Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে : মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অপকর্ম বন্ধ করুন। না হলে আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে। এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মী অন্যায় করলে যাতে জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন অথবা পুলিশের হাতে তুলে দেন।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে মোলানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিগত স্বৈরাচার হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ও জনগণের ওপর তীব্র নির্যাতন করা হয়েছে। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ, ভোট চুরি করেছে। আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে, লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে, ঘরে থাকতে দেয় নাই। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাই নাই। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেস করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাঁড়ান না দেখি।

নিজ নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির জনপ্রতিনিধিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, এ এলাকায় রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করা হয়নি। কারণ আপনারা বিএনপি সমর্থন করেন। এমন অনেক এলাকা আছে বিএনপি সমর্থনের কারণে বঞ্চিত করা হয়েছে। আপনারা বলেন এমন ব্যক্তিরা কি জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন? আসুন আমরা সবালে মিলে একটা ভালোবাসার দেশ গড়ি।

ফেসবুক ইউটিউবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিভাজন নয়, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি। একটা ভালবাসার বাংলাদেশ চায়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

তিনি আরও বলেন, মানুষের মুখ দেখে বুঝতে পারবেন সবাই পরিবর্তন ও সবাই ভোট দিয়ে সরকার গঠন করতে চায়। আর বাংলাদেশের মানুষের কাছে সব থেকে নিরাপদ ও নিভর্রশীল দল হচ্ছে বিএনপি।

আয়নাঘর ও শেখ হাসিনা সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যাদের ভয় পেয়েছে তাদের গুম করেছে। ১৭০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। সাত থেকে আট বছর পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়েছে। গোলাম আজমের ছেলে ফারুক ই আজমকে আট বছর গুম করে রাখা হয়েছ। সিলেটের এমপি ইলিয়াসের এখনও খবর পায়নি তার পরিবার। আমরা ভয়াবহ ডাইনির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এখন হাসিনা ভারতে বসে গুতোগুতি করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মানুষ তাকে আর ক্ষমতায় আসতে দেবে না। আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে আমরা ভয়াবহ ওই ডাইনির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এটা আমাদের শুকরিয়া আদায় করা উচিত। এখন পাশের দেশ ভারতে গিয়ে বসে গুঁতাগুঁতি করছে তিনি।

তিনি শেখ হাসিনাকে দেশে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরাও মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি। মামলায় লড়েছি। কিন্তু আমরা তো পালায় কোথাও যাইনি। আপনি এতোই যদি গণমানুষের রাজনীতি করে থাকেন তাহলে দেশে আসেন। যে মামলাগুলো হয়েছে সেগুলো লড়েন। এতো জনপ্রিয় মানুষ পালায় গেছেন কেন, দেশে আসেন।

জনগণের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা অনেকে মনে করেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আবারও দেশে ফিরে আসবে। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন, যে তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত তাহলে ছিঁড়ে খেতো। হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।

এ সময় তিনি উপস্থিত মানুষকে ধানের শীষের পক্ষে থাকার কথা বলেন। ধানের শীষকে রক্ষা করার কথা বলেন।

এসময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন সহ দলটির বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

অপকর্ম বন্ধ করুন, নইলে বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১১:২৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অপকর্ম বন্ধ করুন। না হলে আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিকেও জনগণ ছুড়ে মারবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে। এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মী অন্যায় করলে যাতে জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন অথবা পুলিশের হাতে তুলে দেন।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে মোলানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিগত স্বৈরাচার হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ও জনগণের ওপর তীব্র নির্যাতন করা হয়েছে। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ, ভোট চুরি করেছে। আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে, লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে, ঘরে থাকতে দেয় নাই। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাই নাই। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেস করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাঁড়ান না দেখি।

নিজ নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির জনপ্রতিনিধিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, এ এলাকায় রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করা হয়নি। কারণ আপনারা বিএনপি সমর্থন করেন। এমন অনেক এলাকা আছে বিএনপি সমর্থনের কারণে বঞ্চিত করা হয়েছে। আপনারা বলেন এমন ব্যক্তিরা কি জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন? আসুন আমরা সবালে মিলে একটা ভালোবাসার দেশ গড়ি।

ফেসবুক ইউটিউবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিভাজন নয়, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি। একটা ভালবাসার বাংলাদেশ চায়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

তিনি আরও বলেন, মানুষের মুখ দেখে বুঝতে পারবেন সবাই পরিবর্তন ও সবাই ভোট দিয়ে সরকার গঠন করতে চায়। আর বাংলাদেশের মানুষের কাছে সব থেকে নিরাপদ ও নিভর্রশীল দল হচ্ছে বিএনপি।

আয়নাঘর ও শেখ হাসিনা সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যাদের ভয় পেয়েছে তাদের গুম করেছে। ১৭০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। সাত থেকে আট বছর পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়েছে। গোলাম আজমের ছেলে ফারুক ই আজমকে আট বছর গুম করে রাখা হয়েছ। সিলেটের এমপি ইলিয়াসের এখনও খবর পায়নি তার পরিবার। আমরা ভয়াবহ ডাইনির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এখন হাসিনা ভারতে বসে গুতোগুতি করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মানুষ তাকে আর ক্ষমতায় আসতে দেবে না। আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে আমরা ভয়াবহ ওই ডাইনির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এটা আমাদের শুকরিয়া আদায় করা উচিত। এখন পাশের দেশ ভারতে গিয়ে বসে গুঁতাগুঁতি করছে তিনি।

তিনি শেখ হাসিনাকে দেশে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরাও মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি। মামলায় লড়েছি। কিন্তু আমরা তো পালায় কোথাও যাইনি। আপনি এতোই যদি গণমানুষের রাজনীতি করে থাকেন তাহলে দেশে আসেন। যে মামলাগুলো হয়েছে সেগুলো লড়েন। এতো জনপ্রিয় মানুষ পালায় গেছেন কেন, দেশে আসেন।

জনগণের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা অনেকে মনে করেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আবারও দেশে ফিরে আসবে। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন, যে তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত তাহলে ছিঁড়ে খেতো। হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।

এ সময় তিনি উপস্থিত মানুষকে ধানের শীষের পক্ষে থাকার কথা বলেন। ধানের শীষকে রক্ষা করার কথা বলেন।

এসময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন সহ দলটির বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।