পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সীমান্ত এলাকা দিয়ে দালালের মাধ্যমে অবৈধপথে ভারতে প্রবেশের সময় তিন রোহিঙ্গা তরুণীকে আটক করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দর্জিপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- মাইজুমা (১৭), শারমিন আক্তার (১৭) ও নুরছাফা (১৮)। তারা কক্সবাজারের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে মাইজুমা কক্সবাজারের নিবন্ধন নং-২০২০০৩, ওয়ার্ড নং-৫০/বি, ক্যাম্প-৪, ব্লক সি/১-এর আবুল ফয়েজের মেয়ে, শারমিন আক্তার নিবন্ধন নং-২৩৯৮৪০, ওয়ার্ড নং-১৪৬/বি, ক্যাম্প-৪, ব্লক বি/২-এর শফির মেয়ে ও নুরছাফা নিবন্ধন নং-১৭৮৮৩১, ওয়ার্ড নং-১২৩/বি, ক্যাম্প-৪, ব্লক ডি-এর আবুল কালামের মেয়ে।
দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিজিবি জানায়, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে পঞ্চগড় ব্যাটালিয়ন (১৮ বিজিবি)-এর অধীন শারিয়ালজোত বিওপি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে সীমান্ত মেইন পিলার ৪২১ দিয়ে মানবপাচারকারী চক্র কয়েকজন রোহিঙ্গা তরুণীকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ৭টার দিকে বিজিবির টহল দল স্থানীয়দের নিয়ে দর্জিপাড়া গ্রামে পাচারকারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে ধাওয়া করলে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিন তরুণীকে বিজিবি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, আটককৃত তিনজন রোহিঙ্গা নাগরিক। তারা কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা। পাচারকারী মো. ইসমাইল হোসেনের প্রতারণার খপ্পরে পড়ে তারা এই এলাকায় চলে আসে। তারা আরও জানায় ইসমাইল হোসেন কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা। ভারতে পাচারের লক্ষ্যে সোমবার ইসমাইল তাদের পঞ্চগড়ে নিয়ে আসে। আটক তরুণীদের তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়েছে।
ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, সকালে ওই তিন রোহিঙ্গা তরুণীকে দর্জিপাড়া থেকে বিজিবির মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদেরকে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে রাখা হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম সিদ্দিকী জানান, মেয়েগুলো ইউনিয়নে বিজিবির হেফাজতে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি বলেন, বিজিবি ওই তিন রোহিঙ্গা তরুণীকে আটক করে সদর ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। এরপর আমরা বিষয়টি জেনে ওই তরুণীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের পরিবার সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। একইসঙ্গে আমরা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরেও যোগাযোগ করেছি। তারা সেখানকার বাসিন্দা বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যতটুকু নিশ্চিত হয়েছি, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছে। এখন বিজিবিসহ উপজেলা প্রশাসন মিলে ওই তিন তরুণীকে তাদের পরিবারের কাছে তুলে দিতে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।