Dhaka বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত ৬ জন গ্রেফতার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৯৩ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে রাশিয়ায় পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অনলাইন জুয়ার সাইটের সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্ম ওয়ানএক্সবেট, মেলবেট, বেটউইনার নামের সাইটগুলো জুয়াড়িদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা পুরো টাকা অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছে হুন্ডি কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে কনভার্ট করে রাশিয়াতে পাঠিয়ে দেয়। সাইটগুলোর সংশ্লিষ্ট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বনশ্রী, আগারগাঁও ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. রেজাউল করিম (৩১), মো. সৈকত রহমান (৩০), মো. সাদিকুল ইসলাম (২৮), নাজমুল আহসান (৩০), মো. তৌহিদ হোসেন (২৫) ও মো. জাকির হোসেন (৩৪)।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১৭টি বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন, ২১টি সিম, ল্যাপটপ ৪টি, ডেস্কটপ কম্পিউটার ৭টি, ট্যাব ২টি, এবং নগদ প্রায় ৪ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আজাদ রহমান বলেন, সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের নিয়মিত মনিটরিংকালে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ওয়ানএক্সবেট, মেলবেট, বেটউইনার নামের বেটিং সাইটগুলো নজরে আসে। সিআইডি লক্ষ্য করে সেখানে বাংলাদেশের প্রচুর গ্রাহক বেটিং বা জুয়া খেলায় অংশ নিচ্ছে। পরবর্তীতে এ সাইগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত এনালাইসিস করে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বনশ্রী ও আগারগাঁও এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেফতার করে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের একটি টিম।

সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন , রাশিয়া থেকে মূলত এসব অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়। ম্যানেজার বাংলাদেশে জুয়ার এজেন্ট হিসেবে বিশ্বস্তদের নিয়োগ দেয়। জুয়ার এজেন্টরা এসব অ্যাপস পরিচালনা করতে পারে টেকনিক্যালি দক্ষ এমন লোক রাখেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতার রেজাউল করিম তার বাসায় সাতটি কম্পিউটার ও চারটি ল্যাপটপ নিয়ে টেকনিক্যালি দক্ষ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আইটি ল্যাব তৈরি করে এ জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। জুয়ার টাকা লেনদেনের জন্য তাদের সঙ্গে যুক্ত হন গ্রেফতার সাদিকুল ও জাকির হোসেনের মতো এমএফএস এজেন্ট। এছাড়া গ্রেফতার নাজমুল, তৌহিদদের মত এমএফএস ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় এ চক্র এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে অনলাইন জুয়ার কাজগুলো নির্বিঘ্নে করতে পারে।

সিআইডির মুখপাত্র বলেন, গ্রেফতার চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এ জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শরীয়তপুরের বাসিন্দা মতিউর রহমান। যিনি রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থান করছেন। তিনি মূলত এ সাইটগুলোর বাংলাদেশের দায়িত্বে রয়েছেন। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন যশোরের আশিকুর রহমান। এ দুজন এবং সৈকত ও রেজাউলের সমন্বয়ে বাংলাদেশে এ তিনটি ওয়েবসাইটের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাদের মাধ্যমে জুয়ার এজেন্টরা ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত এমএফএস (এজেন্ট সিম) ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশ থেকে জুয়াড়িদের টাকা সংগ্রহ করে প্রতিমাসে এমএফএস ও বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা লেনদেন করে। কমিশন বাবদ তারা টাকার একটা ক্ষুদ্র অংশ পেয়ে জুয়াড়িদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা পুরো টাকা অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছে হুন্ডি কিংবা ক্রিপ্টো কারেন্সিতে কনভার্ট করে রাশিয়াতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ডিএমপির পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করেন হাসিনা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীদের অভিযোগ

অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত ৬ জন গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০৯:৩১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :

অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে রাশিয়ায় পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অনলাইন জুয়ার সাইটের সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্ম ওয়ানএক্সবেট, মেলবেট, বেটউইনার নামের সাইটগুলো জুয়াড়িদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা পুরো টাকা অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছে হুন্ডি কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে কনভার্ট করে রাশিয়াতে পাঠিয়ে দেয়। সাইটগুলোর সংশ্লিষ্ট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বনশ্রী, আগারগাঁও ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. রেজাউল করিম (৩১), মো. সৈকত রহমান (৩০), মো. সাদিকুল ইসলাম (২৮), নাজমুল আহসান (৩০), মো. তৌহিদ হোসেন (২৫) ও মো. জাকির হোসেন (৩৪)।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১৭টি বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন, ২১টি সিম, ল্যাপটপ ৪টি, ডেস্কটপ কম্পিউটার ৭টি, ট্যাব ২টি, এবং নগদ প্রায় ৪ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আজাদ রহমান বলেন, সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের নিয়মিত মনিটরিংকালে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ওয়ানএক্সবেট, মেলবেট, বেটউইনার নামের বেটিং সাইটগুলো নজরে আসে। সিআইডি লক্ষ্য করে সেখানে বাংলাদেশের প্রচুর গ্রাহক বেটিং বা জুয়া খেলায় অংশ নিচ্ছে। পরবর্তীতে এ সাইগুলোর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত এনালাইসিস করে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বনশ্রী ও আগারগাঁও এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেফতার করে সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের একটি টিম।

সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন , রাশিয়া থেকে মূলত এসব অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়। ম্যানেজার বাংলাদেশে জুয়ার এজেন্ট হিসেবে বিশ্বস্তদের নিয়োগ দেয়। জুয়ার এজেন্টরা এসব অ্যাপস পরিচালনা করতে পারে টেকনিক্যালি দক্ষ এমন লোক রাখেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতার রেজাউল করিম তার বাসায় সাতটি কম্পিউটার ও চারটি ল্যাপটপ নিয়ে টেকনিক্যালি দক্ষ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আইটি ল্যাব তৈরি করে এ জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। জুয়ার টাকা লেনদেনের জন্য তাদের সঙ্গে যুক্ত হন গ্রেফতার সাদিকুল ও জাকির হোসেনের মতো এমএফএস এজেন্ট। এছাড়া গ্রেফতার নাজমুল, তৌহিদদের মত এমএফএস ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় এ চক্র এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে অনলাইন জুয়ার কাজগুলো নির্বিঘ্নে করতে পারে।

সিআইডির মুখপাত্র বলেন, গ্রেফতার চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এ জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শরীয়তপুরের বাসিন্দা মতিউর রহমান। যিনি রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থান করছেন। তিনি মূলত এ সাইটগুলোর বাংলাদেশের দায়িত্বে রয়েছেন। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন যশোরের আশিকুর রহমান। এ দুজন এবং সৈকত ও রেজাউলের সমন্বয়ে বাংলাদেশে এ তিনটি ওয়েবসাইটের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাদের মাধ্যমে জুয়ার এজেন্টরা ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত এমএফএস (এজেন্ট সিম) ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশ থেকে জুয়াড়িদের টাকা সংগ্রহ করে প্রতিমাসে এমএফএস ও বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা লেনদেন করে। কমিশন বাবদ তারা টাকার একটা ক্ষুদ্র অংশ পেয়ে জুয়াড়িদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা পুরো টাকা অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছে হুন্ডি কিংবা ক্রিপ্টো কারেন্সিতে কনভার্ট করে রাশিয়াতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ডিএমপির পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।