নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের মানুষের কাছে এখন আর ধর্মের বড়ি বিক্রি করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির ৬ষ্ঠ দিনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, মানুষ গণতন্ত্রের মুক্তি চেয়েছে, হারানো মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের মুক্তি চেয়েছে। যার সমষ্টিগত ফল চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান।
এই অভ্যুত্থান শুধুমাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনের ফসল নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২৪ সাল পর্যন্ত বহু রক্ত দিতে হয়েছে। রক্তের সোপান মাড়িয়ে আমরা গণতন্ত্রের বিজয় ছিনিয়ে এনেছি।’
বিএনপির ৩১ দফা জাতির মুক্তির সনদের একটি নির্যাস বলে উল্লেখ করেন এই নেতা। তিনি বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের নিয়ে আমরা যে ৩১ দফা প্রনয়ণ করেছি তা বাংলাদেশের মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে।’
সবাই অতীতের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কথা ভুলে যাচ্ছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভোট পাওয়ার আশায় একটি দল তাদের কুকীর্তি নিয়ে কথা বলে না। রক্তস্নাত ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না যাই, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি যেন আমরা ভুলে না যাই। যারা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে ছাত্র-জনতাকে মেরেছে, তাদের যেন আমরা ভুলে না যাই।’
‘শ্বেতপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২৯ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা আওয়ামী লীগের সময় পাচার হয়েছে। তারা অর্থনৈতিকভাবে দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। একটি দেশের কবর রচনা করেছে আওয়ামী লীগ,’ যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
একটি দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যাদের ইতিহাস সবসময় বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, ’৪৭ থেকে ’৭১ যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল তাদের কথাও আমাদের বলতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ অনেক সচেতন, তাদের কাছে ধর্মের বড়ি বিক্রি করা যাবে না।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে অপরিকল্পিত বা আবেগি হয়ে নয়, সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চায় বিএনপি। শুধুমাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনের ফসল নয় ২৪’র অভ্যুত্থান, এটা সাড়ে ১৫ বছরের সমষ্টিগত ফল।’
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের চেতনা নিয়ে যারা রাজনৈতিক ব্যবসা করতে চেয়েছে, তারা চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে। একাত্তরকে দলীয়করণ করা ঠিক হয়নি।’
একাত্তরকে দলীয়করণ করা ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশ যেখানে আছে সেখান থেকে আবারও দাঁড় করাতে হবে। টেনে তুলতে হবে। যাদের ইতিহাস বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, যাদের ইতিহাস ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে; তাদের কথাও আমাদের বলতে হবে। যারা ইনিয়ে বিনিয়ে বলছে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। আমরা মাঝে মাঝে জিঙ্গেস করি, মুক্তিযুদ্ধাটা কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিল? সেটা আমাদের ছাত্রবন্ধুরা ভালোমতো বলতে পারবেন। জনগণের সাথে কিছুদিন পরে হয়তো বলবে, তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমরা করি নাই। এ রকম অনেক বক্তব্য আপনারা ভোটের ময়দানে শুনতে পাবেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন জনগণ অনেক সচেতন। এখন আর ধর্মের বিড়ি বিক্রি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে ভোট চাওয়া যাবে না। তারপরও মাঠে ময়দানে আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে যেতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার, ইহজগতে আমরা কি করতে চাই সেটা জনগণের সামনে পরিষ্কার করা। আমরা তাদের বলবো, এই আপনার স্বাস্থ্য, এই আপনার সন্তানের শিক্ষা, এই কৃষি উৎপাদনের উপকরণের পাওয়ার নিশ্চিয়ত, কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য পাওয়া। এই আপনার জন্য স্বাস্থ্যকার্ড, এই কৃষিকার্ড, এই সার্বিক সার্বিক অর্থনৈতিক মুক্তির সনদ।
নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা নিয়ে অনেকে ভারাক্রান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত সবাই স্বাগত জানাতে বাধ্য হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
বিএনপির ৩১ দফাকে জাতির ‘মুক্তির সনদের নির্যাস’ হিসেবে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগীদের সঙ্গে প্রণীত এই ৩১ দফা এখন বাংলাদেশের ‘মহাকাব্যে’ রূপ নিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, অনেকে অতীতের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম ভুলে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের ভোটের আশায় একটি দল তাদের অতীত বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, রক্তস্নাত ইতিহাস, দুর্নীতি এবং অতীতে ‘হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা’র ঘটনাগুলো যেন জাতি ভুলে না যায়।
তিনি আরও বলেন, শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে উল্লেখিত ২৯ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করেছে এবং দেশের ‘কবর রচনা’ করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















