Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে আজ থেকেই চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে আজ থেকেই বিশেষ বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১১তম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে খুলনার হত্যাকাণ্ডেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার এ মর্মে বিশ্বাস করে, অপরাধী অপরাধীই তা সে যে দলেরই হোক না কেন। রাজনৈতিক অথবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতেও দেয়া হবে না। কোন অপরাধীকেই পুলিশ প্রশ্রয় দিবে না।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মব সহিংসতা, মাদক চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যেকোনো সময় চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে বিশেষ বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণসহ সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। সরকার জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী যেকোনো কার্যক্রম কঠোর হস্তে দমন করবে।

তিনি বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে নারকীয় হত্যাকান্ডের ঘটনা সহ দেশব্যাপী সাম্প্রতিককালে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বদ্ধপরিকর। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাচ্ছে ও অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার করছে।

মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর)-তে উল্লিখিত ১৯ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে সাত জনকে র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঢাকার বাইরে গোয়েন্দা দল বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অবশিষ্ট আসামিদের গ্রেপ্তারে কাজ করে যাচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কর্তৃক মঈন ও সেনাবাহিনী কর্তৃক তারেক (দুইজন) কে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত শুক্রবার বিকালে আরো দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাছাড়া শুক্রবার রাতেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনায় ডিবি আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সবমিলিয়ে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ছয় জনকে ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তে আরো আসামি পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে ডিবির টিম সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় প্রশাসনিক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো শিথিলতা ছিল কিনা তা সরকার গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবে।

সামাজিক অস্থিরতা, অসহিষ্ণুতা, নৈতিক স্খলন, প্রভৃতি কারণে সমাজে অপরাধপ্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশ ও সমাজ থেকে অপরাধ কমিয়ে আনার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমাদের সকলের। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মিডিয়া, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, অভিভাবক, ছাত্র, শিক্ষক, সাধারণ জনতাসহ সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আর কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়- এ বিষয়ে জনসচেতনতা জরুরি। জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কোন ঘটনা বা অপরাধ ঘটলে সেটা যেন যত দ্রুতসম্ভব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে আজ থেকেই চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে আজ থেকেই বিশেষ বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১১তম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে খুলনার হত্যাকাণ্ডেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার এ মর্মে বিশ্বাস করে, অপরাধী অপরাধীই তা সে যে দলেরই হোক না কেন। রাজনৈতিক অথবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতেও দেয়া হবে না। কোন অপরাধীকেই পুলিশ প্রশ্রয় দিবে না।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মব সহিংসতা, মাদক চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যেকোনো সময় চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে বিশেষ বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণসহ সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। সরকার জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী যেকোনো কার্যক্রম কঠোর হস্তে দমন করবে।

তিনি বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে নারকীয় হত্যাকান্ডের ঘটনা সহ দেশব্যাপী সাম্প্রতিককালে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বদ্ধপরিকর। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাচ্ছে ও অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার করছে।

মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর)-তে উল্লিখিত ১৯ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে সাত জনকে র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঢাকার বাইরে গোয়েন্দা দল বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অবশিষ্ট আসামিদের গ্রেপ্তারে কাজ করে যাচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কর্তৃক মঈন ও সেনাবাহিনী কর্তৃক তারেক (দুইজন) কে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত শুক্রবার বিকালে আরো দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাছাড়া শুক্রবার রাতেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনায় ডিবি আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সবমিলিয়ে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ছয় জনকে ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তে আরো আসামি পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে ডিবির টিম সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় প্রশাসনিক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো শিথিলতা ছিল কিনা তা সরকার গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবে।

সামাজিক অস্থিরতা, অসহিষ্ণুতা, নৈতিক স্খলন, প্রভৃতি কারণে সমাজে অপরাধপ্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশ ও সমাজ থেকে অপরাধ কমিয়ে আনার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমাদের সকলের। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মিডিয়া, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, অভিভাবক, ছাত্র, শিক্ষক, সাধারণ জনতাসহ সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আর কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়- এ বিষয়ে জনসচেতনতা জরুরি। জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কোন ঘটনা বা অপরাধ ঘটলে সেটা যেন যত দ্রুতসম্ভব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।