর্মী ও সমর্থনকারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার, কারাগারে নির্যাতন, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করছে। লক্ষ্য, দেশে কর্তৃত্ববাদী এক নায়কতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদকে চিরস্থায়ী করা।
তিনি বলেন, তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত জনগণ গ্রহণ করবেনা। জনগণের ঐক্য ও দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে বাধ্য করতে হবে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে বেগম খালেদা জিয়াসহ বন্দি সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি, তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানসহ সকল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলা প্রত্যাহার, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার গঠন করাই এই সময়ে সারাদেশের জনগণের দাবি। সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণকে এ লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।