Dhaka শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার এন্ডোস্কোপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে পাকস্থলির রক্তক্ষরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন হয়েছে। এন্ডোসকপির মাধ্যমে তার পাকস্থলির ভেতরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে এন্ডোসকপি করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক শারীরিক জটিলতার কারণে এ প্রক্রিয়া জরুরি হয়ে ওঠে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শেই শুক্রবার বিকালে খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন হয়েছে। এন্ডোসকপির মাধ্যমে তার ইস্টোমার ভেতরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এন্ডোসকপির পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে পর্যাপ্ত সতর্কতার সঙ্গে।

মেডিকেল বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে বেগম খালেদা জিয়ার এন্ডোস্কোপি করা হয়েছে। প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছে এবং এর মাধ্যমে তার অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যাপ্ত সতর্কতার সঙ্গেই সম্পন্ন করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিকেলে এন্ডোস্কোপির পর সন্ধ্যার দিকে খালেদা জিয়ার আরেকটি মাইনর অপারেশন বা ছোট অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেন।

সূত্রটি আরও জানায়, খালেদা জিয়ার পরবর্তী চিকিৎসা এবং শারীরিক অবস্থার পর্যালোচনায় রাতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে কাতার সরকার জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পাঠাচ্ছে। এটি জর্জিয়ার তিবলিসি থেকে ঢাকায় আসবে।

এদিকে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শুক্রবার লন্ডনে নেওয়ার কথা ছিল। তবে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটি এবং খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কারণে তার লন্ডন যাত্রা পিছিয়ে গেছে।

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।

এদিকে বিএনপির মিডিয়া সেল জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় শুক্রবার নির্ধারিত সময়ে বিমানটি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে জার্মাানির তৈরি আরেকটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শনিবার পৌঁছাতে পারে বলে জানা গেছে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে রোববার (৭ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ইতোমধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখেছেন।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকবেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি দল—ডা. আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নূরউদ্দিন আহমদ, ডা. জাফর ইকবাল ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন। পাশাপাশি থাকবেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি, সহকারী আব্দুল হাই মল্লিক, একান্ত সচিব মো. মাসুদুর রহমান, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার এবং এসএসএফের দুজন সদস্য।

৮০ বছর বয়সি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়, এবং এরপর থেকে তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

 

আবহাওয়া

হয়ে গেল ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত

খালেদা জিয়ার এন্ডোস্কোপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে পাকস্থলির রক্তক্ষরণ

প্রকাশের সময় : ১২:১৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন হয়েছে। এন্ডোসকপির মাধ্যমে তার পাকস্থলির ভেতরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে এন্ডোসকপি করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক শারীরিক জটিলতার কারণে এ প্রক্রিয়া জরুরি হয়ে ওঠে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শেই শুক্রবার বিকালে খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন হয়েছে। এন্ডোসকপির মাধ্যমে তার ইস্টোমার ভেতরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এন্ডোসকপির পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে পর্যাপ্ত সতর্কতার সঙ্গে।

মেডিকেল বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে বেগম খালেদা জিয়ার এন্ডোস্কোপি করা হয়েছে। প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছে এবং এর মাধ্যমে তার অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যাপ্ত সতর্কতার সঙ্গেই সম্পন্ন করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিকেলে এন্ডোস্কোপির পর সন্ধ্যার দিকে খালেদা জিয়ার আরেকটি মাইনর অপারেশন বা ছোট অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেন।

সূত্রটি আরও জানায়, খালেদা জিয়ার পরবর্তী চিকিৎসা এবং শারীরিক অবস্থার পর্যালোচনায় রাতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে কাতার সরকার জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পাঠাচ্ছে। এটি জর্জিয়ার তিবলিসি থেকে ঢাকায় আসবে।

এদিকে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শুক্রবার লন্ডনে নেওয়ার কথা ছিল। তবে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটি এবং খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কারণে তার লন্ডন যাত্রা পিছিয়ে গেছে।

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।

এদিকে বিএনপির মিডিয়া সেল জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় শুক্রবার নির্ধারিত সময়ে বিমানটি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে জার্মাানির তৈরি আরেকটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শনিবার পৌঁছাতে পারে বলে জানা গেছে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে রোববার (৭ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ইতোমধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখেছেন।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকবেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি দল—ডা. আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নূরউদ্দিন আহমদ, ডা. জাফর ইকবাল ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন। পাশাপাশি থাকবেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি, সহকারী আব্দুল হাই মল্লিক, একান্ত সচিব মো. মাসুদুর রহমান, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার এবং এসএসএফের দুজন সদস্য।

৮০ বছর বয়সি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়, এবং এরপর থেকে তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।