স্পোর্টস ডেস্ক :
বিপদে পড়ে অবসর নেওয়া তারকার শরণাপন্ন হচ্ছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)? জাতীয় দলের প্রয়োজনে অবসর ভেঙে ফের টেস্ট জার্সি গায়ে তুলতে পারেন মঈন আলি। ইসিবির প্রস্তাব অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছেন তিনি, এমনটাই খবর ইংলিশ ক্রিকেট ম্যাগাজিন ‘দ্য ক্রিকেটার’-এর।
ঐতিহাসিক অ্যাশেজ সিরিজকে ঘিরে পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইংল্যান্ড। তবে একের পর এক ইনজুরির হানা দলের ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। ফলে অস্ট্রেলিয়ার সামনে পূর্ণাঙ্গ শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে নামতে না পারার শঙ্কায় রয়েছেন বেন স্টোকসরা। দল ঘোষণার পর নতুন করে চোটের কারণে ছিটকে গেছেন স্পিনার জ্যাক লিচ। তাই তো তার জায়গায় টেস্ট থেকে অবসর নেওয়া মঈন আলীকে দলে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
মঈন এখন কেবল সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন। টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন ২০২১ সালেই। যদিও বেশ কিছুদিন ধরেই ব্রিটিশ ক্রিকেটমহলে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, অবসর ভেঙে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে পারেন মঈন।
সেই গুঞ্জন সত্যি হওয়ার পথে জ্যাক লিচের চোটে। সামনে অ্যাশেজ সিরিজ। এমন সময়ে ছিটকে গেলে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের এক নম্বর স্পিনার। এই অবস্থায় ঘরের মাঠে অসিদের কাছে যাতে লেজেগোবরে হতে না হয়, তাই অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মঈনকে দলে চাইছে ইংল্যান্ড।
কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের জমানায় জ্যাক লিচই লাল বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সব থেকে ধারাবাহিক বোলার। শুধু উইকেট নেওয়ার নিরিখেই নয়, বরং সব থেকে বেশি বল করার নিরিখেও সাম্প্রতিক সময়ে সবার আগে তিনি।
টেস্টে ইংল্যান্ডের হাতে লিচের যথাযথ বিকল্প নেই মোটেও। রেহান আহমেদ, ম্যাট পারকিনসনরা আর যাই হোন, অ্যাসেজের চাপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত নন এখনই। এক্ষেত্রে মঈন আলির অভিজ্ঞতা কাজে লাগতে পারে ইংল্যান্ডের।
সেই কারণেই মঈনকে হাই-ভোল্টেজ অ্যাসেজ সিরিজে দলে চাইছে ইংল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও কোনও ইসিবি কর্তা অথবা মঈন, কোনও পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেননি এই বিষয়ে।
তবে জানা গেছে, মঈনের কাছে টেস্টে ফেরার প্রস্তাব গিয়েছে এবং অভিজ্ঞ স্পিনার সেই প্রস্তাব গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছেন। ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম এমন খবর ছাপিয়েছে।
এদিকে ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মঈন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমি মনে করছি আমি কিছু মিস করছি। আমার মনে হয়, আমি সেটা ফিরে পাচ্ছি। যখন টেস্ট খেলতাম, তখন মনে হতো সাদা বলে আমি অনেক ভালো করি। তবে এখন মনে করি লাল বলেও আমি ভালো করতে পারব। আমি সেই ছন্দ আবারও ফিরে পাব যদি টেস্ট খেলি।
কুকের নেতৃত্বে ২০১৪ সালে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মইনের। তার অধিনায়কত্বে খেলেছেন ৩৭ টেস্ট। পরে জো রুটের নেতৃত্বে খেলেছেন ২৭টি। মোট ৬৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে তার উইকেট ১৯৫টি, রান করেছেন ৫ সেঞ্চুরিতে ২৯১৪।
তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার রেকর্ড খুব ভালো নয়। ১১ ম্যাচে তিনি উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২০টি। তবে তার মধ্যে ঘরের মাঠে তার পারফরম্যান্স ভালো। অ্যাশেজ সিরিজও হতে যাচ্ছে ঘরের মাটিতে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ওভাল টেস্টের পর লাল বলের ক্রিকেটে আর কোনো ম্যাচ খেলেননি এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে বেশি মনোযোগ দিতে ও বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে টেস্ট থেকে অবসর নেন তিনি।
এদিকে মঈনের ফেরার কথা শুনে রোমাঞ্চিত ব্রড। স্কাই স্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রড বলেন, আমরা সবাই জানি যে মঈন দুর্দান্ত একজন ক্রিকেটার। ম্যাককালাম ও স্টোকসের দর্শকের সঙ্গেও সে দারুণভাবে মানিয়ে যায়। জানি না এখন তাকে নির্বাচকরা আবার বিবেচনা করবেন কি না।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার পাঁচ ম্যাচের অ্যাসেজ সিরিজ শুরু হবে আগামী ১৬ জুন থেকে। প্রথম টেস্ট ম্যাচটি মাঠে গড়াবে এজবাস্টনে। পরবর্তী ম্যাচগুলো হবে যথাক্রমে ২৮ জুন, ৬, ১৯ এবং ২৭ জুলাই। এর আগের অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড পরাজিত হয়েছিল।