Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা নয়, সদিচ্ছাকে বড় করে দেখা উচিত : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাকে বড় করে না দেখে তাদের স্বদিচ্ছা ও প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের স্বাভাবিক ত্রুটি থাকবে। তবে এই দুর্বলতাকে বড় করে না দেখে তাদের সদিচ্ছাকে বড় করে দেখা উচিত। নির্বাচন নিয়ে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি দেখছি না।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সর্বদা দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থায়ী সরকার গঠনের পক্ষে। তাঁর মতে, রাজনৈতিক সরকার না থাকলে দেশের সমস্যা বাড়তে থাকে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা হঠাৎ করেই আমাদের ডেকেছিলেন। ডাকেন মাঝে মাঝে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয় সরকারের। আমরা যাই কারণ আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই সরকারকে সহযোগিতা করবো। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য যা কিছু করা দরকার করবো। তবে আমরা মনে করি এই মতবিনিময়টা আরো ঘনঘন হলে ভালো হতো।

বিমান দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, কালকে যেটা হয়েছে, একটি বিমান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক কচি প্রাণ গেছে। আমি নিজেও দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা দুঃখপ্রকাশ করেছি, শোক জানিয়েছি। গতকালকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাইলস্টোন স্কুলে দুই উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল। পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতায় সচিবালয়ে ছাত্ররা ঢুকে পড়ে যেটা সবার কাছে মনে হয়েছে এটা প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিন আগে গোপালগঞ্জে ফ্যাসিস্ট শক্তির লোকজন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, তাদের উত্থানের নমুনা মনে হয়েছিল।

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনার পর সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার অভাবে ঘাটতি ছিল। এই সরকারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তাদের অভিজ্ঞতার অভাব। কিছু মানুষের ইগোও কাজ করে। রাজনৈতিক দলগুলোর, বিশেষ করে যারা আগে সরকারে ছিল, তাদের অভিজ্ঞতা আছে। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলে ভালো হতো। তবে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা কোনো ঘাটতি দেখছি না।

তিনি আরো বলেন, এটার জন্য উনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন, তাদের সবার সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি ডেকেছেন। আমরা সেখানে আলোচনা করেছি। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দ্রুত ত্বরান্বিত করা, ওনার যে প্রতিশ্রুতি ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাঝামাঝি সময়ে যে নির্বাচন হবে, আমরা মনে করি সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এবং তিনি বলেছেন সে ব্যবস্থা নেবেন।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাকবিতণ্ডা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, এগুলো রাজনীতির অংশ। প্রতিপক্ষকে কথায় ঘায়েল করার চেষ্টা থাকবেই। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতি থাকলেই দেশের উন্নতি হয়। গণতন্ত্রের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, গণতন্ত্রে সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। তবেই ভালো সমাধান আসবে।

গণতন্ত্রে অনেক ক্ষেত্রে শতফুল ফুটতে দিতে হবে। গণতন্ত্র মানেই সকলকে কথা বলতে দিতে হবে, শুনতে হবে। এটা হলেই শতফুল ফুটবে। তার মধ্যে থেকে ভালো সৌরভ-সুবাতাস বয়ে আসবে, যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

একসঙ্গে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, ঐকমত্য কমিশনের এমন প্রস্তাব সম্পর্কে বিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ বলেন, এটা একটা প্রস্তাব তাদের। আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার মধ্যে দিয়ে (সিদ্ধান্ত) আসবে। আমরা আমাদের মত দিয়েছি, অন্যান্য দলগুলো তাদের মত দিয়েছে। এখন দেখা যাক আলোচনার মধ্যে দিয়ে কোনটা প্রতিষ্ঠিত হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা নয়, সদিচ্ছাকে বড় করে দেখা উচিত : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৩:২১:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাকে বড় করে না দেখে তাদের স্বদিচ্ছা ও প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের স্বাভাবিক ত্রুটি থাকবে। তবে এই দুর্বলতাকে বড় করে না দেখে তাদের সদিচ্ছাকে বড় করে দেখা উচিত। নির্বাচন নিয়ে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি দেখছি না।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সর্বদা দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থায়ী সরকার গঠনের পক্ষে। তাঁর মতে, রাজনৈতিক সরকার না থাকলে দেশের সমস্যা বাড়তে থাকে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা হঠাৎ করেই আমাদের ডেকেছিলেন। ডাকেন মাঝে মাঝে যখন ক্রাইসিস তৈরি হয় সরকারের। আমরা যাই কারণ আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই সরকারকে সহযোগিতা করবো। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য যা কিছু করা দরকার করবো। তবে আমরা মনে করি এই মতবিনিময়টা আরো ঘনঘন হলে ভালো হতো।

বিমান দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, কালকে যেটা হয়েছে, একটি বিমান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক কচি প্রাণ গেছে। আমি নিজেও দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা দুঃখপ্রকাশ করেছি, শোক জানিয়েছি। গতকালকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাইলস্টোন স্কুলে দুই উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল। পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতায় সচিবালয়ে ছাত্ররা ঢুকে পড়ে যেটা সবার কাছে মনে হয়েছে এটা প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিন আগে গোপালগঞ্জে ফ্যাসিস্ট শক্তির লোকজন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, তাদের উত্থানের নমুনা মনে হয়েছিল।

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনার পর সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার অভাবে ঘাটতি ছিল। এই সরকারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তাদের অভিজ্ঞতার অভাব। কিছু মানুষের ইগোও কাজ করে। রাজনৈতিক দলগুলোর, বিশেষ করে যারা আগে সরকারে ছিল, তাদের অভিজ্ঞতা আছে। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলে ভালো হতো। তবে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা কোনো ঘাটতি দেখছি না।

তিনি আরো বলেন, এটার জন্য উনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন, তাদের সবার সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি ডেকেছেন। আমরা সেখানে আলোচনা করেছি। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দ্রুত ত্বরান্বিত করা, ওনার যে প্রতিশ্রুতি ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাঝামাঝি সময়ে যে নির্বাচন হবে, আমরা মনে করি সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এবং তিনি বলেছেন সে ব্যবস্থা নেবেন।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাকবিতণ্ডা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, এগুলো রাজনীতির অংশ। প্রতিপক্ষকে কথায় ঘায়েল করার চেষ্টা থাকবেই। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতি থাকলেই দেশের উন্নতি হয়। গণতন্ত্রের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, গণতন্ত্রে সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। তবেই ভালো সমাধান আসবে।

গণতন্ত্রে অনেক ক্ষেত্রে শতফুল ফুটতে দিতে হবে। গণতন্ত্র মানেই সকলকে কথা বলতে দিতে হবে, শুনতে হবে। এটা হলেই শতফুল ফুটবে। তার মধ্যে থেকে ভালো সৌরভ-সুবাতাস বয়ে আসবে, যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

একসঙ্গে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, ঐকমত্য কমিশনের এমন প্রস্তাব সম্পর্কে বিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ বলেন, এটা একটা প্রস্তাব তাদের। আলোচনা হচ্ছে। আলোচনার মধ্যে দিয়ে (সিদ্ধান্ত) আসবে। আমরা আমাদের মত দিয়েছি, অন্যান্য দলগুলো তাদের মত দিয়েছে। এখন দেখা যাক আলোচনার মধ্যে দিয়ে কোনটা প্রতিষ্ঠিত হয়।