নিজস্ব প্রতিবেদক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী, সহযোগী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা যেন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ না পায় সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে চিঠি দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি)। একই সঙ্গে জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকা ১৪ দলকে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে না ডাকার দাবি জানিয়েছে দলটি।
বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সিইসি বরাবর চিঠি দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
এসময় রাশেদ বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনের সুযোগ পেলে তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবেন।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি, ১৪ দলসহ যারা ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তাদেরকে ইসির সংলাপে না ডাকার আহ্বানও জানিয়েছি। নিবন্ধনের দোহাই দিয়ে এই দলগুলোকে ইসির সংলাপে ডাকলে আন্দোলন করা হবে।
সিইসি বরাবর লিখিত চিঠিতে রাশেদ খান বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে তা বানচালের চক্রান্ত তত বাড়বে। এরই অংশ হিসেবে আধিপত্যবাদী শক্তি ও শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ২০২৪ সালের ডামি-স্বতন্ত্র এমপি কিংবা আওয়ামী লীগের পদপদবিতে থাকা নেতা, দোসর, অর্থ যোগানদাতা ও ২০২৪ এর ডামি নির্বাচনে সরাসরি সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচন করা নয় বরং নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন অরাজকতা সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের মাধ্যমে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনা।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, নির্বাচন উপলক্ষে গণসংযোগ করা ইত্যাদিও সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ। সুতরাং গণহত্যার বিচার শেষ হওয়ার পূর্বে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও কোনোধরনের নির্বাচনি কার্যক্রমে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই। বরং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার সুযোগ পেলে নির্বাচন কমিশনের হাত ধরেই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসিত ও পালিয়ে থাকা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নির্বাচনি প্রচারণার নামে রাজপথে সক্রিয় হয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করার সুযোগ পাবে। এ ক্ষেত্রে জনরোষে থাকা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতারা জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়লে নির্বাচনের পরিবেশও অশান্ত হয়ে উঠবে। যার দায় নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তাবে।
এছাড়া বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের নেতারা লুটপাট করে অর্থ উপার্জন করেছেন, তাদের অবৈধ টাকার কোনো অভাব নাই। সুতরাং পদপদবিতে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেলে অর্থের ছড়াছড়ি ও পেশী শক্তির মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী যাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ না পান, সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করার অনুরোধ করা হয়।
শেষে জাতীয় পার্টি, ১৪ দলসহ যারা ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বৈধতা দিয়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল তাদেরকে নির্বাচন কমিশন থেকে কোনো সংলাপে না ডাকার অনুরোধ জানান তিনি।
রাশেদ খান বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে দলগুলোকে নিয়ে আলোচনা করেছে, শুধুমাত্র সেই দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচন কমিশনেরও সংলাপ করার আহ্বান করছি। অন্যথায় ফ্যাসিবাদের দোসররা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ করার সুযোগ পেলে সেটি হবে ছাত্র-জনতার রক্তের সঙ্গে প্রতারণা। এমনকি নির্বাচন কমিশন থেকে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করতে পারে। সেটি নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করবে।
চিঠিতে আরও লেখা হয়, এমতাবস্থায় গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আমরা বিষয় দুটিতে কঠোর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে চাই যে, কমিশন জাতিকে ফ্যাসিবাদমুক্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 























