নিজস্ব প্রতিবেদক :
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন নির্বাচন আয়োজনের সময়সীমা নিয়ে কোনো ধরনের শর্ত ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহণ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক বছরের অর্জন ও সাফল্য নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা যখন ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট আসি, তখন তো আমাদের কেউ ম্যান্ডেট দেয়নি যে এক, দেড় বা দুই বছরের মাথায় নির্বাচন দিতে হবে। কেউ বলেনি যে নির্বাচন করতে হবে এত তারিখের মধ্যে। আমরাই বললাম যে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায়, তাতে তো সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, আমরা যেখানে গেছি, সেখানেই বলেছি যে নির্বাচন সময়মতো হবে। কারণ, আমরা মনে করি যে দেশে একটা নির্বাচন হওয়া উচিত এবং নির্বাচিত সরকার আসা উচিত। বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক চর্চাটা এস্টাবলিশড হওয়া উচিত। গত ১৭ থেকে ১৮ বছর যা হতে দেখিনি। আমরা যদি সেটা করতে পারি, সেটাই হবে আমাদের বড় ক্রেডিট।
দীর্ঘদিন নির্বাচন কমিশনে কাজ করার (নির্বাচন কমিশনার ছিলেন তিনি) অভিজ্ঞতা থাকার কারণে সাংবাদিকেরা আবার জানতে চান দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না। জবাবে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি ভুলে গেছি। নির্বাচন নিয়ে আমার কাছে বলার মতো কিছু নেই। আমি নির্বাচন নিয়ে অজ্ঞ। কোনো আইডিয়া নেই। এটা নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আপনি সন্তুষ্ট কি না-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এখন যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাতে রাজনৈতিক দলগুলো জানে না তারা কি করবে তাদের ভবিষ্যৎ কি? কোথায় কে কোন দিকে যাচ্ছে। এটা কি বাংলাদেশে নতুন? তথাকথিত ওয়ান ইলেভেনের পরে হয়নি? হয়েছিল নাকি হয়নি? আমরা কিন্তু এ নিয়েই বেঁচে আছি। পার্টিতে পার্টিতে কি দাঙ্গা হচ্ছে? দলগুলোর মধ্যে মুখেমুখে কথা হচ্ছে। আমরা কথা বলার জাতি, কথা না বলে থাকতে পারি না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্যাওয়াজ তখন বলবো যখন সরকার একদিকে আর রাজনৈতিক দলগুলো একদিকে থাকবে। আমাদের কেউ গলা ধাক্কা দিয়ে বলেছে নাকি যে, নির্বাচন দিতে হবে তোমাকে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। যখন এই সরকার আসে তখন কি এ রকম কোনো শর্ত ছিল? শর্ত ছিল না। আমরাই বললাম যে, ইলেকশন হবে। সেই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে যদি রাজনৈতিক দলের দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়, সেটাতে তো সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তাহলে সিচুয়েশনটা খারাপ কোথায়, সেটা আমি বোঝার চেষ্টা করছি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমরা যেখানে গেছি সেখানেই বলেছি নির্বাচন সময় মতো হবে। আমি বললাম না আমাদের কেউ ঘাড় ধরে বলেছে? নির্বাচন করতে হবে তোমাকে, এত তারিখের মধ্যে? আমরা যখন ৮ আগস্ট আসি তখন তো আমাদের কেউ ম্যান্ডেট দেয়নি যে ভাই আপনাকে এক/দেড়/দুই বছরের মাথায় নির্বাচন দিতে হবে। তখন তো কিছুই ছিল না, ব্ল্যাংক।
তিনি আরও বলেন, তবে দেশে একটা নির্বাচন হওয়া উচিত, নির্বাচিত সরকার আসা উচিত। ইউনিভার্সেল ডেমোক্রেটিক প্রসেসটা স্ট্যাবলিস্ট হওয়া উচিত। গত ১৭/১৮ বছর ডেমোক্রেটিক প্রসেস স্ট্যাবলিস্ট হতে দেখিনি। আমরা যদি সেটা করতে পারি, সেটা আমাদের বড় ক্রেডিট।
নারীদের কর্মসময় ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার বক্তব্য রাজনৈতিক স্লোগান
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সম্প্রতি একটি কর্মসূচিতে বলেছিলেন, ‘তার দল ক্ষমতায় গেলে কর্মজীবী নারীদের কর্মসময় ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করবে’।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমি এটিকে রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে দেখছি। আগামীতে ক্ষমতায় গেলে একটা অনেক বড় ফ্যাক্টর আছে না? ক্ষমতায় যাবো, ভবিষ্যতে আপনারা ভোট দেবেন। নারী শ্রমিকরা যদি তাদের এ কথায় ভোট দেন, তাহলে তো আমার বলার কিছু নেই।
তিনি বলেন, ‘ভোট দেওয়ার পর যারা ক্ষমতায় বসবেন, এসব চেয়ারে বসবেন তারা তো তখন মাঠের লোক হবেন না। তখন তাদের ফেস করতে হবে।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাচনের আগে কত রকমের স্লোগান আসে- আমি ক্ষমতায় গেলে বুড়িগঙ্গা হয়ে যাবে দুধের নদী। ওপর থেকে খালি মান্না ও সালওয়া পড়তে থাকবে। আপনাদের কোনো কাজ করা লাগবে না, ঘরে বসে থাকবেন। আমরা খাওয়াতে থাকবো।
তিনি বলেন, এটাকে (জামায়াত আমিরের বক্তব্য) আপনারা (সাংবাদিক) ছাড়া কেউ সিরিয়াসলি নিয়েছে বলে তো আমার মনে হয় না। আমার কাছে এমনই মনে হয়। বের হলে হত তারা আমাকে দুটা গালি দেবে।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটাতো রাজনৈতিক স্লোগান। আমি যখন ক্ষমতায় না থাকি, তখন তো আমি অনেক কিছু বলতে পারি। আমি বলবো আপনার এখানে আসবেন প্রতিদিন আপনাদের বিরিয়ানি খাওয়াবো, কিন্তু যখন আসবেন তখন বলবো ফান্ড নেই কোথা থেকে খাওয়াবো। এটা আপনারাও জানেন আমিও জানি, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নতুন নতুন স্লোগান দেবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















