নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচিত হলে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করবো। আমরা কোনো দলকেই বাদ দেব না। দেশের স্বার্থে আমাদের প্রয়োজন একটা জাতীয় সরকারের। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারটাই গঠন করবো।’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ঢাকাস্থ দূতাবাসে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় সরকার গঠনের জন্য দুইটি শর্ত দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাই কেউ নিজে দুর্নীতি করবে না। আর সকলের জন্য সমান বিচার নিশ্চিত করতে চাই। এই দুই জিনিসের ব্যাপারে যারা একমত হবেন, তাদের নিয়ে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করবো। নির্বাচনে ২০০ আসনে বিজয় হলেও একই সিদ্ধান্ত থাকবে।’
জামায়াতের ধর্মকে ব্যবহার করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ধর্ম আমাদের চিন্তার অঙ্গ। আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি। ইলেকশনের সময় যারা নতুন করে নামাজ পড়েন, তসবি হাতে নিয়ে ঘোরেন, তারাই বোধহয় ধর্মকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে না এ মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়ে রাজনীতি করে না এবং ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করাও দলের নীতি নয়। নির্বাচনের সময় যাঁরা ধর্মীয় আচরণকে প্রচারণার অংশ করেন, প্রকৃতপক্ষে তাঁরাই ধর্মকে ব্যবহার করেন।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি স্পষ্ট করেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত ভোট পেছানো হলে দেশ অস্থিরতায় পড়তে পারে। তাঁর মতে, কোনো কারণেই নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া উচিত নয়, কারণ এতে সামগ্রিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ক্ষমতায় গেলে এক অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন জামায়াত আমির। তিনি জানান, দেশের স্বার্থে সব দলের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্তত পাঁচ বছরের একটি স্থিতিশীল প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্য তাঁদের।
তার ভাষায়, ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রথম শর্ত—দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান। দ্বিতীয়ত—সবার জন্য সমান বিচার নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক প্রভাব যেন বিচারব্যবস্থায় কোনোভাবেই স্থান না পায়। এই দুই বিষয়ে যাঁরা একমত হবেন, তাঁদের সঙ্গেই সরকার পরিচালনায় আমরা সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রশ্নে তিনি বলেন, অসুস্থতা–সুস্থতা মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়। দেশবাসী তাঁর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছে। তবে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতির সঙ্গে জাতির অগ্রযাত্রা থেমে থাকা উচিত নয় বলেও মত দেন তিনি।
একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কোনো উদ্বেগ রয়েছে কি না—জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করেন, একদিনে দুটি ভোট আয়োজন নিয়ে শঙ্কার কথা উঠেছে। প্রয়োজন হলে পৃথক দিনে ভোটগ্রহণের কথাও আলোচনায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
আলোচনার শেষদিকে তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সময়মতো হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সামান্য পরিবর্তনও দেশের জন্য সংকট তৈরি করতে পারে। দেশ ও ভবিষ্যতের স্বার্থে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















