Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অপহরণের দুদিন পর বাড়ির পাশে ঝোপে মিলল শিশুর মরদেহ

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

টাঙ্গাইলের সখীপুরে অপহরণের দুদিন পর নিজ বাড়ির পাশের একটি ঝোপ থেকে নয় বছরের শিশু সামিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সামিয় একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে তার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বনের ভেতর একটি ড্রেন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা রঞ্জু মিয়া বাদী হয়ে সখীপুর থানায় মামলা করেছেন।

নিহত সামিয়া উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার মেয়ে। সে দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনসার আলী আসিফ।

সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া বলেন, অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চেয়ে মোবাইল ফোনে অডিও বার্তা পাঠিয়েছিল। এ বিষয় কাউকে কিছু না বলারও হুমকি দেয় তারা। কিন্তু তারপরও আমরা থানায় মামলা করেছি। শুক্রবার দুপুর একটার দিকে আমার ভাই আমিনুল ইসলাম ফোনে জানায়, সামিয়ার লাশ পাওয়া গেছে। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সকাল ৭টায় সামিয়া বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সরকারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। প্রাইভেট পড়া শেষ হলে সহপাঠীদের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে, একটি দোকানে সহপাঠীরা কেনাকাটা করতে দাঁড়ালে সে একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় মা রুপা বেগম ওই শিক্ষককে মোবাইলে ফোন দিয়ে জানতে পারেন তার মেয়ে অনেক আগেই চলে গেছে। পরে মেয়ে সামিয়াকে খুঁজতে বের হন। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই একটি যায়গায় মেয়ের ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন।

এর কিছুক্ষণ পর রুপা বেগমের মোবাইল ফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি অডিওবার্তায় বলা হয়, আসসালামু আলাইকুম। আপনার মেয়ে ভালো আছে। টাঙ্গাইলে আছে, আজকের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিলে মেয়ে পাবেন। এ বিষয়টি পুলিশ ও এলাকার কাউকে জানাবেন না। জানালে আপনার মেয়ের ক্ষতি হবে।

এ বিষয়ে দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, বিদ্যালয় আঙিনা পরিষ্কার করার জন্য কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আসতে বলেছিলাম। গত বুধবার সকাল ৭টার দিকে তারা বিদ্যালয়ে আসে এবং ৯টার দিকে চলে যায়। ওইদিন কোনো প্রাইভেট পড়াইনি। পরে ওই শিক্ষার্থীর মা ফোন করলে জানতে পারি মেয়েটি নিখোঁজ। আমরাও বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছি। আজকে মেয়েটির লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় মামলা হয়েছে। বাড়ির পাশের একটি বনের ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

অপহরণের দুদিন পর বাড়ির পাশে ঝোপে মিলল শিশুর মরদেহ

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৪:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি : 

টাঙ্গাইলের সখীপুরে অপহরণের দুদিন পর নিজ বাড়ির পাশের একটি ঝোপ থেকে নয় বছরের শিশু সামিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সামিয় একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে তার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বনের ভেতর একটি ড্রেন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা রঞ্জু মিয়া বাদী হয়ে সখীপুর থানায় মামলা করেছেন।

নিহত সামিয়া উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার মেয়ে। সে দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনসার আলী আসিফ।

সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া বলেন, অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চেয়ে মোবাইল ফোনে অডিও বার্তা পাঠিয়েছিল। এ বিষয় কাউকে কিছু না বলারও হুমকি দেয় তারা। কিন্তু তারপরও আমরা থানায় মামলা করেছি। শুক্রবার দুপুর একটার দিকে আমার ভাই আমিনুল ইসলাম ফোনে জানায়, সামিয়ার লাশ পাওয়া গেছে। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সকাল ৭টায় সামিয়া বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সরকারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। প্রাইভেট পড়া শেষ হলে সহপাঠীদের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে, একটি দোকানে সহপাঠীরা কেনাকাটা করতে দাঁড়ালে সে একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় মা রুপা বেগম ওই শিক্ষককে মোবাইলে ফোন দিয়ে জানতে পারেন তার মেয়ে অনেক আগেই চলে গেছে। পরে মেয়ে সামিয়াকে খুঁজতে বের হন। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই একটি যায়গায় মেয়ের ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন।

এর কিছুক্ষণ পর রুপা বেগমের মোবাইল ফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি অডিওবার্তায় বলা হয়, আসসালামু আলাইকুম। আপনার মেয়ে ভালো আছে। টাঙ্গাইলে আছে, আজকের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিলে মেয়ে পাবেন। এ বিষয়টি পুলিশ ও এলাকার কাউকে জানাবেন না। জানালে আপনার মেয়ের ক্ষতি হবে।

এ বিষয়ে দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, বিদ্যালয় আঙিনা পরিষ্কার করার জন্য কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আসতে বলেছিলাম। গত বুধবার সকাল ৭টার দিকে তারা বিদ্যালয়ে আসে এবং ৯টার দিকে চলে যায়। ওইদিন কোনো প্রাইভেট পড়াইনি। পরে ওই শিক্ষার্থীর মা ফোন করলে জানতে পারি মেয়েটি নিখোঁজ। আমরাও বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছি। আজকে মেয়েটির লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় মামলা হয়েছে। বাড়ির পাশের একটি বনের ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।