Dhaka বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত হাসিনাকে ফেরত না দিলে কিছুই করার নেই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাতে রাজি না হলে কিছুই করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা কী করতে পারি, বলুন? কী করণীয়? করণীয় তেমন কিছু আসলে নেই। ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠানোর।

তৌহিদ হোসেন বলেন, তারা রাজি না হলে আসলে কিছু করার নেই। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা করে থাকতে পারি। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারব, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।

তাকে ফেরানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠাতে। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারবো, এইটুকুই। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত ছেড়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেতে পারেন কূটনৈতিক চ্যানেলে এমন কোনো তথ্য নেই। এটার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নাই। আমরা চাই উনি ফেরত আসুক। শুনেছি আপনারা যে রকম বলছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার শতভাগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ভিসা-সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, ইমেজের ক্ষতি হয়েছে বলেই ভিসার ঘটনাটা ঘটছে। কেন ক্ষতি হয়েছে? কারণ আমি আপনাদেরকে আরও দুই-চারবার বলেছি, পৃথিবীতে আমার জানার মধ্যে আর কোনও দেশ নেই, যেখানে এই পরিমাণ ফেক ডকুমেন্টস তৈরি করে। তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে দুঃখজনক এমনকি যেখানে যেখানে সঠিক ডকুমেন্ট দেওয়া সম্ভব, সেখানেও দেখা যায়— ফেক ডকুমেন্ট জমা দেয়।’’

মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘কারণ কষ্ট করতে রাজি না। একটা ব্যাংক স্টেটমেন্ট যে ব্যাংকে গিয়ে নেবে, তার পরিবর্তে ওই এজেন্টদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। সে একটা ফেক স্টেটমেন্ট দিয়ে দেয়। তারপর ভিসা নিয়ে সমস্যা হয়। আজকেও আমার একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং একই কথা একই বক্তব্য—কী করবো বলো, তোমাদের এখান থেকে এত চেক হয়েছে।’’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ব্রিটেনের ব্যাপারটাও তো আপনারা দেখেছেন, বলা হচ্ছে এমনকি আইএলটিএস-এর রেজাল্ট পর্যন্ত ফেক সাবমিট করা হচ্ছে। কাজেই এই ব্যাপারে আমি মনে করি না যে, আমার মিনিস্ট্রির খুব বেশি কিছু করার আছে। কারণ আমরা যদি আমাদের এই ফেক ডকুমেন্টস তৈরি করার প্রসেসটাকে বন্ধ করতে না পারি, যেটা আমার এখতিয়ার বহির্ভূত, ততক্ষণ পর্যন্ত এই সমস্যা চলতেই থাকবে। সমস্যাটা আমার ঘাড়ে যাবে প্রায়ই। কারণ জেনুইন যারা ভিসা পাওয়ার কথা তারাও ভুগবে, তাদেরও কাগজপত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা আসলে চেষ্টা করছি— প্রত্যেকটা দেশের সঙ্গে যাদের এখানে মিশন নেই, অথবা দিল্লি থেকে বিশেষ করে যাদের কাজ করতে হয়, যেহেতু আমাদের ভারতের ভিসা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে ডাবল এন্ট্রি ভিসা লাগে। আমরা চেষ্টা করছি, সব জায়গাতেই যদি তারা এখানে, আমি কাউকে কাউকে রিকোয়েস্ট করেছি—তোমরা একজন অফিসার দিয়ে একটা জাস্ট কনসুলেট করো বা মিশন খোলো। একজন অফিসার দিয়ে, বিষয়টা খুব বেশি ব্যয়বহুল তোমাদের জন্য হবে না। কিন্তু আমাদের অনেক সুবিধা হতে পারে, তোমাদেরও সহজ হতে পারে। দেখা যায়, এতে খুব সময় লাগে, প্রত্যেকটাই একটা

ডিজিএফআই বন্ধ করবে কি না সরকার, জানতে চাইলে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ডিজিএফআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান সব দেশে আছে; এটা বন্ধ করা সহজ নয়। মানবাধিকার ইস্যুতে বিদেশি কোনো নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নেই। র‍্যাব কয়েক মাসে যথেষ্ট উন্নতি করেছে এবং মানবাধিকার রক্ষায় সরকার শতভাগ চেষ্টা করছে।

ভারতকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান ও চীনকে নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন জোট গঠনের সম্ভাবনার প্রশ্নে তিনি বলেন, কোনো একদিন এর অগ্রগতি ঘটতে পারে, তবে এখন এ বিষয়ে বেশি কিছু বলার অবস্থায় নেই।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম

ভারত হাসিনাকে ফেরত না দিলে কিছুই করার নেই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাতে রাজি না হলে কিছুই করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা কী করতে পারি, বলুন? কী করণীয়? করণীয় তেমন কিছু আসলে নেই। ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠানোর।

তৌহিদ হোসেন বলেন, তারা রাজি না হলে আসলে কিছু করার নেই। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা করে থাকতে পারি। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারব, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।

তাকে ফেরানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ভারতকে রাজি হতে হবে অথবা চাইতে হবে তাকে ফেরত পাঠাতে। আমরা রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারবো, এইটুকুই। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবো না।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত ছেড়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেতে পারেন কূটনৈতিক চ্যানেলে এমন কোনো তথ্য নেই। এটার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নাই। আমরা চাই উনি ফেরত আসুক। শুনেছি আপনারা যে রকম বলছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার শতভাগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ভিসা-সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, ইমেজের ক্ষতি হয়েছে বলেই ভিসার ঘটনাটা ঘটছে। কেন ক্ষতি হয়েছে? কারণ আমি আপনাদেরকে আরও দুই-চারবার বলেছি, পৃথিবীতে আমার জানার মধ্যে আর কোনও দেশ নেই, যেখানে এই পরিমাণ ফেক ডকুমেন্টস তৈরি করে। তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে দুঃখজনক এমনকি যেখানে যেখানে সঠিক ডকুমেন্ট দেওয়া সম্ভব, সেখানেও দেখা যায়— ফেক ডকুমেন্ট জমা দেয়।’’

মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘কারণ কষ্ট করতে রাজি না। একটা ব্যাংক স্টেটমেন্ট যে ব্যাংকে গিয়ে নেবে, তার পরিবর্তে ওই এজেন্টদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। সে একটা ফেক স্টেটমেন্ট দিয়ে দেয়। তারপর ভিসা নিয়ে সমস্যা হয়। আজকেও আমার একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং একই কথা একই বক্তব্য—কী করবো বলো, তোমাদের এখান থেকে এত চেক হয়েছে।’’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ব্রিটেনের ব্যাপারটাও তো আপনারা দেখেছেন, বলা হচ্ছে এমনকি আইএলটিএস-এর রেজাল্ট পর্যন্ত ফেক সাবমিট করা হচ্ছে। কাজেই এই ব্যাপারে আমি মনে করি না যে, আমার মিনিস্ট্রির খুব বেশি কিছু করার আছে। কারণ আমরা যদি আমাদের এই ফেক ডকুমেন্টস তৈরি করার প্রসেসটাকে বন্ধ করতে না পারি, যেটা আমার এখতিয়ার বহির্ভূত, ততক্ষণ পর্যন্ত এই সমস্যা চলতেই থাকবে। সমস্যাটা আমার ঘাড়ে যাবে প্রায়ই। কারণ জেনুইন যারা ভিসা পাওয়ার কথা তারাও ভুগবে, তাদেরও কাগজপত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা আসলে চেষ্টা করছি— প্রত্যেকটা দেশের সঙ্গে যাদের এখানে মিশন নেই, অথবা দিল্লি থেকে বিশেষ করে যাদের কাজ করতে হয়, যেহেতু আমাদের ভারতের ভিসা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে ডাবল এন্ট্রি ভিসা লাগে। আমরা চেষ্টা করছি, সব জায়গাতেই যদি তারা এখানে, আমি কাউকে কাউকে রিকোয়েস্ট করেছি—তোমরা একজন অফিসার দিয়ে একটা জাস্ট কনসুলেট করো বা মিশন খোলো। একজন অফিসার দিয়ে, বিষয়টা খুব বেশি ব্যয়বহুল তোমাদের জন্য হবে না। কিন্তু আমাদের অনেক সুবিধা হতে পারে, তোমাদেরও সহজ হতে পারে। দেখা যায়, এতে খুব সময় লাগে, প্রত্যেকটাই একটা

ডিজিএফআই বন্ধ করবে কি না সরকার, জানতে চাইলে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ডিজিএফআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান সব দেশে আছে; এটা বন্ধ করা সহজ নয়। মানবাধিকার ইস্যুতে বিদেশি কোনো নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নেই। র‍্যাব কয়েক মাসে যথেষ্ট উন্নতি করেছে এবং মানবাধিকার রক্ষায় সরকার শতভাগ চেষ্টা করছে।

ভারতকে বাদ দিয়ে পাকিস্তান ও চীনকে নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন জোট গঠনের সম্ভাবনার প্রশ্নে তিনি বলেন, কোনো একদিন এর অগ্রগতি ঘটতে পারে, তবে এখন এ বিষয়ে বেশি কিছু বলার অবস্থায় নেই।